রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:০৮ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় ‘ছাগল ও ভেড়ার পিপিআর রোগের ফ্রি ভ্যাক্সিনেশন’ ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। পিপিআর রোগ নির্মূল ও ক্ষুরারোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের আওতায় গত ১ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে এ টিকাদান কর্মসূচি। চলবে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত।
তবে ছাগল ও ভেড়ার টিকাদানের ক্ষেত্রে একটি সিরিঞ্জ অসংখ্যবার ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে এ ক্যাম্পেইনের মূল্য উদ্দেশ্য নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। পিপিআর রোগ নির্মূলের পরিবর্তে রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রামক রোগে আক্রান্ত কোনো ছাগল-ভেড়াকে টিকা দেওয়ার পর ওই একই সিরিঞ্জ অন্য ছাগল-ভেড়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না। আর সেটি করলে পরের ছাগল-ভেড়াও রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় একই সিরিঞ্জ অসংখ্যবার ব্যবহার করে ছাগল এবং ভেড়াকে সরেজমিন টিকা দিতে দেখা গেছে।
জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার বিদিরপুরহাট এলাকায় উত্তরা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এরকম দৃশ্য দেখা গেছে।
একই সিরিঞ্জ অসংখ্যবার ব্যবহার করে ছাগল ও ভেড়ার টিকা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে টিকাদানকর্মী লিংকন বলেন, এতে কোন সমস্যা নেই। আমরা এভাবেই দিচ্ছি। একদিনে আমরা দুটি করে ওয়ার্ডে ক্যাম্পেইন করছি। এক সিরিঞ্জ ব্যবহার করা যাবে না এটা তো আমাদের স্যারেরা বলেননি। অতিরিক্ত সিরিঞ্জেরও বরাদ্দ নাই। তাই আমরা একটাই ব্যবহার করছি।
জানতে চাইলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি ও এনিমেল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জালাল উদ্দিন সর্দার বলেন, এটা কোনোভাবেই উচিত না। এক সিরিঞ্জ অনেক ছাগল-ভেড়াকে টিকা দিতে ব্যবহার করলে রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
একটি সিরিঞ্জ একাধিক ছাগল-ভেড়াকে ব্যবহার করা যায় কিনা- জানতে চাইলে জেলার অতিরিক্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ফজলে রাব্বী বলেন, এটা উচিত না। একাধিক ছাগল- ভেড়ার ক্ষেত্রে একটি সিরিঞ্জই ব্যবহার করলে সংক্রামক ব্যাধি একটি থেকে অন্যটিতে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ দিনের এই টিকাদান কর্মসূচিতে জেলার সাড়ে ১৩ লাখ ছাগল-ভেড়াকে পিপিআর টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। পিপিআর ছাগল-ভেড়ার একটি মরণঘাতী রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হলে গবাদিপশুর মুখ থেকে হলুদ এক ধরনের পদার্থ নিঃসৃত হতে দেখা দেয়।
ছাগলের জ্বর আসে, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্ট হয়। এই রোগে ছাগল-ভেড়ার মৃত্যুর হার ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ। প্রাণী স্বাস্থ্যের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিটি দেশকে পিপিআর মুক্তকরণের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ কর্মসূচির অংশ হিসেবেই বর্তমানে বাংলাদেশে পিপিআর টিকা প্রয়োগ চলছে। সূত্র : যুগান্তর