শুক্রবার, ২০ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:৪৮ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
দুদকের তালিকায় ১০০ ব্যক্তির সম্পদের পাহাড় গড়েছেন যারা আ.লীগ ১৪ দলীয় জোটের নেতা ও মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে ৭৫০ মামলা ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ
তানোরে সুবিধাভোগিদের ভাতা বন্ধ ৭ মাস, মানবেতর জীবন-যাপন

তানোরে সুবিধাভোগিদের ভাতা বন্ধ ৭ মাস, মানবেতর জীবন-যাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর তানোরে সমাজসেবা অফিস স্টাফদের উদাসিনতায় ৭ মাস ধরে ভাতা বঞ্চিত সুবিধাভোগীরা। সম্প্রতি গত ঈদেও মেলেনি তাদের কাঙ্খিত ভাতা। ফলে খেয়ে না খেয়ে অতিকষ্টে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন এঅঞ্চলের প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ছাড়াও বিধবা আর তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী।

উপজেলা সমাজসেবা দপ্তর ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, পুরো উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় প্রায় ৩০ হাজার বিভিন্ন শ্রেণির ভাতাভোগী রয়েছেন। এরমধ্যে বয়স্কভাতা, বিধবা ও পরিত্যাক্তা দুস্থ মহিলা ভাতা, অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা, দলিত বিশেষ বয়স্ক ভাতা, হিজরা বিশেষ বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি, দলিত শিক্ষা উপবৃত্তি ও হিজড়া শিক্ষা উপবৃত্তি ছাড়াও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বিশেষ শিক্ষা সহায়তার এককালিন অনুদানসহ ২০টির মতো ভাতা ৩ মাস পরপর প্রদান করা হয়।

সম্প্রতি এসব সুবিধাভোগীদেরকে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের ‘নগদ’ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নেয় সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এজন্য তাদের মোবাইল নম্বরসহ প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা হয়। কিন্তু ‘নগদ’ একাউন্টের অজুহাতে আর ভাতা দেয়া হয়নি। এভাবে ৩ মাসের স্থলে ৭ মাস পরও ভাতা পাচ্ছেন না সুবিধাভোগীরা। সম্প্রতি গত ঈদেও দেয়া হয়নি ভাতা।

এদিকে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় দ্বিতীয় ধাপে মানবিক সহায়তা প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় হতে গত ২৯ এপ্রিল জেনারেল রিলিফ (জিআর) প্রকল্পের আওতায় ২০ লক্ষ টাকা তানোর উপজেলায় বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সূত্রের আলোকে এতথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এসব বরাদ্দ থেকে তানোর পৌরসভা ১ লক্ষ টাকা, মুন্ডুমালা পৌরসভা দেড় লক্ষ টাকা ও প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকায় আড়াই লক্ষ টাকা করে দেয়া হয়। বরাদ্দের এসব টাকা বিভাজন করে পরিষদের মেয়র ও চেয়ারম্যানরা তাদের আস্থাভাজন স্বচ্ছল ব্যক্তিদের ৫০০ টাকা করে পাইয়ে দিয়েছেন। গত ২৮ এপ্রিল উত্তোলন করে ৬ মে পর্যন্ত বিতরণ করতে দেখা গেছে। কিন্তু অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীরা বিগত ৭ মাস ধরে কোন ভাতা না পেলেও জেনারেল রিলিফের এতোটুকু সাহায্য ও সহায়তা দেয়া হয়নি এ অঞ্চলের প্রতিবন্ধীদের।

এবিষয়ে আস্থা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থার আইন বিচার ও এ্যাডভোকেসী সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল জুবায়ের বলেন, অনেক প্রতিবন্ধীর কোন কর্মক্ষমতা নেই। ভিক্ষাবৃত্তি ও সাহায্য সহায়তার উপর নির্ভর করে তাদের জীবন চলে। কিন্তু বিগত ৭ মাস ধরে তানোর পৌরসভায় কোন ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছে প্রতিবন্ধীরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঘরে অবস্থান করায় অনেক প্রতিবন্ধীর ভিক্ষাবৃত্তি বন্ধ হয়ে পড়েছে। বর্তমান পেক্ষাপটে সভ্য সমাজের কেউ আন্তরিক নয়। পারলে প্রতিবন্ধীদের ভাগও কেড়ে খাই।

