শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৫৮ pm
রাবি প্রতিবেদক : শেষ কর্মদিবসের আগের দিন শতাধিক ব্যক্তিকে চাকরি দিয়ে গেলেন রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. এম আবদুস সোবহান। বিদায় বেলায় ভিসি নিয়োগ দেবেন, এমন খবর আগেই চাওর ছিল। এ নিয়ে সরব ছিলেন বিশ^বিদ্যালয়ের দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকেরা।
ভিসিও নিজের বাড়িতে ছাত্রলীগের পাহারা বসিয়েছিলেন। এদের মধ্যে থেকে একজন দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকদের প্রকাশ্যে গুলি করে দেয়ার হুমকি দেন। এসব নিয়ে উত্তেজনা ছিল ক্যাম্পাসে। তবে সপ্তাহব্যাপী এই উত্তেজনার মধ্যেই বিদায় বেলায় শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী পদে প্রায় শতাধিক ব্যক্তিকে নিয়োগ দিয়ে গেলেন বিতর্কিত এই ভিসি। সংখ্যাটা ১২৫ হতে পারে বলে জানা গেছে। তবে ৮৫ জনের নামের তালিকা প্রকাশ হয়েছে।
গত বুধবার (৫ মে) ভিসি অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান এডহকে নিয়োগের তালিকায় সই করেন। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ মে) দুপুরে তিনি পুলিশ পাহারায় ক্যাম্পাস ছাড়েন। এ দিনই ছিল তাঁর শেষ কর্মদিবস। দুপুরে ভিসি গাড়িতে উঠে যাওয়ার পর সাংবাদিকরা ঘিরে ধরে তাঁর কাছে এই নিয়োগের বিষয়ে জানতে চান। কিন্তু তখন ভিসি কোন জবাব দেননি। শুধু বলেছেন, ‘আপনারা ভাল থাকেন, আমার জন্য দোয়া করবেন।’
ভিসি চলে যাওয়ার পরই নিয়োগপ্রাপ্তরা যোগদান করেন। প্রশাসন ভবনে তাঁদের কাগজপত্র নিয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা যায়। নিয়োগ পাওয়া অধিকাংশই সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ২০১৭ সালে ৭ মে উপাচার্য হিসাবে চার বছরের জন্য নিয়োগ পান। নিয়োগ যোগ্যতা শিথিল করে মেয়ে ও জামাতাকে নিয়োগ, বক্তব্যে জয়হিন্দ বলাসহ নানা বিতর্কিত কাজের জন্য মেয়াদের বেশির সময় ছিলেন আলোচনায়। সর্বশেষ বিতর্কিত এডহক নিয়োগের ফলে ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিদায় বেলায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য এডহক নিয়োগের ফলে ক্যাম্পাসের স্থিতিশীল পরিবেশ বিনষ্ট হবে বলে মনে করছেন বিশ্ববদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকরা। তারা বলছেন, এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। পাশাপাশি সরকারকে বৃদ্ধা আঙ্গুলি প্রদর্শন করা হলো।
দুর্নীতি বিরোধী শিক্ষকদের মুখপাত্র অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম টিপু বলেন, এ নিয়োগের ফলে পরবর্তীতে যে প্রশাসন আসবে তাকে এর মাশুল দিতে হবে। ইউজিসি যদি এডহকের বেতন দিতে অস্বীকৃতি জানায় তখন ক্যাম্পাসে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হবে।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আশরাফুল আলম খান বলেন, এ নিয়োগের ফলে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছ। এছাড়া পরবর্তী ভিসি যিনি হবেন তার জন্য চ্যালেঞ্জি হবে। কারণ এতোগুলো লোকের বেতন ভাতা, চাকরি স্থায়িকরণে চাপ। এই নিয়োগ লজ্জাজনক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।