সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৭:১০ pm
ক্রীড়া ডেস্ক :
আগামী জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে আগামীকাল শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের দশম আসরকে দেশের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক ইভেন্টে ভেবেই খেলতে নামবে ক্রিকেটাররা। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এবং নতুন নামকরন হওয়া দুর্দান্ত ঢাকার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে বিপিএল। ম্যাচটি শুরু হবে দুপুর আড়াইটায়। দিনের অন্য ম্যাচে মুখোমুখি হবে সিলেট স্ট্রাইকার্স ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে। দু’টি ম্যাচই হবে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
এবারের মৌসুমে দুর্দান্ত ঢাকার হয়ে মাঠ মাতাবেন পেসার শরিফুল ইসলাম। বিপিএল নিয়ে তিনি বলেন, ‘কোন সন্দেহ নেই, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে বিপিএল অনেক সাহায্য করবে। এটা আমাদের প্রধান টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। এখানে ভালো পারফর্ম করে সবার নজর কাড়তে চাই। আমি মনে করি এই টুর্নামেন্টটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে আমাদের সহায়তা করবে।’ শুক্রবার বাদে সপ্তাহের অন্যান্য দিনের প্রথম ম্যাচ দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে এবং দ্বিতীয়টি সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে। শুক্রবারের প্রথম ম্যাচ দুপুর ২টায় এবং দ্বিতীয়টি সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে। এবারের বিপিএলের শিরোপা লড়াইয়ে থাকা সাতটি দল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, রংপুর রাইডার্স, দুর্দান্ত ঢাকা, খুলনা টাইগার্স, ফরচুন বরিশাল, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এবং সিলেট স্ট্রাইকার্স। ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম এবং সিলেটের সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৪৩ দিনে মোট ৪৬টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। বিপিএলে নতুন দল না হলেও এবার নতুন মালিকানার অধীনে খেলবে ঢাকা। ঢাকার কোচ হিসেবে দায়িত্বে থাকা খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, ‘যখন কেউ দল গড়ে তখন ঐ দলের লক্ষ্য থাকে চ্যাম্পিয়ন হওয়া।
কিন্তু বাস্তবে আমাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ নকআউট পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা। কখনও-কখনও চ্যাম্পিয়ন হবার জন্য ভাগ্যের প্রয়োজন হয়।’ টুর্নামেন্টের উন্মাদনা যেমনটা হওয়া উচিত, সেটি প্রত্যাশিতভাবে হয়নি। তবে বিসিবি কর্মকর্তাদের বিশ্বাস, টুর্নামেন্ট শুরু হলে তা সবার মধ্যে সাড়া ফেলবে। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন থাকায়, সবাই সেখানে ব্যস্ত ছিল। এজন্য আমরা উন্মাদনা তৈরিতে খুব বেশি কাজ করতে পারিনি। তবে টুর্নামেন্টটি সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে আমরা সকল কার্যক্রম চালিয়ে গিয়েছি। মাঠের লড়াই শুরু হলে, এমনিতেই উন্মাদনার সৃষ্টি হবে।’ আগের মতো নয়, এবার টুর্নামেন্টটিকে ভালোভাবে সাজানোর অঙ্গীকার করেছিলো বিসিবি। বিসিবির বেশ কয়েকজন পরিচালক বলেছেন, বিশেষভাবে মিরপুরের উইকেট এমনভাবে প্রস্তুত করা হবে যেন হাই-স্কোরিং ম্যাচ হয়। তবে মিরপুরের উইকেট সবসময়ই ধীরগতির এবং নিচু হয়ে থাকে। আগেরবারের চেয়ে ধারাভাষ্যকে মনমুগ্ধকর করতে পাকিস্তানের জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজাকে এনেছে আয়োজকরা। তারই স্বদেশী আমির সোহেল, ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক কিংবদন্তি কোর্টলি অ্যামব্রোস, শ্রীলংকার রাসেল আরনল্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার এইচডি অ্যাকারম্যানের সাথে ধারাভাষ্যে থাকবেন সাবেক পিসিবি চেয়ারম্যান রাজাও। তাদের সাথে স্থানীয় ধারাভাষ্যকাররাও থাকবেন। এবার টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই ডিআরএস সিস্টেম কার্যকর থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন কর্মকর্তারা। এবার বিপিএলের ম্যাচ টিকিটের সর্বনিম্ন মূল্য থাকছে ২০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫০০ টাকা। ইস্টার্ন স্ট্যান্ডের টিকিট ২০০ টাকায়, উত্তর/দক্ষিণ স্ট্যান্ডের টিকিটের দাম ৪০০ টাকা, ক্লাব হাউস ৮০০ টাকা, ভিআইপি স্ট্যান্ড ১৫০০ টাকা এবং গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড ২৫০০ টাকায় কেনা যাবে। ম্যাচের দিন এবং আগের দিন শহীদ সোহরাওয়াদী ইনডোর স্টেডিয়াম এবং মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের ১নং গেট সংলগ্ন টিকিট বিক্রির কাউন্টারে টিকিট পাওয়া যাবে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স : ধরে রাখা এবং সরাসরি চুক্তি : লিটন দাস, মুস্তাফিজুর রহমান, তানভীর ইসলাম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, সুনীল নারাইন, তাওহিদ হৃদয়, মঈন আলী, আন্দ্রে রাসেল, ইফতিখার আহমেদ, জামান খান, খুশদিল শাহ, জনসন চার্লস, নুর আহমেদ, নাসিম শাহ, রশিদ খান। ড্রাফট থেকে : মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, জাকের আলি অনিক, মাহিদুল ইসলাম অংকন, রিশাদ হোসেন, রাকিম কর্নওয়াল, ম্যাথিউ ওয়াল্টার ফোর্ড, ইমরুল কায়েস, মুসফিক হাসান ও আনামুল হক।
দুর্দান্ত ঢাকা : ধরে রাখা এবং সরাসরি চুক্তি : তাসকিন আহমেদ, আরাফাত সানি, শরিফুল ইসলাম, মোসাদ্দেক হোসেন, চাতুরাঙ্গা ডি সিলভা, সিয়াম আইয়ুব, ওসমান কাদির। ড্রাফট থেকে : সাইফ হাসান, ইরফান শুক্কুর, আলাউদ্দিন বাবু, মেহরব হোসেন, লাহিরু সামারাকুন, সামিরা সামারাবিক্রমা, নাইম শেখ, সাব্বির হোসেন, জসিমউদ্দিন।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স :
ধরে রাখা এবং সরাসরি চুক্তি : শুভাগত হোম, জিয়াউর রহমান, নিহাদুজ্জামান, শহিদুল ইসলাম, মোহাম্মদ হারিস, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ হাসনাইন, স্টিভেন এসকান্দি। ড্রাফট থেকে : তানজিদ হাসান তামিম, আল আমিন হোসেন, সৈকত আলী, ইমরানুজ্জামান, কার্টিস ক্যাম্পার, বিলাল খান, শাহাদাত হোসেন দিপু, সালাহউদ্দিন শাকিল।
খুলনা টাইগার্স :
ধরে রাখা এবং সরাসরি চুক্তি : নাসুম আহমেদ, নাহিদুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, এনামুল হক, এভিন লুইস, ফাহিম আশরাফ, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, শাই হোপ, ওয়াসিম জুনিয়র ড্রাফট থেকে : আফিফ হোসেন, রুবেল হোসেন, পারভেজ হোসেন ইমন, হাবিবুর রহমান সোহান, কাসুন রাজিথা, দাসুন শানাকা, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধো, আকবর আলী, সুমন খান।
রংপুর রাইডার্স :
ধরে রাখা এবং সরাসরি চুক্তি : নুরুল হাসান সোহান, মাহেদি হাসান, হাসান মাহমুদ, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, নিকোলাস পুরান, সাকিব আল হাসান, বাবর আজম, এহসানুল্লাহ, মাথিশা পাথিরানা, ব্রান্ডন কিং, হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। ড্রাফট থেকে : রনি তালুকদার, শামীম পাটোয়ারি, রিপন মন্ডল, হাসান মুরাদ, মাইকেল রিপন, ইয়াসির মোহাম্মদ, আবু হায়দার রনি, ফজলে রাব্বি, আশিকুজ্জামান।
