সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:০৬ am
ডেস্ক রির্পোট :
মেধাবী শিক্ষার্থী আঁখি পড়াশোনা করে দিনাজপুর বধির ইনস্টিটিউটের অষ্টম শ্রেণিতে। কারণ আঁখি শারীরিকভাবে বাক ও শ্রবণপ্রতিবন্ধী। পাশাপাশি ছবি আঁকা তার শখ। তাই সে এঁকে ফেললো এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের ছবি। আর তার কোমল হাতে আঁকা সেই ছবি স্থান পেয়েছে দেশের সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডে।
শনিবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় সেই ঈদ শুভেচ্ছা কার্ড নিয়ে শহরের পশ্চিম বালুয়াডাঙ্গা নতুন পাড়া এলাকায় আঁখির বাড়িতে হাজির হন সংসদ সদস্য, জাতীয় সংসদের হুইপ এবং গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের মূল পরিকল্পনাকারী ও ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবালুর রহিম। তিনি প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা কার্ড শিল্পী আঁখির হাতে তুলে দেন। পরে ইকবালুর রহিম আঁখিকে অভিনন্দন জানান। তিনি আঁখির পড়ালেখার জন্য পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করেন। এ সময় আঁখির বাবা আনারুল ইসলাম ও মা শাহানাজ পারভিন উপস্থিত ছিলেন।
পারিবারিকভাবে জানা যায়, পড়ালেখায় আঁখি অত্যন্ত মেধাবী। তবে সে কানে শোনে না, কথা বলতে পারে না। বেশ কয়েক মাস আগে সে গোর-এ শহীদ ঈদগাহ ময়দানের ঈদ জামাতের একটি ছবি আঁকে। সেই ছবিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে পড়ে। এবার দেশবাসীকে দেওয়া পবিত্র ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা কার্ডে আঁখির আঁকা ছবিটি অন্তর্ভুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে শারীরিক প্রতিবন্ধী সন্তানের আঁকা ছবি প্রধানমন্ত্রীর নজরে পড়া ও তার ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডে স্থান পাওয়ায় তার বাবা-মা বেজায় খুশি। তাই তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তাদের মেয়ের মেধাকে সারা দেশে পরিচিত করিয়ে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ঋণী থাকার কথাও জানান তারা।
আঁখির বাবা আনারুল ইসলাম বলেন, আঁখি কথা বলতে পারে না, শুনতেও পায় না। চিকিৎসকরা বলেছেন আঁখিকে এভাবেই জীবন অতিবাহিত করতে হবে। তবে সে মেধাবী ছাত্রী। আমার মেয়ের আঁকা ছবি প্রধানমন্ত্রীর ঈদ কার্ডে স্থান পেয়েছে, এটা আমার জন্য অনেক বড় পাওয়া। আমি একজন বই বিক্রেতা, দিন এনে দিন খাই। আমার জন্য এর চেয়ে বড় সুসংবাদ আর কী হতে পারে।
জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, আঁখির এই প্রতিভায় দিনাজপুরবাসী গর্বিত। শারীরিক প্রতিবন্ধীরা যে সমাজের বোঝা নয়, বরং সম্পদ, তা আঁখি প্রমাণ করেছে। তার এই প্রতিভা একদিন দেশের সুনাম বয়ে আনবে। আর এই ছবি শুভেচ্ছা কার্ডে সংযুক্ত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
উল্লেখ্য, উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠ দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দান। এর আয়তন প্রায় ২২ একর। ঈদগাহ মিনারের মূল অংশ তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। ৫২টি গম্বুজ ২০ ফুট উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে। গেট দুটির উচ্চতা ৩০ ফুট। মেহরাবের উচ্চতা ৫৫ ফুট। ৫২ গম্বুজ-বিশিষ্ট এই ঈদগাহে রয়েছে দুটি মিনার, প্রতিটির উচ্চতা ৬০ ফুট। মাঝের গেট দুটি ৪৭ ফুট করে চওড়া। এতে খিলান আছে ৩২টি।
গত ঈদুল ফিতরের জামাতে এখানে ৬ লক্ষাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করেন বলে আয়োজক ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এবারও এ পরিমাণ মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করছেন তারা। এবার মুসল্লিদের সেখানে যাতায়াতের জন্য দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সূত্র : বাংলাট্রিবিউন