তিনি আরও জানান, বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার আন্তরিক। কিন্তু প্রতিবন্ধীদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন, পৌর পরিষদের মেয়র এবং চেয়ারম্যানরা সরকারি সাহায্য ও সেবা প্রদানে উদাসিন। সম্প্রতি পৌর পরিষদে ‘জিআর’ প্রকল্পের আওতায় প্রত্যেক অসহায় অসচ্ছল ব্যক্তিদের পরিবর্তে আস্থাভাজন সচ্ছল ব্যক্তিদের ৫০০ টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু প্রতিবন্ধীদের সহায়তার জন্য এতোটুকু টাকা দেননি সংশ্লিষ্ট পরিষদের মেয়র কিংবা চেয়ারম্যানরা।

তিনি আরও জানান, অসহায় অসচ্ছল ব্যক্তি বলতে প্রথমে প্রতিবন্ধীকে বোঝায়। তাদের এলাকায় শহিদুল ইসলাম ওরফে ভুদল (১৯) নামে এক শারীরিক প্রতিবন্ধী রয়েছে। তার কোন কর্মক্ষমতা নেই। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে তাকেসহ পুরো উপজেলার কোন প্রতিবন্ধীকে ‘জিআর’ প্রকল্প থেকে এতোটুকু সাহায্য ও সহায়তা দেয়া হয়নি।

সমাজসেবা অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তানোরে প্রায় ৩০ হাজারের উর্দ্ধে বিভিন্ন ধরণের ভাতাভোগী রয়েছে। এদের মধ্যে শুধু আড়াই হাজারের মতো প্রতিবন্ধীরা সরকার থেকে ভাতা পান। কিন্তু এ সংখ্যা ১৫ হাজারের মতো। তাও আবার গত বছরের অক্টোবর মাস থেকে চলতি বছরের মে পর্যন্ত ৭ মাস ধরে ভাতা বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও বয়স্ক, বিধবা ও পরিত্যাক্তা দুস্থ মহিলা আর হিজড়া ভাতাভোগীর সংখ্যাও কম নয়, ১৫ হাজারের মতো। এঅবস্থায় সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে প্রতিবন্ধীদের পার্শ্বে দাঁড়ানোর আহবান জানান তিনি।

এনিয়ে উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভার মেয়র সাইদুর রহমান বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে মানবিক সহায়তা হিসেবে ‘জিআর’ প্রকল্পের আওতায় কাউন্সিলরদের তালিকা মোতাবেক ৫০০ টাকা করে দেয়া হয়। আর প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে ওইভাবে বলা হয়নি। এজন্য তাদের ভাগ্যে জিআর প্রকল্পের টাকা জোটেনি বলে এড়িয়ে যান তিনি।

তবে, এব্যাপারে তানোর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোহাম্মদ হোসেন খাঁন বলেছেন, সরকারের এক নির্দেশনায় ‘নগদ’ নামের মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ভাতা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আমরা ওই কোম্পানীকে বেশ কয়েক মাস আগে ভাতাভোগীর তালিকা প্রদান করেছি। কিন্তু তাদের গাফলতির কারণে বিগত ৭ মাস ভাত বন্ধ রয়েছে। সম্প্রতি ইউনিয়ন পরিষদগুলোতে ভাতা ছাড় দেয়া হয়েছে। কিন্তু তানোর পৌরসভায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অসুস্থ্য হওয়ায় ভাতা প্রদানে বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে।

এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে ঈদের আগে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কথা বলা হয়েছে। এরপরও ভাতা প্রদানে কেউ উদাসিন হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আজকের তানোর

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.