ফরচুন বরিশাল :
ধরে রাখা এবং সরাসরি চুক্তি : মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, ইব্রাহিম জাদরান, তামিম ইকবাল, শোয়েব মালিক, পল স্টার্লিং, ফখর জামান, মোহাম্মদ আমির, আব্বাস আফ্রিদি, দুনিথ ওয়েলালাগে। ড্রাফট থেকে : মুশফিকুর রহিম, রকিবুল হাসান, সাইফুদ্দিন, সৌম্য সরকার, ইয়ানিক কারিয়া, কামরুল ইসলাম রাব্বি, প্রীতম কুমার, তাইজুল ইসলাম, প্রান্তিক নওরোজ নাবিল, দিনেশ চান্দিমাল।
সিলেট স্ট্রাইকার্স : ধরে রাখা এবং সরাসরি চুক্তি : মাশরাফি বিন মর্তুজা, জাকির হাসান, তানজিম হাসান সাকিব, নাজমুল হোসেন শান্ত, রায়ান বার্ল, বেন কাটিং, হ্যারি টেক্টর। ড্রাফট থেকে : মোহাম্মদ মিঠুন, রেজাউর রহমান রাজা, আরিফুল হক, ইয়াসির আলী রাব্বি, রিচার্ড এনগারাভা, দুশান হেমান্থা, নাজমুল ইসলাম অপু, শফিকুল ইসলাম, নাঈম হাসান, জাওয়াদ রোয়েন, সালমান হোসেন ইমন। উল্লেখ্য, প্লেয়ার ড্রাফটের পরও ড্রাফট থেকে খেলোয়াড়দের সরাসরি চুক্তিতে দলে নিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে হারালো বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল
এফএনএস স্পোর্টস :
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্ব কাপে নিজেদের দ্বিতীয় ও শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে দারুন জয় পেয়েছে বাংলাদেশের যুবারা। গতরাতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে বাংলাদেশের যুবারা ৫ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। নিজেদের প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলংকার কাছে বৃষ্টি আইনে ১১২ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছিলো বাংলাদেশ। প্রিটোরিয়ায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টস হেরে প্রথমে বোলিং করতে নামে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে নেমে বাংলাদেশের পেসার রোহানাত দৌল্লা বর্ষন ও বাঁ-হাতি স্পিনার মাহফুজুর রহমান রাব্বির বোলিং তোপে পড়ে ৩৭ দশমিক ১ ওভারে ১৬৫ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার কোন ব্যাটারই হাফ-সেঞ্চুরি সীমান পার করতে পারেননি। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন হার্জাস সিং। এ ছাড়া অধিনায়ক হুগ ওয়েবজেন (ঐঁময ডবরনমবহ) ৩১ রান করেন। বাংলাদেশের বর্ষন ৫ ওভারে ২১ রানে ৪ টি এবং রাব্বি ৫ ওভারে ২১ রানে ২ উইকেট নেন।
এ ছাড়া ইকবাল হোসেন ইমন-মারুফ মৃধা-রাফি উজ্জামান রাফি ও পারভেজ ইমন ১টি করে উইকেট নেন। ১৬৬ রানের জয়ের টার্গেট স্পর্শ করতে বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশকে। চৌধুরি এমডি রিজওয়ানের হাফ-সেঞ্চুরিতে ১০৭ বল বাকী রেখে জয় নিয়ে মাঠে ছাড়ে বাংলাদেশ। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৫৯ বল খেলে অপরাজিত ৫৩ রান করেন রিজওয়ান। এ ছাড়া জিশান আলম ২৩, আদিল বিন সিদ্দিক ২০ ও আশিকুর রহমান শিবলি ১৯ রান করেন। বিশ্বকাপের মূল লড়াইয়ে নামার আগে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিবে বাংলাদেশের যুবারদের। ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ। ২০ জানুয়ারি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে একবারের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। সূত্র : এফএনএস