রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:০৩ am
শাকিল হোসেন, নিয়ামতপুর (নওগাঁ) :
ধানের রাজধানী হিসেবে খ্যাত উত্তরের জনপদ নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুরে ভরা বর্ষাতেও বৃষ্টির দেখা নেই। বাংলা দিনপঞ্জির হিসেবে আষাঢ় বিদায় নিয়েছে চলছে শ্রাবণ মাস। খরায় আমনের ক্ষেতগুলো শুকিয়ে চৌচির হচ্ছে। আমন চাষ নিয়ে বিপাকে রয়েছে চাষিরা। এখন আমন ক্ষেতে সেচের পানিই একমাত্র ভরসা। পানির অভাবে অনেক কৃষক সেচ দিয়ে চারা রোপণ করছেন। এতে তাঁদের বিঘাপ্রতি বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর নিয়ামতপুরে ৩০ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৭ হাজার ৮৩০হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে। উপজেলায় ৯ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষ হয়েছে।
কৃষকেরা বলছেন, জুলাই মাস আমন চাষের উপযুক্ত সময়। এখন বৃষ্টির দরকার, কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। গত এক মাসে নিয়ামতপুরে ভারী বৃষ্টি হয়নি। এই সময়ে কখনো টিপটিপ, কখনো একপশলা বৃষ্টি হলেও বর্ষানির্ভর আমন চাষের জন্য তা যথেষ্ট নয়। অনেকে গভীর নলকূপের সেচ ব্যবস্থায় জমি প্রস্তুত করেছেন।
উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে আমন ক্ষেতের একই চিত্র দেখা গেছে। এই প্রতিবেদকের সাথে কথা হলে কৃষক মোজাহার, নাজমুল, রানা, দুলাল বলেন, কখনো কখনো দুয়েক পশলা বৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু স্বাভাবিক বৃষ্টির দেখা মিলছে না। ভরা মৌসুমেও বৃষ্টি না হওয়ায় প্রচণ্ড তাপদহে কৃষকদের স্বপ্নের আমন ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। সার ও কীটনাশকের দাম বাড়ায় চাষিদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ। তারা আরোও বলেন, নিয়ামতপুরে গত তিন সপ্তাহে একপশলা বৃষ্টিও হয়নি। মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে আছে। এ জন্য সেচ দিয়ে মাটি ভেজাতে অনেক বেশি পানি লাগছে। বৃষ্টিপাত না হলে এবারে আমন চাষে উৎপাদন খরচ দ্বিগুণ বাড়বে। বাড়তি খরচ করে ধানের ন্যায্যমূল্য না পেলে তখন কৃষকের আরও মরণদশা হবে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ শামসুদ্দোহা বলেন, এখনও আমনের চারা রোপনের সময় আছে। তবে নিয়ামতপুরে সব মাঠেই সেচের ব্যবস্থা থাকায় কৃষকেরা সেচযন্ত্রের মাধ্যমে মাটি প্রস্তত করে চারা রোপন করছেন। কৃষি বিভাগ থেকে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হয় এবং চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
নিয়ামতপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুল হাসান বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় অনেকে গভীর নলকূপ দিয়ে সেচ ব্যবস্থায় আমন ধান রোপণ শুরু করেছে। যা এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশ অধিক জমিতে আমন ধানের চারা রোপন করা হয়েছে। তবে খরায় আমনের উৎপাদনে কোন প্রভাব পড়বে না বলে জানান তিনি। রা/অ