বৃহস্পতিবর, ২১ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৩৮ pm
ডেস্ক রির্পোট :
নাটোরের লালপুরে আওয়ামী লীগ নেতা আসলাম হোসেনের (৬০) বিরুদ্ধে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালিয়াতি করে ২৫ ব্যক্তিকে ভুয়া প্রতিবন্ধী কার্ড দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়াসহ প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযুক্ত আসলাম উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের নতুনপাড়া গ্রামের মৃত মাতু সরকারের ছেলে এবং ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছর উপজেলার দুড়দুড়িয়া ইউনিয়নের ২৫ ব্যক্তিকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী আব্দুল মান্নানের মাধ্যমে প্রত্যেকের থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা করে নেন আসলাম হোসেন। পরবর্তীতে লালপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল মোতালেবের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে প্রত্যেককে ভুয়া প্রতিবন্ধী কার্ড প্রদান করেন তিনি। সম্প্রতি তারা উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন তাদের ভুয়া প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়া হয়েছে। তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৫-৩০ জনের সঙ্গে এমন প্রতারণা করা হয়েছে। প্রতারণার শিকার প্রত্যেক ব্যক্তিই অসচ্ছল, প্রতিবন্ধী ও শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাদের সবাইকে কার্ড করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে ৬২ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা।
সরেজমিন দেখা যায়, ভুক্তভোগী একই এলাকার পলান উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মান্নান। তার এক হাত নেই। প্রতিবন্ধী কার্ড করতে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরেও কার্ড করতে পারেননি। পরে আসলামকে ২ হাজার ৫শ টাকা দেন ভাতা করার জন্য। তার কিছুদিন পর কার্ড দেন। পরে জানতে পারেন কার্ডটি ভুয়া এবং তার মাধ্যমে যে কার্ড করা হয়েছে সবই ভুয়া।
আরেক ভুক্তভোগী নওশের আলীর স্ত্রী রাফিয়া বেগম এক চোখে দেখতে পান না। তিনি জানান, ২ হাজার ৫শ টাকায় সরকারি সুবিধা পাওয়ার আশায় প্রতিবন্ধী কার্ড নিয়েছেন। পরে তিনি উপজেলা থেকে জানতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
বাকি ভুক্তভোগীরাও ঘটনা তদন্ত করে প্রতারক আসলাম হোসেনের বিচার এবং টাকা ফেরত পেতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে আসলাম হোসেন বলেন, আমি সরাসরি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনি। প্রমাণ দিতে পারলে টাকা ফেরত দেব।
এ বিষয়ে লালপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোতালেব সরকার বলেন, ভুক্তভোগীদের কার্ড যাচাই-বাচাই করে দেখা গেছে তাদের কার্ড ভুয়া এবং ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই করে প্রকৃত প্রতিবন্ধীদের ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা সুলতানা বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র : যুগান্তর