শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:০৪ pm
জীবন থেকে কেউ চলে গেলে জীবন কখনও থেমে থাকে না। জীবন জীবনের গতিতে চলে। প্রিয়জনের চলে যাওতে হয়ত জীবনের কিছু সময় জীবন থেকে হাড়িয়ে যায়, সময়ের ব্যবধানে আবার আমরা নতুন করে স্বপ্ন দেখি, জীবন চলার পথে অনেক ধরনের বাধা আসবে আর সমস্ত বাধা মোকাবেলা করে জীবনের লক্ষ্যেই পৌঁছানো হল আসল জীবন। জীবন থেকে প্রিয়জন চলে যাওয়াতে আমরা যদি নিজেকে গুটিয়ে নেই তাহলে তো আমাদের জীবনের ছন্দ পতন ঘটবে তাই আমরা সব কিছু ভুলে গিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেই, নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করি। জীবনের দৌড়ে হোঁচটটা খেয়েও আবার প্রতিযোগিতায় নামতে হয়।
অনিচ্ছা স্বত্তেও বই খাতা নিয়ে বসতে হয়। বন্ধুদের হাসি আড্ডার ডাকে সাড়া দিতে হয়। শামুকের মত গুটিয়ে থাকা খোলসটা ঝেড়ে ধীরে ধীরে সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করতে হয়। কিন্তু সমস্যাটা হলো সেই চলে যাওয়া মানুষটার সাথে কাটানো সময় গুলোর স্মৃতিকে নিয়ে চলে যাওয়া মানুষটারে সাথে সারাদিন কথা না বলেও থাকা যায়। কিন্তু ঝামেলাটা অন্য জায়গায়, সে যখন ছিলো তখন সারাদিন তার সাথে বলা কথাগুলো মনে পরতে থাকে, আর তখন তার সাথে কথা বলা অপরিহার্য হয়ে পরে। সকালে উঠে প্রিয় মানুষটা ম্যাসেজ দেয়নি সেটা কিন্তু সমস্যা না। সমস্যা হলো প্রিয় মানুষটা আর তার নেই, সে আর কখনো তাকে ম্যাসেজ দিবে না।
এই ভাবে বুকের বা পাশ্বে একটা ব্যাথা হবে দীর্ঘশ্বাস নিয়ে সকালটা শুরু করতে হবে। এখানে আসল সমস্যা। দিনের শুরুতেই তুমি কেমন আছো অথবা কি করছো সেটা আজ পছন্দের মানুষটা জিজ্ঞেস করেনি বলে তোমার দিন অথবা জীবন কোনটাই কিন্তু থেমে থাকবে না। কিন্তু গতকাল সেই মানুষটার সাথে কি করো অথবা কেমন আছো নিয়ে কথা বলার মূহুর্তটা মনে পরে গেলেই তোমার আর ভালো লাগবে না। তখনই তোমার দিন আর জীবন দুটোই যেন থমকে দাঁড়াবে। বাহিরে যাওয়ার সময় তুমি কোথায় যাচ্ছো অথবা কেন যাচ্ছো এইসব কেউ জিজ্ঞেস করছে না বলে তোমার মন খারাপ হবে না। কিন্তু রিকশায় উঠবে পাশ্বের সিটের মানুষটা যখন থাকবে না। তখন শুধু মনে হবে সে থাকলে আজ আমার পাশে বসত। অথবা পার্কের রাস্তায় পাশ দিয়ে যখন কেউ হাত ধরে চলে যাবে।
পার্কে দুই বসা জনকে দেখলেই প্রিয়ও মানুষটির কথা খুব বেশি মনে পরবে সেটা দেখে তুমি আর ঠিক থাকতে পারবে না। সমস্যা এখানেই। প্রকৃত পক্ষে স্মৃতিকে তুমি যতক্ষণ না হাসিমুখে মেনে নিয়ে নিজেকে শক্ত করে এগিয়ে চলার সাহস পাবে না। ততক্ষণ তোমার বর্তমান অপচয় হবে অতীতের মায়ায় পরে। অতীতকে ভুলে যেত না পারা অব্দি তোমার কিছু হবে না। কিন্তু এই স্মৃতি অনেক বেহায়া। এতোটাই বেহায়া যে তুমি নিজের নাম মনে হারিয়ে ফেলবে কিন্তু স্মৃতিকে মনে হারাতে পারবে না। কিন্তু ওই যে স্মৃতিকে ভুলে যাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো স্মতিকে ভুলার চেষ্টা না করা, স্মৃতিকে স্মৃতি জায়গায় রেখে পথচলা শুরু করে দাও। একটা সময়ে দেখবা স্মৃতিকে ছেড়ে তুমি অনেকদূর চলে এসেছো। তখন স্মৃতি আর তোমাকে কষ্ট দিবে না। তুমি চাইলেও স্মৃতি তোমাকে কাঁদাতে পারবে না। রা/অ