সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:০৭ am
ডেস্ক রির্পোট :
একজন চিকিৎসকের কাছ থেকে কিস্তিতে নেওয়া ঘুসের ১০ লাখ টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার হওয়া কর কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) রাজশাহী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আমির হোসাইন।
গত ২৪ জুলাই রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে আলোচিত মামলার চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগ মহিবুল ইসলাম ভুঁইয়া রাজশাহী কর অঞ্চলের বৈতনিক সার্কেল-১৩ এর উপ-কর কমিশনার ছিলেন। গত ৪ এপ্রিল একজন চিকিৎসকের কাছ থেকে নেওয়া ঘুসের ১০ লাখ টাকাসহ দুদক কর্মকর্তাদের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। এ নিয়ে দুদক তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে একটি মামলা করেন। পরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) গ্রেফতার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করেন।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, রাজশাহীর চিকিৎসক ফাতেমা সিদ্দিকা রাজশাহী কর অঞ্চলের একজন নিয়মিত করদাতা। তিনি সর্বশেষ গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ২০২২-২০২৩ করবর্ষের আয়কর বাবদ মোট ১১ লাখ ১৩ হাজার ৮৯৫ টাকা কর পরিশোধ করেন। আয়কর রিটার্ন দাখিলের কিছুদিন পরে কর কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া তাকে ডেকে পাঠান এবং ঘুস দাবি করেন। চাহিদা মোতাবেক ঘুস না দিলে তার আয়কর নথিটি আবার উন্মোচন করা হবে বলে হুমকি দেন।
কিন্তু এই চিকিৎসক প্রথমে ঘুস দিতে চাননি। ফলে কর কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম এই চিকিৎসকের ২০১৮-২০১৯, ২০১৯-২০২০, ২০২০-২০২১, ২০২১-২০২২ ও ২০২২-২০২৩ করবর্ষের আয়কর নথি পুনরায় উন্মোচন করে নোটিশ জারি করেন। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রাক যাচাই-বাছাই বা সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য না থাকলেও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই চিকিৎসকের বিগত ৫ বছরের আয়কর নথি উন্মোচন করেন করা হয়। কর কর্মকর্তা এই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মনগড়াভাবে আয়কর ফাঁকির অভিযোগ আনেন। এ কারণে ঘুস দিতে রাজি হন ডা. ফাতেমা সিদ্দিকা।
কর কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া তখন ডা. ফাতেমা সিদ্দিকার আয়কর নথিটি হালনাগাদ ও আয়কর অধ্যাদেশ-৯৩ ধারায় পুনরায় উন্মোচন মামলা নিষ্পত্তি করে দেবেন বলে মোট ৬০ লাখ টাকা ঘুস চান। এর মধ্যে প্রথম কিস্তি বাবদ নিজের অফিসে ঘুসের ১০ লাখ টাকাসহ দুদকের অভিযানে তিনি গ্রেফতার হন।
তদন্ত কর্মকর্তা মো. আমির হোসাইন জানান, মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১০ লাখ টাকা ঘুস গ্রহণের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। কমিশন তদন্ত প্রতিবেদনে সন্তোষ প্রকাশ করে অভিযোগপত্র দাখিলের অনুমোদন প্রদান করেন।
জানা গেছে, গ্রেফতার হওয়া উপ-কর কমিশনার মহিবুল ইসলাম ভূঁইয়া রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। চার্জশিট দাখিলের ফলে শিগগির মামলার বিচার শুরু হবে। রা/অ