রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৩৫ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর : রাজশাহীর তানোরে এক মুহুরী বা দলিল লেখকের বিরুদ্ধে জায়গা জমি দখলের অভিযোগটি পাওয়া গেছে। ওই জায়গার মালিক মাহফুজ গেলো বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ন্যায় বিচারের আসায় তানোর সহকারী কমিশনার ভূমি ববরাবর নিকট লিখিত অভিযোগ দিলেও রহস্যজনক কারণে কোন ব্যবস্থা গ্রহন বা তদন্ত পর্যন্ত করেননি এসিল্যান্ড। তানোর পৌর সদর হিন্দুপাড়া গ্রামে ঘটে রয়েছে এমন দখলবাজির ঘটনাটি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ভূমি অফিস থেকে মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে হলেও অভিযোগের এক বছরেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ভুক্তভোগী মাহফুজ চরম হতাশ হয়ে পড়েছেন। কারণ একবারও তদন্ত বা নোটিশ পর্যন্ত করা হয়নি। এতে করে সহকারী কমিশনার ভূমি ও সংশ্লিষ্টদের এমন ভূমিকা নিয়ে পৌর সদর জুড়েই উঠেছে সমালোচনা। সেই সাথে কর্তাদের বিরুদ্ধে নানা প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। কেন এক বছরেও নেয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা। তাহলে অনৈতিক কোন সুবিধা নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে। নাকি অভিযোগ গায়েব করে ফেলা হয়েছে। নাকি ভুক্তভোগী কোন দালাল মারফত আসতে পারেননি এজন্যইও কি ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের।
অভিযোগে প্রকাশ, তানোর মৌজার অন্তর্গত আরএস ১২ নম্বর খতিয়ানে ১৬০৩ নম্বর আরএস দাগে ৩ শতাংশ ভিটা জমি রয়েছে। জমিটি ২৪/৮৬ ভিপি কেস নম্বর মূলে হিন্দুপাড়া গ্রামের রায় কষ্ট শীল ভোগ দখল করেন। তিনি মারা গেলে পুত্র নিতাই চন্দ্র শীল, গৌর চন্দ্র শীল ও নিমাই চন্দ্র শীল ভোগ দখল করতেন। কিন্তু সেই জমি প্রতারণার মাধ্যমে ভূমি গ্রাসী উত্তম মুহুরী। এই জমিগুলো পূর্বেই দখল করে পাকা দালান দ্বিতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন। যা সম্পূর্ণ রুপে আইন বিরোধী। এছাড়াও তারপার্শেই মাহফুজ নামের আরেক ব্যক্তির সাড়ে ১৪ শতাংশ ভিটে দামি জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে উত্তম কর্মকার মুহুরী।
মাহফুজ স্থানীয়দের বরাদ দিয়ে জানান, উত্তমের পরিবার অতীতে চোলাইমদ বিক্রি করে সংসার পরিচালনা করত। কিন্তু বিগত বিএনপি জোট সরকারের সময় উত্তম সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখকের সনদ পেয়েই ভাগ্য বদল হয়ে যায়। হঠ্যাৎ আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যান। সখ্যতা গড়ে উঠে ভূমি দপ্তরের সাথে। প্রতিবেশিদের ভিটে জমি দখল করে অট্রালিকা বানানই তার কাজ। রয়েছে তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারির মত ঘটনাও। খেটেছেন জেলও। শুধু তাই নয়, জালিয়াতি ভাবে জমি রেজিস্টি করার সময় ধরা খেলে সনদ পর্যন্ত সাসপেন্ড করে রাখা হয়েছে।
এবিষয়ে উত্তম মুহুরী বলেন, ৫৮ শতাংশ জায়গাটি পুরোটায় ভিপি। কিন্তু মাহফুজ কার কাছ থেকে বিনিময় দলিল মুলে ৩২ বছর পর খারিজ পায়। এজন্যই তিনি জমি দাবি করছেন। মাহফুজের সাড়ে ১৪ শতাংশ জায়গা ব্যক্তিগত সেটা নাকি দখলে নিয়েছেন জানতে চাইলে উত্তম বলেন, ৫৮ শতাংশ জায়গাটি আমরা লীজ নিয়েছি। ভিপি সম্পত্তি ক্রয় বিক্রয়ের অধিকার নেই। তাই তিনি ওই সম্পত্তি দখলে রেখেছেন।
ভুক্তভোগী মাহফুজ বলেন, আরএস ১৬০৩ ও ১৬০২ দাগে মোট জমি রয়েছে ৫৮ শতাংশ। এরমধ্যে কিছু ভিপি এবং ব্যক্তি মালিকানা। এই জমি নিয়ে উত্তম আদালতে মামলা দায়ের করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। যার মামলা নম্বর ৬০২পি/২০২৩ (তানোর)। ধারা ১৪৪ ফৌজদারি কার্যবিধি প্রসেস নং ২১২৬। তারিখ ৯/৮/২০২৩ খ্রিতাব্দ। বিজ্ঞ আদালত আদেশ আমার পক্ষে দেন। আমি সাড়ে ১৪ শতাংশ জমি গোলাম রাব্বানীর কাছ থেকে কিনে খাজনা খারিজ করেছি। কিন্তু উত্তম আগে কয়েকজন সংখ্যালঘুর জমি দখল করে পাকা বাড়ি নির্মাণ করেছেন ভিপি সম্পত্তিতে, যা সম্পূর্ণ রুপে আইন বিরোধী। আমি বিগত ১ বছর আগে সহকারী কমিশনার ভূমির নিকট অভিযোগ করলেও এ যাবৎ কোন তদন্ত পর্যন্ত করেন নি এসিল্যান্ড। বর্তমানে তার নামের ফাইলটি উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির কাম ক্যাশিয়ার মো. সাদিল ইসলামের কুপরামর্শে কম্পিউটার অপারেটর আরিফুর রহমান গায়েব করে রেখেছেন বলে জানান মাহফুজ। তবে, এমন ফাইল সম্পর্কে আরিফুর রহমান অবগত নন বলে এড়িয়ে গেছেন।
এব্যাপারে তানোর ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবিদা সিফাতের সরকারি মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি। রা/অ