শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:৫৭ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, পুঠিয়া :
পুঠিয়ায় বিভিন্ন স্থানে দু’ডজনের অধিক ভেজাল কসমেটিক্স কারখানা গড়ে উঠেছে। এদের অবৈধ কাঁচা টাকার কারণে স্থানীয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোনোভাবেই ভেজাল কসমেটিক্স কারখানাগুলো বন্ধ হচ্ছে না। তারা বিভিন্ন পরিচিত ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী তৈরি করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পণ্যগুলো পাঠাচ্ছেন। যা মানবদেহের ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে উপজেলা প্রশাসনকে ১২টি ক্রিম কারখানায় অভিযান ও বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে উপজেলা প্রশাসন থানা পুলিশ বিএসটিআই অদ্যাবধি অবৈধ কারখানাগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়নি। অবশ্য মাঝে মধ্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করছে। কয়েকদিন বন্ধ থাকার পর আবার চালু করছে। কারণ হলো অবৈধ কসমেটিক্স ব্যবসাটি কয়েক বছর চালু রাখতে পারলে সে ব্যক্তি কোটিপতির খাতায় নাম লিখতে পারবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে যে অর্থ জরিমানা করে থাকেন, তা একটি কারখানা মালিকের একদিনের আয়ের কিছু অংশমাত্র।
পৌর সদরের রামজীবনপুরের কছিম উদ্দিন বলেন, এই গ্রামে কারখানা রয়েছে। মালিকরা প্রথমে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের(বিএসটিআই) দুই/তিনটি পণ্য উৎপাদনের লাইসেন্স নিয়ে থাকেন। এরপর রাতের আঁধারে দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের পণ্য নকল করে পণ্য বাজারজাত করছে। বানেশ্বর বাজারের দেলওয়ার হোসেন বলেন, স্থানীয় প্রশাসনকে মোটা অংকের টাকা দেওয়ায় তারা দেখেও না দেখার ভান করে কোনোরূপ পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বন্ধ করার নির্দেশ আসার পর অনেক কারখানার মালিকরা এর মধ্যে নাম পরিবর্তন করে ফেলেছেন।
কারখানার মালিকরা নামিদামি বিভিন্ন কোম্পানির মোড়ক ব্যবহার করে ভেজাল মিশ্রিত একাধিক পণ্যে উৎপাদন করছে। তাদের ওই পণ্যগুলো মানবদেহে ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। তারা স্টিলম্যান, টিয়ারিক এসিড, আইসোপ্রোপাইল, মাইরিস্টড, সাধারণ পানির মিশ্রণে রং ফর্সাকারী ক্রিম ও বিভিন্ন প্রসাধনী তৈরি করছে। ক্রেতারা ওই ভেজাল পণ্য ব্যবহার করে বিভিন্ন চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। পুঠিয়া বানেশ্বর বাজারে প্রথমে মর্ডান হারবাল রং ফর্সাকারী ক্রিম উৎপাদন শুরু করে। মর্ডান হারবাল কিছুদিনের মধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া দেখে, তার ভাইবোন, আত্মীয়স্বজন, কর্মচারীরা অবৈধ কসমেটিক্স ব্যবসা শুরু করে। এখন পুঠিয়ার গ্রামাঞ্চলজুড়ে অবৈধ কারখানাগুলো গড়ে উঠেছে।
কসমেটিক্সগুলো সারা দেশের মানুষ ব্যাপকহারে ব্যবহার করছে। এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ ফারুক হোসেন বলেন, আমি এই থানায় আসার পর বেশ কয়েকটি ভেজাল কসমেটিক্সের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে মামলা এবং জরিমানা করেছি। আগামীতে ভেজাল কসমেটিক্সদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। সূত্র : যুগান্তর