শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:১৫ am
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর বাগমারা লকডাউনের বিধিনিষেধের নামে কলেজ শিক্ষক পিটিয়ে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার সাঁকোয়া গ্রামে নিজ বাড়ির দরজার সামনে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বাগমারা উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি এ্যাসিল্যান্ড) লাঠির বাড়িতে কলেজ শিক্ষক আব্দুল আজিজের হাত ভেগে যায় বলে দাবি করেছেন তিনি। আহত আব্দুল আজিজ সাধনপুর পঙ্গু ও শিশু নিকেতন ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক।
ঘটনার পরে গতকাল সন্ধ্যায় ওই কলেজ শিক্ষকের হাতে সেলায় দেওয়া হয়। তার বাম হাতের কব্জির নিচে হাড় ভেঙে গিয়ে রক্তপাত হওয়ার কারণে সেলায় দেওয়া হয়। তবে আজ শুক্রবার বাগমারার জনতা ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে তার ওই হাতের ব্যান্ডেজ করানো হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ।
জানতে চাইলে শিক্ষক আব্দুল আজিজের স্ত্রী বেবি খাতুন বলেন, এ্যাসল্যিান্ডের লাঠির বাড়িতেই আমার স্বামীর হাত ভেঙেছে। আমরা এই ঘটনার বিচার চাই। বাগমারা থানার ওসিও আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন এ্যাসিল্যান্ড নিজেই লাঠি দিয়ে বাড়ি দিয়েছেন বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক আব্দুল আজিজকে। তিনি নিজের পরিচয় দেওয়ার পরেও এ্যাসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসান আমার স্বামীকে লাঠি দিয়ে বাড়ি দিয়েছেন। এখন তিনি খুবই অসুস্থ। লকডাউনের কারণে তার সঠিক চিকিৎসাও হচ্ছে না। অথচ তিনি ডায়াবেটিসের রোগী।
বেবি খাতুন জানান, তার স্বামী বিকেলে হাঁটার জন্য বের হয়েছিলেন। হাঁটা শেষে তিনি বাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। এসময় সিকদারী বাজারের লোকজনকে ধাওয়া দিয়ে তেড়ে যাচ্ছিলেন এ্যাসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসানসহ পুলিশ। কিন্তু বাজারের লোকজনকে ধরতে না পেরে বাড়িরন সামনে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক আব্দুল আজিজকে ধরে লাঠি দিয়ে হাতের ওপর আঘাত করেন এ্যাসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসান। এতে তার বাম হাত ভেঙে যায়। এরপর তাকে ফেলে রেখে চলে যান এ্যাসিল্যান্ডসহ পুলিশের দলটি।
বেবি খাতুন আরও জানান, বাজারের লোকজনকে ধাওয়া দিতে গিয়ে রাস্তায় পড়ে যান এ্যাসিল্যান্ড। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি উঠেই সামনে একটু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা শিক্ষক আব্দুল আজিজ পরিচয় দেওয়ার পরও তাকে সজরে লাঠি দিয়ে হাতের ওপর আঘাত করেন।
এদিকে গটনার পর রাতে বাগমারার শ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান নিজেই তার ফেসবুকে শিক্ষক আব্দুল আজিজের ছবিসহ ঘটনাটি তুলে ধরেন। ওই পোস্টে তিনি লিখেন, বাগমারায় নিজ বাড়ির দরজায় অসুস্থ এক কলেজ শিক্ষককে লকডাউনের বিধিনিষেধের নামে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে এ্যাসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসানের বিরুদ্ধে। গতকাল রাতে সিল্কসিটিনিউজে খবরটি প্রকাশ হয়। এর পর রাতেই বিষয়টি নিয়ে ভাইরাল হয়ে পড়ে। যদিও পরে জিল্লুর রহমান সেই পোস্টটি সরিয়ে ফেলেন।
তবে এ্যসিল্যান্ড মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, এই ধরনের ঘটনা ঘটার কোন সুযোগ নাই। তবে যারা লকডাউন অমান্য করেছে তাদেরকে জরিমানা করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ভুলবুঝাবুঝি হয়েছে। আসলে উনি পড়ে গিয়ে হাত ভেঙে গেছে। আমরা তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। চাইলে আপনি আমার ফোনেই কথা বলতে পারেন ভিকটিমের সাথে।
তবে শিক্ষক আব্দুল আজিজ ইউএনও’র ফোনেই এই প্রতিবেদককে বলেন, এ্যাসিল্যান্ডের লাঠির বাড়িতেই আমার হাত ভেঙেছে। পরে শিক্ষককের এক ভাতিজা পরিচয়দানকারী একজন ফোন করে বলেন, বিষয়টি আমরা মীমাংসা হয়ে গেছি। এ নিয়ে নিউজ করেন না।’ আজকের তানোর