বৃহস্পতিবর, ২১ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৪:৩৭ pm
গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতা এবার রক্ষা করা গেল না। প্রতিবছরের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই পৌঁছালেও এবার কোনো আনুষ্ঠানিকতা হয়নি। তবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও যথাসময়ে প্রায় সাড়ে চার কোটি শিক্ষার্থীর হাতে বিনা মূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে সরকার। এবার সারা দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে প্রায় সাড়ে ৩৪ কোটি বই বিতরণ করা হবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এবার উৎসব ছাড়াই শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের হাতে বিনা মূল্যের পাঠ্য বই তুলে দিচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। প্রতিবছর একই দিনে একসঙ্গে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেওয়া হতো। এবার এক দিনেই সব শিক্ষার্থী নতুন বই পাচ্ছে না। কয়েক দিন ধরে ভাগ ভাগ করে এই বই দেওয়া হচ্ছে।
সারা দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে প্রায় সাড়ে ৩৪ কোটি বই বিতরণ একটি বড় কর্মযজ্ঞ। নির্ধারিত সময়ে বই প্রকাশ ও বিতরণের এই ধারাবাহিকতাও বাংলাদেশের জন্য এক বড় অর্জন। বাংলাদেশে বিনা মূল্যে প্রাথমিকের বই বিতরণ নিয়ে অব্যবস্থাপনার নানা অভিযোগ ছিল। মাধ্যমিকের বই হাতে পেতে অনেক সময় শিক্ষাপঞ্জির অর্ধেকটা সময় কেটে যেত। প্রিয় সন্তানের লেখাপড়ার স্বার্থে অভিভাবকরা বাজার থেকে চড়া দামে বই কিনতে বাধ্য হতেন। সেই দিন পেরিয়ে বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর গণভবনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে বই উৎসব উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বই উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। স্কুলগুলোতে এরইমধ্যে পৌঁছে গেছে বই। মাধ্যমিকের প্রতিটি শ্রেণির বই বিতরণের জন্য তিন দিন করে সময় দেওয়া হবে। অর্থাৎ ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত চারটি শ্রেণিতে সপ্তাহে তিন দিন করে মোট ১২ দিনে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করতে হবে। আর প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধির কথা চিন্তা করে অভিভাবকদের হাতে বই তুলে দেওয়া হবে।
নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতি ভালো না হওয়া পর্যন্ত স্কুল খোলা হবে না। একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তিনি। দেশে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। টিকা আসেনি বলে শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ওপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও করোনাভাইরাসের কারণে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সবচেয়ে কষ্ট পাচ্ছে আমাদের শিক্ষার্থীরা। প্রধানমন্ত্রী নিজেও সেটা উপলব্ধি করেন বলে জানিয়েছেন তাঁর বক্তব্যে। মহামারির মধ্যে দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে, তা মোকাবেলা করার ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। করোনার কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। তাই করোনার প্রকোপ কমলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।