রবিবর, ১০ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:০১ am
পশ্চিমা বিশ্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলসমুহের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে টানা তৃতীয়বারের মত তুরুস্কের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব গ্রহন করেছেন একবিংশ শতাব্দির আলোচিত রাজনীতিবীদ রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। তাঁর বিজয়ের পর তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় পার্লামেন্টে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। শপথে এরদোয়ান বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে মহান তুর্কি জাঁতি ও এর ইতিহাসের সামনে আমার সম্মান ও সততার, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষার শপথ করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি সংবিধান, আইনের শাসন, গণতন্ত্র, আতাতুর্কের নীতি ও সংস্কার এবং ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্রের নীতি মেনে চলব।’
গত ২৮ মে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটে কেমাল কিলিচদারওলুকে পরাজিত করেন। এরদোয়ান ৫২ দশমিক ২ শতাংশ ভোট পান। নির্বাচনের আগে এরদোয়ানের ক্ষমতায় ফেরা নিয়ে যেসব জরিপ হয়েছিল, সেগুলোকে ভুল প্রমাণ করেছেন তিনি। দেশটিতে ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে এরদোয়ানের সমর্থন কমেছে বলে বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছিল। কিন্তু টানা তৃতীয়বারের মত প্রেসিডেন্ট হিসেবে তুরুস্কের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব গ্রহন করা এরদোয়ানের জন্য সহজ ছিলনা। দেশে-বিদেশে তাঁর বিরুদ্ধে হয়েছে ষড়যন্ত্র ও বিরোধিতা। বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের চরম বিরোধীতার সাথে দেশের ভিতরের সকল রাজনৈতিক দল তাঁর বিরুদ্ধে একজোট হয়েছিল। কিন্তু সবকিছুকে মোকাবেলা করে এরদোয়ান আবারো তুরস্কের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছেন। গঠন করেছেন মন্ত্রীসভা।
কিন্তু এরদোয়ানের এ বিজয় শুধু তাঁর একার বিজয় নয়। এ বিজয় দেশে দেশে উন্নয়নের রূপকার অর্থনীতির রাজনীতিতে বিশ্বাসী রাষ্ট্রনায়কদের বিজয়। তুরস্কের নির্বাচন পশ্চিমা শাসকদের বিরুদ্ধে জনগণের ঐক্যের এক বার্তা। এ জয়ের পর এরদোয়ান বলেছেন, এ বিজয় তুরস্কের গৌরব এবং আত্মমর্যাদার বিজয়।
রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান নির্বাচনে জেতার পরপরই তাঁকে দ্রুত বিশ্বনেতাদের অনেকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তবে এই বিশ্বনেতাদের বাইরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ছিলেন আলাদা। তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে উজ্জীবিত করতে ভোটের আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণার আগেই এরদোয়ানকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ইউক্রেনে আগ্রাসনের পর ক্রেমলিনকে একঘরে করে দিতে এরদোয়ানের অস্বীকৃতি জানায়। এমনকি ন্যাটোতে তুরস্কের মিত্ররা রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পরও এরদোয়ান সেই পথ ধরেননি। ফলে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে তুরস্ক ও রাশিয়ার মধ্যে বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘মেকিং তুর্কি গ্রেট অ্যাগেইন’ এরদোয়ানের বর্তমান স্লোগান। এই স্লোগানকে সামনে রেখেই তিনি তুরস্কের পররাষ্ট্রনীতিকে আরও বেশি স্বতন্ত্র করার উদ্যোগ নিয়েছেন। তুরস্কের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে সবচেয়ে বড় ইস্যু ছিল অর্থনীতি। বিশেষ করে নাগালের বাইরে চলে যাওয়া মূল্যস্ফীতি। জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকটে ক্রয়ক্ষমতা কমে যায় দেশটির নাগরিকদের। এপ্রিল মাসে তুরস্কের বার্ষিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়ায় ৪০ শতাংশে, যা গত বছর ৮৫ শতাংশে গিয়ে ঠেকে বলে সরকারিভাবেই বলা হয়। এই মূল্যস্ফীতি ঠেকানোকে এরদোয়ানের বড় চ্যালেঞ্জ মনে করা হচ্ছে। তুরস্কের ইতিহাসে এবারই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ায়। নির্বাচন এবং ভোটের ফলাফলের এই চিত্র তুরস্কের সমাজে বিদ্যমান বিভাজনের দৃশ্যপট তুলে ধরছে।
বাংলাদেশে আছেন একজন শেখ হাসিনা। টানা তৃতীয়বার রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর নেতৃত্বে বদলে গেছে বাংলাদেশ। ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে শেখ হাসিনা বিশ্বে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলার আপামর জনগনের ভাগ্য বদলে দেওয়ার জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁর লক্ষ্য জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া। এই সোনার বাংলার সোনার মানুষেরা কারও মুখাপেক্ষী না হয়ে দেশকে স্বনির্ভর হিসেবে গড়ে তুলবে এই প্রত্যয় শেখ হাসিনার। তিনি বলেন, ‘আমরা নিজের পায়ে চলব। নিজের দেশকে আমরা গড়ে তুলব। কারও মুখাপেক্ষ হয়ে না।’
