সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:০০ am
ডেস্ক রির্পোট : টাকা পাচারকারীদের তালিকা চাওয়া এবং বাজেট আলোচনায় সংসদে উপস্থিত না থাকায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সমালোচনা করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান। প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে বুধবার তিনি বক্তব্য দেন।
পীর ফজলুর রহমান বলেন, আমরা বাজেট বক্তৃতা দিচ্ছি। কিন্তু অর্থমন্ত্রীকে গতকালও (মঙ্গলবার) সংসদে পাইনি। আজও (বুধবার) অনুপস্থিত। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন, দেশ থেকে কারা টাকা পাচার করছে, তা তিনি জানেন না। সেই তালিকা চান সংসদ সদস্যদের কাছে। সংসদ সদস্যরা কীভাবে তালিকা দেবে? তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে। তিনি তালিকা নেবেন কারা অর্থ পাচার করে। পি কে হালদার টাকা নিয়ে বিদেশে গিয়ে ঘুমায়, আর তার বান্ধবীদেরকে এখানে ঘুম পাড়ান। এটা তো আমরা চাইনি। আমরা চেয়েছিলাম পি কে হালদারদের মতো লোকরা যেন অর্থ নিয়ে বাইরে যেতে না পারে। অর্থমন্ত্রী আর্থিক খাতের একজন মেধাবী মানুষ। তিনি তো ভালো জানেন কারা অর্থ পাচার করে।
ফজলুর রহমান বলেন, প্রতিটি অডিট রিপোর্টে আছে কীভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে। সেখান থেকে তিনি কারা টাকা পাচার করে তথ্য নিতে পারেন। সংসদে উত্থাপিত অডিট রিপোর্টের বরাত দিয়ে জাতীয় পার্টির এই আইনপ্রণেতা বলেন, আমি সরকারি হিসাব থেকেই দিই কারা টাকা পাচার করে। সিএজির গত চার বছরের অডিট প্রতিবেদন বলছে, ৩১ হাজার কোটি টাকা লুট। চার বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে জালিয়াতি, সরকারি অর্থের মোট অনিয়মের ৫২ শতাংশই ব্যাংকিং খাতে। ৯ বছরে অনিয়ম বেড়েছে ১৬ গুণ। এটি অডিটর জেনারেলের চার বছরের অডিট থেকেই এসেছে। এখান থেকে উনি (অর্থমন্ত্রী) পান না কেন? এই টাকা বিদেশে যায়। অর্থমন্ত্রী ঠেকাতে পারেন না। আমাদের শেয়ারবাজার লুটপাট হয়, তিনি খুঁজে পান না। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টালিজেন্স ইউনিট বলছে, পাঁচ বছরে ১ হাজার ২৪টি অর্থ পাচারের প্রমাণ মিলেছে।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন- স্বাস্থ্যের নয়, অন্য খাতের টাকা গেছে কানাডায়। রুজিনা ইসলামের রিপোর্টগুলো যদি আমরা বাদও দিই, দুদক স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১১টি দুর্নীতির খাত চিহ্নিত করেছে। গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কমপক্ষে এক হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে স্বাস্থ্য খাতের যন্ত্রপাতি কেনায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাফাই না গেয়ে যারা দুর্নীতি করছে, তাদেরকে ধরেন। করোনাকালে এসে অন্তত বিবেক জাগ্রত হোক। এই দুর্নীতিবাজদের ধরেন। মানুষের চিকিৎসার নিশ্চয়তা দেন। টিকা নিয়ে আমরা কোনো কথা শুনতে চাই না। টিকা নিশ্চিত করতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির মোশাররফ হোসেন বলেন, বাজেটে ঘাটতির টাকা কোথা থেকে আসবে, স্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। ঋণের সুদই দিতে হবে ৬৯ হাজার কোটি টাকা। তিনি শিক্ষার্থীদের টিকা দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানান।
বিএনপির এই সংসদ সদস্য বলেন, টিকার দাম বলে দেওয়ায় ৬ জুন একজন অতিরিক্ত সচিবকে ওএসডি করা হয়েছে। মানুষের করের টাকায় টিকা কেনা হচ্ছে, দাম জানার অধিকার মানুষের আছে। এজন্য একজন কর্মকর্তাকে ওএসডি করার ঘটনা দুঃখজনক। প্রথমে শুধু একটি নয়, অন্য দেশগুলোর সঙ্গেও টিকার জন্য আলোচনা করার দরকার ছিল। সূত্র : যুগান্তর