বৃহস্পতিবর, ১৯ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:২৭ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ বাংলাদেশ ও ভারত ভিসা জটিলতায় চার যৌথ সিনেমা একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির আটক বৈরী আবহাওয়ার অজুহাতে বিদ্যুতের লোডশেডিং, অসহায় মানুষ বাগমারায় সাবেক এমপি এনামুল হক গ্রেফতার বাগমারায় মোমবাতির আগুনে ব্যবসায়ীর দোকান ও বসতবাড়ি পুড়ে ছাঁই
নতুন বইয়ে ঘ্রাণ : রাজু আহমেদ

নতুন বইয়ে ঘ্রাণ : রাজু আহমেদ

ক্লাসে ফাস্ট-সেকেন্ড হতাম বলে অন্যদের চেয়ে একখানা নতুন বই বেশি পেতাম। ৯০’এর দশকে ৬ খানা বইয়ের মধ্যে তিনখানা পুরাতন বই এবং তিনখানা নতুন বই দেয়া হত। ক্লাসের শুরুর দিকের শিক্ষার্থীরা বড়জোর চারখানা নতুন বই পেতো। শেষের দিকে যারা থাকতো তাদের ভাগে পড়তো দুইখানা নতুন বই! বাবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন তবুও এ রীতির ব্যতিক্রম হয় নি। তখন রাষ্ট্রের এতোটা সক্ষমতাও ছিল না। জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝি বই দেয়া হত। যেদিন বই দেয়ার তারিখ থাকতো সেদিন সকাল সকাল স্কুলে উপস্থিত হতাম। কেমন একটা অন্যরকম দিন ছিল!

আমাদের উৎসব শুরু হত বই নিয়ে বাসায় ফেরার পর। বিশেষ করে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নেয়ার মধ্যে কী যে আনন্দ ছিল তা বলে বোঝাত পারবো না। বাংলা বইখানা নতুন পেলে আর কোন কথা ছিল না। সেদিনের রাতেই সব বাংলা কবিতা পড়ে ফেলতাম। গল্প পড়তাম। ক্ষুধা ভুলে যেতাম। হ্যারিকেনের আলোয় বসে বাবা বইগুলোতে সুন্দরভাবে মলাট লাগিয়ে দিতেন। বিছানায় নতুন বই নিয়ে ঘুমাতাম! ছোটদের নতুন বই ধরতে দিতাম না কয়েক সপ্তাহ! একটা বেশি দাগ পরলে অন্তরে ব্যথা পেতাম। একটা উৎসব উৎসব আয়োজন। আমরাও সারাবছর বইগুলোকে যত্নে রাখতাম। বার্ষিক পরীক্ষার শেষের দিন অথবা ফলাফল প্রকাশের দিন বান্ডিল করে বই ফেরত দিতে হত। বান্ডিলের উপরে টুকরো কাগজে লেখা থাকতো। রাজু আহমেদ, চতুর্থ শ্রেণী, রোল নং-০১! ভালোবাসা জমা দিয়ে আসতাম। নতুন ভালোবাসার জন্য।

রাস্ট্রের সক্ষমতা বেড়েছে। বিগত কয়েক বছর থেকে ১লা জানুয়ারি দেশব্যাপী বই উৎসব পালন করা হয়। দেশের কয়েক লাখ শিক্ষার্থীকে সরকার কয়েক কোটি নতুন বই বিনামূল্যে উপহার দেয়। এ এক অন্যরকম আয়োজন। এই শতাব্দীর শিক্ষার্থীরা ভাগ্যবান। তারা প্রত্যেক বিষয়ে নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতে পারে। তারা বই উপহার পাওয়ার রাত্রিতে দীর্ঘক্ষণ জাগে কি-না জানি না! অভিভাবকরা বোধহয় জাগতে দেয় না! কেননা বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই পরবর্তী ক্লাসের বই সংগ্রহ করে ধরিয়ে দেয়, টিউশন-কোচিংয়ে লাগিয়ে দেয়! সরকার শিক্ষাকে আনন্দঘন করতে চাইলেও প্রতিযোগিতা সে অবস্থা রাখছে না!

নতুন বইয়ের প্রাণ আছে। একেক বিষয়ের বইয়ের একেকরকম ঘ্রাণ। নতুন নতুন ছবি। শিক্ষার্থীরা নিশ্চয়ই উপভোগ করে! তাদের বাবাদের এখন আর মলাট লাগিয়ে দিতে হয় না কেননা বই ফেরত দেওয়ার সিস্টেম নাই! তবুও আগের সময়ের চেয়ে বইগুলো বছর শেষেও নতুন থাকে! কোচিং-প্রাইভেটে তো গাইড পড়ায়! নতুন কারিকুলামের সম্পূর্ণ বাস্তবায়নে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আবার সেই হারানো আনন্দ ফিরে আসবে বলে বিশ্বাস। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আবার নতুন বইয়ের ঘ্রাণে মাতোয়ারা হোক। প্রাণে প্রাণ ফিরে পাবে।

বই উৎসব যেনো আর কোনদিন বন্ধ না হয়। সারাদেশে বই উৎসব-এক অভূতপূর্ব ঘটনা। রাস্ট্রের সক্ষমতা, সরকারের শিক্ষা নিয়ে আন্তরিকতায় এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা যারা বিগত শতাব্দীর মানুষ তারা এই আনন্দ মিস করি। আমাদের সন্তানদের নতুন বই পাওয়ার আনন্দটাই আমাদের আনন্দ মনে হয়। দেশের প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে যাক নতুন বই। ঘর ভর্তি হোক আলোয়। বাঁধভাঙা খুশির ঢেউয়ে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দের জোয়ার আসুক-সেই কামনায়। বই উৎসব সফল ও সার্থক হোক। কলাম লেখক, [email protected].

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.