সরকারের টানা মেয়াদে স্থিতিশীল পরিবেশ থাকায় বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। স্থিতিশীল পরিবেশই বাংলাদেশের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় আছে বলেই রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে চরম দারিদ্র্য বলে বাংলাদেশে কিছু থাকবে না। ২০০৮ থেকে ২০২৩, এই ১৪ বছরে বাংলাদেশে স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজমান। ২০০৬ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ। আজকে তা কমে ১৮ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। চরম দারিদ্র্যের হার ছিল ২৫ দশমিক ৯ শতাংশ, আজকে তা ৫ দশমিক ৬শতাংশ হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রে জিডিপি আকার ২০০৬ সালে মাত্র ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২ সালে তা দাঁড়িয়েছে ৪৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মাথাপিছু আয় ২০০৬ সালে ছিল ৫৪৩ মার্কিন ডলার। ২০২২ সালে তা বৃদ্ধি পেয়েছে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে। মানুষের গড় আয়ু ৭৩ বছরে উন্নীত হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০২১ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। এই মর্যাদা কার্যকর হবে ২০২৬ সালে। এ পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। একইসঙ্গে জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি, ২০৩০ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ অনেক অগ্রগতি হয়েছে। সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
তুরুস্কের এরদোয়ানের মতই শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়ে ঈর্ষনীয় পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। শেখ হাসিনার প্রধান ও একমাত্র লক্ষ্য দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি ও উন্নয়ন। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন তিনি। দেশের প্রতিটি প্রান্তে ছুটে গিয়েছেন তিনি। পর্যাপ্ত রাস্তা নেই, বিদ্যুৎ নেই, এমনকি স্থানীয় পর্যায়ে যাতায়াতের জন্য সহজ কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থাও নেই। দারিদ্র্যপীড়িত বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলেই অজস্র মানুষের মাথাগোঁজার ঠাঁই নেই, অধিকাংশ মানুষের জন্য নেই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য-শিক্ষার সুবিধা। দেশের গণমানুষের এই মৌলিক সমস্যাগুলোকে একান্তই নিজের সমস্যা মনে করে, তা সমাধানের জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা করেন গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা। একারণেই স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দল আওয়ামী লীগকে তৃণমূল পর্যায় থেকে নতুন করে গোছাতে শুরু করেন তিনি। দলকে পুনর্গঠিত করার মাধ্যমে উগ্রবাদী ও স্বৈরাচারের হিংস্র থাবায় আক্রান্ত দেশকে পুনর্গঠনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ছক আঁকেন। যার ফলাফল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাত ধরে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে গেছে এক নতুন বাংলাদেশ। বৈশ্বিক পরিস্থিতির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে বেড়ে ওঠার সুযোগ পাঁচ্ছে আজকের ডিজিটাল প্রজন্ম, যাদের হাত ধরেই স্মার্ট রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বীর বাঙালির প্রিয় বাংলাদেশ। একবিংশ শতাব্দির এই সময়ে বিশ্বের যে কয়জন নেতা নেতৃত্বের আলো ছড়াচ্ছেন তাদের মধ্যে শেখ হাসিনা অন্যতম।
২০ বছরে তুরস্কের অর্থনীতি তিনি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন এরদোয়ান। তুরুস্কের জনগণের জীবনমানের উন্নতি হয়েছে ব্যাপকভাবে। উন্নয়নের ছোঁয়া পৌঁছে দিয়েছেন দেশের সব অঞ্চলে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানা ১৪ বছর রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকে বাংলাদেশকেও নিয়ে গিয়েছেন অনন্য উচ্চতায়। বাংলাদেশ আজ বিশে^ রোল মডেল। আশ্রয়ণ, কমিউনিটি ক্লিনিক; আমার বাড়ি আমার খামারের মতো সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিগুলো দেশ-বিদেশে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পের মতো মেগা প্রকল্পের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশকে বদলে দিয়েছেন। শেখ হাসিনাকে বলা হয় আধুনিক, উন্নয়নের মহাসড়কে দ্রুত ধাবমান একটি সম্ভাবনাময় রাষ্ট্রের নির্মাতা। