সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:১৩ am
ডেস্ক রির্পোট :
জমির মালিক ও ওই জমিতে ভবন নির্মাতা কোম্পানির মধ্যে শুরু হয় বিরোধ। চুক্তি অনুযায়ী ফ্ল্যাট জমির মালিককে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও তা অন্য আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দেয় ডেভেলপার কোম্পানিটি। এ নিয়ে বিতণ্ডার সূত্র ধরে ফ্ল্যাট ক্রেতা ও ডেভেলপারদের লোকজন জমির মালিকের ছেলে তানজিল জাহান ইসলাম তামিমকে হত্যা করে। প্রাথমিক তদন্ত ও পাঁচ জনকে গ্রেফতারে পর পুলিশ এই তথ্য জানিয়েছে।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. রুহুল কবির খান এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, এই ঘটনায় নিহতের বাবা সুলতান আহমেদ বাদী হয়ে হাতিরঝিল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই আমরা অভিযান চালিয়ে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করি। তারা হলো মো. আব্দুল লতিফ (৪৬), মো. কুরবান আলী (২৪), মাহিন (১৮), মোজাম্মেল হক কবির (৫২) ও বাঁধন (২০)।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, জমির মালিক ও প্লেজেন প্রোপার্টি লিমিটেডের মধ্যে ভবন নির্মাণের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী কয়েকটি ফ্ল্যাট জমির মালিকরকে হস্তান্তর করার কথা ছিল ওই কোম্পানির। সে অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনও হয়। এরপরও ডেভেলপার তৃতীয় পক্ষের কাছে একটি ফ্ল্যাট বিক্রি করে দেয় যেটি জমির মালিকের পাওয়ার কথা। ফ্ল্যাট কেনেন মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তা মো. মামুন। এই নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত।
তিনি জানান, এ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) সকালে জমির মালিক ভবনের সাত তলায় নিজের ফ্ল্যাটে কাজ করতে যান। এ সময় মামুনের সহযোগিতায় ডেভেলপার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল লতিফসহ ২০ থেকে ২৫ জন দীপ্ত টিভির সম্প্রচার কর্মকর্তা ও জমির মালিকের ছেলে তানজিল জাহান ইসলাম তামিমের ওপর হামলা করে। আহত অবস্থায় তামিমকে রাজধানীর মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনায় নিহতের বাবা সুলতান আহমেদ বাদী হয়ে হাতিরঝিল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহতের পরিবার অভিযোগ করে, ডেভেলপার কোম্পানির মালিক বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। তার ইন্ধনে তার লোকজন এই হামলা চালিয়েছে। এই ঘটনায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ওই কর্মকর্তাও জড়িত।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিসি তেজগাঁও বলেন, আমরা রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করছি না। আমরা অপরাধ ও অপরাধী হিসেবে দেখছি। সে যেই হোক, তার দায় থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আমরা চার্জশিট দেবো। আমরা প্রাথমিকভাবে তার (ডেভেলপার কোম্পানির মালিক) সম্পৃক্ততা পাচ্ছি। এই ঘটনায় কার কী ভূমিকা ছিল তা তদন্তে উঠে আসবে। এছাড়া মাদকের ওই কর্মকর্তাকে মামলার ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে। আমরা তার সম্পৃক্ততার বিষয় তদন্ত করে দেখবো। বিএনপি নেতা রবিউল ৩ নম্বর আসামি।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জমির মালিকের সঙ্গে ডেভেলপার কোম্পানির দ্বন্দ্ব। সুতরাং তার তো দায়ই থাকবে। বাকিটা তদন্তে উঠে আসবে।
এই ঘটনায় রাজনৈতিক প্রভাব থাকায় পুলিশ আগে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি–– এমন অভিযোগ রয়েছে জানতে চাইলে রুহুল কবীর বলেন, হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দায়িত্বে অবহেলার দায়ে ইতোমধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তার অবহেলার প্রমাণ পেয়েছি। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন