শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:৫৯ am

সংবাদ শিরোনাম ::
মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য কোথাও বসাতে না পেরে বিক্রি করলেন ভাঙারির দোকানে রাজনৈতিক দলকে সরিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা নেই : আনন্দবাজারকে জামায়াতের আমির আগামী তিন মৌসুমের জন্য আইপিএলে যে ১৩ ক্রিকেটারের নাম দিল বিসিবি স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েও কাজ থামিয়ে রাখেননি অভিনেত্রী হিনা খান নগরীতে সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অপরাধে ১১ জন গ্রেপ্তার তানোরে সার বিতরণে অনিয়ম ও পাঁচার রোধে হট্টগোল মারপিট দুর্গাপুরে হোজা নদী পুন:খনন ও দখলমুক্ত দাবিতে ইউএনও’কে স্মারকলিপি রাজশাহীতে সমন্বয়ক পেটানোর ব্যাখ্যা দিল মহানগর ছাত্রদল আঘাতের দাগে সম্পর্কের রূপান্তর ! রাজু আহমেদ তানোরে শিক্ষক সমিতিকে নিজ পকেটে রাখতে মরিয়া বিএনপি নেতা মিজান অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে চান জেড আই খান পান্না নগরীতে বিএনপি নেতাকে ছুরিকাঘাত আগামী ২৯ নভেম্বর খুলছে রাজশাহী সুগার মিল জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ও নিহতদের স্মরণে স্মরণসভা রাজশাহীতে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ১১ বাগমারা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবু তালেবের ইন্তেকাল তানোরে মসজিদের এসি অফিসার্স ক্লাবে, ইমামের অর্থ আত্নসাৎ প্রমান পেয়েছে তদন্ত কমিটি সাংগঠনিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে তানোরে বিএনপির কর্মীসভা নগরীতে ছাত্রলীগ নেতাসহ বিভিন্ন অপরাধে ৮ জন গ্রেপ্তার লীজকৃত পুকুর দখল, মালিককে বুঝিয়ে দিতে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ
শ্রমিক নেতা রফিক পাখি আ.লীগ, না বিএনপির সমর্থক!

শ্রমিক নেতা রফিক পাখি আ.লীগ, না বিএনপির সমর্থক!

এম এম মামুন :
রাজশাহীর শ্রমিক নেতা রফিক আলী পাখির বিরুদ্ধে আওয়ামী সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ উঠেছে। এই শ্রমিক নেতা বিগত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অচার-অনুষ্ঠানে যোগদান দিয়েছেন। জাতীয় দিবসের পাশাপাশি শোক দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও তার অংশ গ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মত। শ্রমিক নেতা পাখি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিতির ছবি ইতোমধ্যে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

এতে প্রকৃত যারা জাতীয়তাবাদি শ্রমিক দলের নেতা-কর্মী সমর্থক, তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রাজশাহী মহানগর শ্রমিক লীগ ও আওয়ামী লীগের অনুষ্ঠানে যোগ দিলেও গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনেবর পর তিনি পুনরায় বিএনপিপন্থী হিসাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়া রাজশাহী শ্রমিক ইউনিয়ন দখল, বাসস্ট্যান্ডে বিএনপিপন্থী কাউন্টার থেকে জোর করে চাঁদা তোলা, শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীদের সাথে চলা অভিযোগ রয়েছে শ্রমিক নেতা পাখির বিরুদ্ধে। জাতীয়তাবাদি শ্রমিক দলের নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন পাখি আওয়ামী লীগ নাকি বিএনপি?

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, গত ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট শোক দিবস অনুষ্ঠানে রাসিকের সাবেক মেয়র লিটনের সাথে শ্রমিক নেতা পাখি খাবার বিতরণ করছেন। এই খাবার বিতেেরণর সার্বিক তত্বাবধায়নে ছিলেন পাখি। একই সাথে রাসিক মেয়রের সাথে তিনি বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতার কবরে পুস্তস্তব অর্পন করছেন। শুধু শোক দিবসই নয়, তিনি মহানগর আওয়ামী লীগ ও শ্রমিক লীগের রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করেছেন। বিশেষ করে সাবেক কাউন্সিলর মাহাতাব চৌধুরির প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠনে পাখির অংশ গ্রহণ ছিল স্বস্ফুর্ত। মহানগর শ্রমিক লীগের অনুষ্ঠানে মাহাতাব চৌধুরির সাথে অংশ নেয়া বেশ কিছু ছবিও প্রকাশ হয়েছে পাখির।

এদিকে গত ৫ আগস্টের পর জাতীয়তাবাদি শ্রমিক নেতা দাবি করে পাখি শ্রমিক ইউনিয়ন দখল করে নেয়। তিনি নিজেকে বিএনপি পন্থী দাবি করে শ্রমিক লীগের যারা নির্বাচিত প্রতিনিধি ছিল তাদের বের করে দিয়ে এই ইউনিয়ন দখল নিয়েছেন। সেখানে তিনি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তিনি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করলেও গুটি কয়েকজন জাতীয়তাবাদি আদর্শের শ্রমিক দলের নেতাদের কমিটিতে রেখে বাকিগুলো শ্রমিক লীগের সমর্থক বা নেতা রাখা হয়েছে। সাবেক কাউন্সিলরের সাথে যোগসাজস করে পাখি এখনো তার লোকজন নিয়েই চলাফেরা করছেন। শ্রমিক দলের নেতাদের ভাষ্যমতে এখনো সাবেক কাউন্সিলর মাহাতাব হোসেন চৌধুরির নির্দেশেই শ্রমিক ইউনিয়ন পরিচাল করছেন পাখি।

