রবিবর, ১০ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:১৮ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
দেশের প্রত্যেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মানুষকে স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে প্রায় ১০ বছর আগে সরকারিভাবে মোবাইল ফোনে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু হয়। এজন্য দেশের প্রতিটি উপজেলার ন্যায় রাজশাহীর তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকার থেকে মোবাইলে গ্রামীণ সিমকার্ড সরবরাহ করা হয়। কিন্তু কাঙ্খিত এ সেবাও যেন সোনার হরিণ। এখন এসব মোবাইল ফোন রিসিভ তো দূরের কথা ফোন দেয়া হলে বন্ধ পাওয়া যায়। ফলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোবাইল স্বাস্থ্যসেবার মুখ থুবড়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালের মে মাস থেকে সারাদেশের ন্যায় রাজশাহীর তানোর উপজেলায় মোবাইলে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেয়া হয়। এই মোবাইল নম্বরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা তাদের সমস্যার কথা জানিয়ে তাৎক্ষণিক জরুরি চিকিৎসাসেবা নিতে পারেন। মোবাইলে কী ধরনের চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে এ সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণের জন্য হাসপাতাল চত্বরে সিটিজেন চার্টার স্থাপন করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু এক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এ ধরণের বিলবোর্ড কিংবা সিটিজেন চার্টার রাখা হয়নি।
দিবারাত্রি ২৪ ঘণ্টা মোবাইলে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাবে। এজন্য উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরি বিভাগে এমবিবিএস ডাক্তার থাকবেন। এসব ডাক্তাররা মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবেন। কিন্তু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসব মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ পাওয়া যায়। এছাড়া এসব মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয় না। তবে কোনো সময়ে রিসিভ করা হলেও ডাক্তারের পরিবর্তে আয়া, নার্স ও পিয়নরা এসব ফোন রিসিভ করে থাকেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম নিশ্চিত করতে মেডিকেল অফিসাররা রাতদিন ২৪ ঘণ্টা ওইসব নম্বরে রোগিদের জরুরি সেবা ও পরামর্শ দেয়ার কথা। নম্বরগুলো জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রদর্শন ও প্রচারের সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জনগণকে নম্বরটি সম্পর্কে অবহিত করতে বলা হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এসব নম্বর হাতে পেয়ে প্রচার বা প্রদর্শনে উদ্যোগী না হওয়ায় মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম আজো ফলপ্রসূ হয়নি। এ কারণে সেবারটির মুখ থুবড়ে পড়েছে।
তানোর উপজেলাতে মোবাইলে স্বাস্থ্যসেবা পেতে ০১৭৩০-৩২৪৭০৮ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য ফোনটি উন্মুক্ত করা হলেও তা চালু রাখা হয় নি। এরির্পোট লেখার সময় ওই নম্বরে ১২ মার্চ মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৮ মিনিটে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এভাবে নম্বরটি বন্ধ থাকায় মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ মানুষ। এরআগে গত শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফোন দেয়া হলেও বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে, তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক অফিসার (দায়িত্বরত) ডা. ইসরাত জেরিন বলেন, মোবাইল স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে শুধু মোবাইল সিমকার্ড সরবরাহ করা হয়েছে। এরপরও এ সেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে জুরুরি বিভাগে ডাক্তার থাকে। তবে, কোনো কোনো সময়ে কেডিকেলে মোবাইল নেটওয়ার্ক থাকে না। হয়তো কারণে বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবু বাক্কার সিদ্দিকসহ বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, স্বাস্থকেন্দ্রের জরুরি সেবার মোবাইল নম্বরটি সম্পর্কে তারা অবগত নন। তারা বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি হয়েও এ ধরনের স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে তাদেরকে কেউ অবহিত করেন নি। তারা এমন স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে না জানলে সাধারণ মানুষ কীভাবে জানবে এবং কীভাবে সেবা নেবে এমন উল্টো প্রশ্ন করেন তারা।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর টিএইচও ডা. বার্নাবাস হাসদাকের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি।
রাজশাহী সিভিল সার্জন অফিসার ডা. আবু সাইদ মোহাম্মাদ ফারুক বলেন, মোবাইলে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডাক্তাররা দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এক্ষেত্রে কেউ অবহেলা করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে নম্বরটি সম্পর্কে খুব শিগগির সাধারণ জনগণকে জানানোর উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানান তিনি। রা/অ