শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:২৪ pm
ডেস্ক রির্পোট : করোনা সংক্রমণে শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। সাধারণ মানুষের সঙ্গে গণমাধ্যমও এর হিসাব কষতে কষতে ক্লান্ত। তবে হারিয়ে যাওয়া টিকার আশা ফিরে এসেছে। কিছুটা ধীর লয়ে, শান্ত পদক্ষেপে। এর মাঝেই ঈদের বার্তা। আগামীকাল বুধবার সারা দেশে পালিত হবে ঈদুল আজহা। যা আমাদের কাছে কোরবানির ঈদ, কেউ বলেন বড় ঈদ আবার কারও কাছে বকরি ঈদ।
মহামারির মধ্যে চতুর্থ ঈদ এবার। কঠোর বিধিনিষেধ এখন শিথিল।
সবাই ছুটছেন প্রিয়জনের কাছে। বাস, ট্রেন, লঞ্চে সব জায়গায় ঘরে ফেরার তাড়া। আর এই তাড়ার কাছে ফিকে হয়ে গেছে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ।
এর চেয়েও ভয়াবহ চিত্র ছিল গত ঈদুল ফিতরে। ঘোষণা দিয়ে গণপরিবহন বন্ধ করা হলেও লাখো মানুষকে ঢাকা ছাড়তে দেখা গেছে। এবার সেই বাধা নেই, ফলে যে যার সুবিধামতো বাড়ি যাচ্ছেন।
পশুর হাটও ক্রেতা–বিক্রেতা নিয়ে জমজমাট। মাইকে বাজতে থাকা স্বাস্থ্যবিধির ঘোষণা উড়ে যাচ্ছে আকাশেই। মহামারি সঙ্গে নিয়েই সবাই প্রস্তুত উৎসবের আবাহনে।
আরবি জিলহজ মাসের ১০ তারিখ অর্থাৎ ঈদুল আজহা মুসলমানদের জন্য আসে আত্মত্যাগের বার্তা নিয়ে। প্রায় চার হাজার বছর আগে আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি লাভের জন্য হজরত ইবরাহিম (আ.) পুত্র হজরত ইসমাইলকে (আ.) কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের কুদরতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর বদলে দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। সেই মহিমান্বিত ত্যাগে স্মরণে বিশ্বব্যাপী মুসলমানেরা আগামীকাল বুধবার ঈদের নামাজ শেষে নিজ নিজ সামর্থ্যমতো আল্লাহর অনুগ্রহ কামনায় পশু কোরবানি করবেন।
করোনার সংক্রমণ বিস্তার রোধে ঈদুল ফিতরের মতো এই ঈদেও সরকারের নির্দেশনায় শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ঈদের জামাত শেষে কোলাকুলি এবং হাত মেলানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
সারা দেশের মুসলিমরা আগামীকাল দিনের শুরুতেই মসজিদে সমবেত হবেন এবং ঈদুল আজহার দু’রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করবেন। নামাজের খুতবায় খতিব তুলে ধরবেন কোরবানির মহত্ত্ব ও তাৎপর্য।
এবারও হাইকোর্ট–সংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে ঈদের জামাত হচ্ছে না। লাখো মানুষ নামাজ পড়বেন না শত বছরের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ময়দানে। তবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ঈদের ৫টি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সকাল ৭টায় হবে প্রথম জামাত। এরপর পর্যায়ক্রমে ৮টা, ৯টা, ১০টা এবং ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে অন্যান্য ঈদ জামাত। রাজধানীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার মসজিদগুলোতেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অংশ নিতে জোর অনুরোধ জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
নামাজ শেষে মুসল্লিদের অনেকেই যাবেন কবরস্থানে। পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নেওয়া স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়াবেন। আল্লাহর দরবারে আকুতি জানাবেন তাঁদের রুহের মাগফিরাত কামনায়।
জিলহজ মাসের ১০ তারিখে ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হলেও পরের দুই দিনও পশু কোরবানি করার নিয়ম আছে। কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রির টাকা এবং মাংসের তিন ভাগের এক ভাগ নিম্নআয়ের মানুষ ও এতিমদের মধ্যে বণ্টন করে দেবেন ধর্মপ্রাণ মানুষ।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ পালনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।
মুসলিম সম্প্রদায়ের ধর্মীয় এই উৎসব উপলক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারাও দেশবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সূত্র : আজকের পত্রিকা