এদিকে, ৫ আগস্টের পর পাখি শ্রমিক ইউনিয়ন দখল নিয়ে শুরু করেন চাঁদাবাজি। বাসস্ট্যান্ডে যতগুলো কাউন্টার রয়েছে সেসব কাউন্টার থেকে তিনি প্রতিদিন ২শ’ টাকা হারে চাঁদা তুলছেন। এই চাঁদার টাকা তিনি নিজে নিচ্ছেন। বাসস্ট্যান্ডে অনেক শ্রমিক দলের নেতাদের কাউন্টার রয়েছে। এসব শ্রমিক দলের নেতাদেরও ছাড় দিচ্ছে না পাখি।

ভাই ভাই কাউন্টারের মালিক নাম প্রকাশ না করার সর্তে বলেন, পাখি আমার কাছে প্রতিদিন ২শ’ টাকা দাবি করেন। আমি টাকা দিতে না চাইলে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হয়। পরে আমার কাউন্টার বন্ধ করে দেয়া হবে বলে হুমকি দেন পাখি। শুধু এই কাউন্টারই নয়, বাসস্ট্যান্ডের প্রতিটি কাউন্টার থেকে দৈনিক ২শ’ টাকা হারে মাসিক ৬ হাজার টাকা চাঁদা তুলছেন এমন অভিযোগ রয়েছে পাখির বিরুদ্ধে।

এদিকে রাজশাহী সড়ক পরিবহনের গ্রুপ নিয়ে চলছে চরম অরাজকতা। প্রকৃত বিএনপিপন্থীদের উপর হামলা করে তাদের বের করে দিয়ে নজরুল ইসলাম হেলাল দখল নিয়েছে। তিনি সড়ক পরিবহনের গ্রুপ নিয়ে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটিতে প্রায় ২০জন সদস্যই আওয়ামীপন্থী। এ নিয়ে গত বুধবার সড়ক পরিবহনের গ্রুপের কার্যক্রমে স্বচ্ছতার জন্য প্রশাসক নিয়োগের জন্য পরিবহনের গ্রুপের একাংশ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করার সময় হেলালের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়। মারপিট করা হয় মানববন্ধনকারীদের। পরে তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দায়ের করা হয়। গত শুক্রবার এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন নজরুল ইসলাম হেলাল। শ্রমিক লীগের কোনো অনুষ্ঠানে যেমন অতিথির চেয়ারে বসে থাকতেন পাখি, তেমনি এই সংবাদ সম্মেলনেও সামনের চেয়ারে বসে ছিলেন পাখি। এছাড়াও নজরুল ইসলাম হেলালের পক্ষ নিয়ে মানববন্ধনকারীদের মারপিট করেন পাখি। মূলত হামলার পর বিএনপির নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে মামলা করেন হেলাল। বিএনপি নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর রবিউল আলম মিলু, গৌতম মোহন চৌধুরী রাকেশ, মাইনুল হক হিরুর মত বিএনপির নির্যাতিত নেতাদের আওয়ামী লীগ আখ্যা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

মহানগর বিএনপির নেতারা বলছেন, পাখি আওয়ামী লীগের সময় সাবেক রাসিক মেয়র লিটন ও সাবেক কাউন্সিলর মাহাতাবের অনুষ্ঠানে অতিথির আসনে বসতেন। এখন বিএনপিপন্থী সেজে আবার সামনের কাতারে বসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে পাখি কোন দলের সমর্থক এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

এব্যাপারে রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর রবিউল আলম মিলু বলেন, আমি সড়ক পরিবহনের গ্রুপের কেউ না। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, নজরুল ইসলাম হেলাল, পাখি নিজেকে বিএনপিপন্থী দাবি করেন। তিনি এখন পর্যন্ত কতবার জেলে গেছেন, কতটুকু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সেটা বিএনপির নেতারাকর্মীরা জানে। আমি ৫ আগস্টের আগে জেলে গিয়েছি, ৫ আগস্টের পর জেল থেকে বের হলাম। কিন্তু তারাও তো বিএনপি করতো, তবে কেনো পুলিশ তাদের আটক করেনি। কেনো তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়নি? তিনি বলেন, যারা স্বৈরাচার সরকারের সাথে আতাত করে চলেছেন তারা তখনো যেমন ভাল ছিল, এখনো তারা ভাল আছেন। তবে বিষয়গুলো আমি বিএনপির হাইকমান্ডের কাছে তুলবো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাথে সখ্যতার অভিযোগ অস্বীকার করে শ্রমিক নেতা রফিক আলী পাখি বলেন, শ্রমিক ফেড়ারেশন একটি নির্দলীয় প্রতিষ্ঠান। এখানে আওয়ামী লীগ বিএনপি সবাই সমান। সাবেক মেয়র লিটনের সাথে আমার কোনো ছবি নাই। আর কাউন্সিলর মাহাতাবের সাথে যে ছবিগুলো আছে সেগুলো ভোটের সময় প্রচারণাকালে তোলা ছবি। কারণ ভোটের সময় আমরা এক সাথে প্রচারণা চালিয়েছি। এক সাথে বসেছি। সেইসব ছবি এখন ভাইরাল হয়েছে। এছাড়াও কাউন্টার থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন। এব্যাপারে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুনুর রশিদের সাথে তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। রা/অ

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.