বৃহস্পতিবর, ১৯ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৫৬ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ বাংলাদেশ ও ভারত ভিসা জটিলতায় চার যৌথ সিনেমা একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির আটক
জয়পুরহাটে ৯ বছর শিকলে বন্দী রাসেল

জয়পুরহাটে ৯ বছর শিকলে বন্দী রাসেল

ডেস্ক রির্পোট : দরিদ্র কৃষক লুৎফর রহমানের তিন সন্তানের মধ্যে মেঝ ছেলে রাসেল মাহমুদের জন্ম ১৯৮১ সালে। কিশোর বয়স থেকে কাঠমিস্ত্রীর কাজ করা রাসেল দেখতেও ছিলেন সুন্দর। ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালিখার পর দারিদ্রতার কারণে সংসারের হাল ধরতে এ পথ বেছে নিতে হয়েছে তাকে। বড় ভাই উজ্জল হোসেন পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রী। তার সঙ্গে থেকে এ পেশা রপ্ত করে রাসেল।

কিন্তু মাত্র ১৪ বছর বয়সে পাল্টে যায় তার জীবনের হিসেব নিকেশ। কোথা থেকে কি হলো কিছুই বলতে পারে না রাসেল। সব সময় অস্থির আচরণ শুরু হয় তার। এরপর পরিবারের পক্ষ থেকে কবিরাজি চিকিৎসা দেওয়া হলেও কোনো লাভ হয় না। বরং তার পাগলামি বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় পরিবারসহ পাড়া প্রতিবেশিদের মারধর শুরু করলে ২০১২ সাল থেকে তার হাত ও পায়ে শিকল পড়ানো হয়। ফলে নয় বছর থেকে নিজ বাড়ির বাহিরে পরিত্যক্ত স্থানে গাছের সঙ্গে শিকলবন্দী জীবন কাটছে রাসেলের।

জয়পুরহাট পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের গৌড়িপাড়া মহল্লায় বাড়ির সামনের পরিত্যক্ত জায়গায় শিকলবন্দী জীবন কাটানো রাসেল মাহমুদের বয়স এখন ৪০ বছর। পরিবারের পক্ষ থেকে ৫ বার পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়েও তার কোনো উন্নতি হয়নি। খাবার দিলে খায়, না দিলে না খেয়ে থাকে। দারিদ্রতার কারণে তার চিকিৎসার ব্যয় আর বহন করতে পারছে না তার পরিবার। তাই কষ্ট হলেও হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে বাড়ির বাহিরে।

সরেজমিনে জয়পুরহাট পৌরসভার গৌড়িপাড়া মহল্লায় গিয়ে দেখা যায়, গাছের সঙ্গে শিকলবন্দী অবস্থায় বাড়ির বাহিরে মাটিতে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে আছেন রাসেল মাহমুদ। ডাক দিলে সে ওঠে বসেন তিনি। এরপর অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে শুরু করেন।

তার সম্পর্কে জানতে চাইলে রাসেল মাহমুদের মা জোসনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘বর্তমানে গরু ছাগলও মানুষ বাড়ির বাহিরে রেখে রাত কাটায় না। অথচ সন্তানকে শিকল দিয়ে বাহিরে বেঁধে রেখে আমাদের বছরের পর বছর রাত কাটাতে হচ্ছে। এটা যে কত কষ্টের তা কাউকে বুঝানো যাবে না। কোথা থেকে কি হয়ে গেল আমার ভালো ছেলেটা মাত্র ১৪ বছর বয়সে চোখের সামনে পাগল হলো। কোনো কারণ বুঝতে পারিনি। নিয়তি মনে করে বুকে পাথর চাপা দিয়ে বেঁচে আছি।’

জোসনা বেগম আরও বলেন, ‘নিজেদেরই তিনবেলা ঠিকমত আহার জোটে না। তার ওপর প্রায় ২৭ বছর থেকে এই পাগল ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে নি:স্ব হয়ে পড়েছি। ’সরকারিভাবে চিকিৎসা সহযোগিতা পেলে হয়তো আমার ছেলেটা সুস্থ হয়ে উঠতো বলেই আঁচলে চোখ মোছেন জোসনা বেগম।

রাসেলের বাবা লুৎফর রহমান জানান, ছেলেকে বাহিরে রেখে চোখে ঘুম আসে না। তাইতো বাড়ির বাহিরে একটি টঙ ঘর বানিয়ে ছেলেকে দেখার জন্য দিন রাত তিনি সেখানে থাকেন।

লুৎফর রহমান জানান, ছোটবেলায় রাসেল ভালো ছিল। ৬ষ্ট শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালিখাও করেছে। কিন্তু ১৯৯৪ সাল থেকে রাসেলের আচরণে পরিবর্তন আসে। এরপর ক্রমান্বয়ে পাগল থেকে উন্মাদ হয়ে অত্যাচার শুরু করে। তখন বাধ্য হয়ে তাকে বেঁধে রাখতে হয়েছে।

প্রতিবেশী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে রাসেল উন্মাদ হয়ে গেছে। হয়তো উন্নত চিকিৎসা পেলে ভালোও হয়ে যেতে পারেন। কিন্তু চিকিৎসার ব্যয় বহন করার মত রাসেলের পরিবারে কেউ নেই।’

জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরাফাত হোসেন জানান, জয়পুরহাট পৌরসভার গৌড়িপাড়া মহল্লার রাসেল মাহমুদের বিষয়টি আন্তরিকতার সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সরকারি আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে রাসেলকে সুস্থ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সূত্র : রাইজিংবিডি

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.