রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:০২ pm
ডেস্ক রির্পোট :
চট্টগ্রাম নগরীতে পুলিশ হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক উপপরিচালক এস এম শহীদুল্লাহর (৬৭) মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) জুয়েল দেব সোমবার বিকেলে এক সদস্যের এই কমিটি গঠন করেন। তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মো. অলি উল্লাহকে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে রোববার সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারুন উর রশিদকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাকে সিএমএম আদালতের ক্যাশিয়ার পদে বদলি করা হয়েছে। দুদক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় যে আদালতের বিচারক আসামির বিরুদ্ধে সমন এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়েছিলেন হারুন উর রশিদ ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী। আদালতের সমন গোপন করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠানোর বিষয়টি সামনে রেখে কমিটি ঘটনার তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন সিএমএম আদালতের নাজিম মো. আবুল কালাম আজাদ।
আদলতের তথ্য মতে, গত ২৯ আগস্ট চট্টগ্রাম মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে মামলা করেন রনি আক্তার তানিয়া (২৬) নামে এক নারী। মামলার আরজিতে মারধরের অভিযোগ আনা হয় দুদক কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ ও তাঁর শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারের বিরুদ্ধে। তবে শহীদুল্লাহর স্বজনদের দাবি রনি আক্তার তানিয়া (বাদী) নামে কেউ দুদক কর্মকর্তার বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন না। তারা ওই নারীকে চেনেন না।
দুদক কর্মকর্তার পরিবারের দাবি, হয়রানি করতেই প্রতিপক্ষের লোকজন বাদীকে দিয়ে মিথ্যা মামলাটি করেছিলেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন উল্লিখিত আদালত।
পরোয়ানাটি ১ অক্টোবর চান্দগাঁও থানায় আসে। পরদিন পরোয়ানা তামিল করতে থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ইউসুফ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মামলার আরজিতে উল্লেখ করা হয়, গত জানুয়ারি থেকে তিন হাজার টাকা বেতনে রনি আক্তার তানিয়া শহীদুল্লাহর বাড়িতে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। প্রথম দুই মাস বেতন ঠিকমতো দিলেও মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত তার বেতন বকেয়া ছিল। ১২ আগস্ট বকেয়া টাকা চাইলে ওই সপ্তাহের মধ্যে টাকা পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন শহীদুল্লাহ। ২৩ আগস্ট রাতে বকেয়া বেতন চাইতে গেলে শহীদুল্লাহ তানিয়াকে থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে তাঁর শ্যালক মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ার তাঁকে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন।
দুদকের সাবেক এই কর্মকর্তার মৃত্যুর পর চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়। তাঁরা হলেন নগরের চান্দগাঁও থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. ইউসুফ আলী ও এ টি এম সোহেল রানা।
বৃহস্পতিবার নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এম এ মাসুদের সই করা এক আদেশে তাঁদের প্রত্যাহার করে দামপাড়া পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। দুদকের সাবেক কর্মকর্তা এস এম শহীদুল্লাহর মৃত্যুর ঘটনায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করছে। তদন্ত কমিটি নিরপেক্ষভাবে তদন্তের স্বার্থে অভিযানে থাকা দুই এএসআইকে থানা থেকে দামপাড়া পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) স্পিনা রানী প্রামাণিক জানান।
এদিকে এস এম শহীদুল্লাহর ছেলে নাফিজ শহীদ বলেন, ‘সম্পত্তি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে এক প্রতিবেশির বিরোধ রয়েছে। তাঁরা ওই নারীকে দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়েছেন। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলের শাস্তি চেয়েছেন।’ সূত্র : আজকের পত্রিকা