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার মাধ্যমে তিনি স্বনির্ভর বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণ করেছেন। বিশ্বরাজনীতিতেও শেখ হাসিনা উজ্জ্বল। তার বিশ্ব শান্তির মডেল এবং ‘কমিউনিটি ক্লিনিক; দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ জাতিসংঘে সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়। তিনিই একমাত্র সরকার প্রধান যার দুটি উদ্ভাবনী দর্শন জাতিসংঘে গৃহীত হয়েছে। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রেও নতজানু না থেকে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে ভারত ও চীনের সঙ্গে সমান্তরাল বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক করে, তিনি কূটনৈতিক বিচক্ষণতার প্রমাণ রেখেছেন। ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে মানবিক কারণে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে শেখ হাসিনা ‘বিশ্বমানবতার’ প্রতীক ‘বিশ্বনেতা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। মার্কিন চাপে নতজানু না হওয়ার কারণে শেখ হাসিনা বিশ্বে আলোচিত। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একক নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।
এতকিছুর পরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নির্বাচনী বছরে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংকট, খেলাপি ঋণ, অর্থ পাঁচার, বিদ্যুৎ সংকট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এরদোয়ানের মতোই অর্থনৈতিক সংকটের বোঝা মাথায় নিয়েই তাকেও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচনী লড়াই করতে হবে। এরদোয়ানের বিরুদ্ধে তুরস্কের বিরোধী দলগুলো জোট বেঁধেছিল। বাংলাদেশেও আগামী নির্বাচন ঘিরে বিরোধী জোট ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। তারা নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি করছে। যে কোনো মূল্যে শেখ হাসিনাকে হটাতে চায় বিরোধীরা। এমনকি তারা ঘোষণা দিয়েছে, নির্বাচনের পর জয়ী হলে জাতীয় সরকার গঠন করবে।
তুরস্কের নির্বাচনে বিরোধী জোটকে নানাভাবেই সমর্থন দিয়েছিল পশ্চিমাবিশ্ব। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছিল তুরস্কে ক্ষমতার পটপরিবর্তন। বাংলাদেশের চিত্রটা প্রায় একইরকম। আওয়ামী লীগ সরকার এবং শেখ হাসিনাকে সব ধরনের চাপ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা, ভোটে কারচুপি হলে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। ভিসা নীতিতে বলা হয়েছে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন না করলে, ভোটে কারচুপি করলে; ভোট প্রদানে বাধা প্রদান করা হলে জড়িতদের যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেবে না। শুধু যে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে অন্তরায় সৃষ্টিকারী ব্যক্তিই ভিসাবঞ্চিত হবেন এমন না, তার পরিবারের সদস্যদেরও ভিসা দেওয়া হবে না। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এই ভিসা নীতি নিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পাল্টাপাল্টি তর্কযুদ্ধ চলছে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের এই ভিসা নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কে আমাদের ভিসা দেবে না, কে আমাদের স্যাংশন (নিষেধাজ্ঞা) দেবে ওনিয়ে মাথাব্যথা করে লাভ নাই, বলেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ২০ ঘন্টা প্লেনে জার্নি করে আটলান্টিক পার হয়ে আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু যায় আসে না। পৃথিবীতে আরও অনেক মহাসাগর আছে, অনেক মহাদেশ আছে; সেই মহাদেশের সঙ্গে আমরা যাতায়াত করব, বন্ধুত্ব করব; আমাদের অর্থনীতি আরও মজবুত হবে, উন্নত হবে, আরও চাঙ্গা হবে। বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গল কোথায়, কল্যাণ কোথায়, সেটা আমরা খুব ভালো করে জানি। সেটা মাথায় রেখেই আমরা কাজ করে দেশকে উন্নয়নশীল দেশ করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হবে।
একটি দেশের জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস। এরদোয়ান জনগণের ওপর নির্ভর করেছেন। জনগণই তার আসল শক্তি। একাই তিনি স্রােতের বিপরীতে লড়েছেন। শেখ হাসিনার ক্ষমতার উৎসও জনগন। জনগনের শক্তিতে ভর করেই তিনি একাই লড়াই করছেন। চেনা-অচেনা, দেশি-বিদেশি, ভিতরের বাইরের শুত্রুর বিরুদ্ধে লড়ছেন তিনি। বাংলাদেশের জনগণের আছে অফুরন্ত প্রাণশক্তি। তারা হার মানে না। পরাভব মানে না। বাংলাদেশে এখন লড়াইটা গণতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার লড়াই। সংবিধান রক্ষার ও সংবিধান সমুন্নত রাখার লড়াই। এ লড়াইয়ে শেখ হাসিনাকে জিততেই হবে। এই লড়াই এ এরদোয়ান জিতেছেন। ইনশাআল্লাহ শেখ হাসিনা ও জিতবেন।
‘দ্যা ইকোনমিস্ট’ পূর্বাভাস দিয়ে বলেছে, ‘শেখ হাসিনা জিতবেন। কিন্তু এ জয় সহজসাধ্য হবেনা’। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক অর্থ বিষয়ক সংবাদ সংস্থা ব্লুমবার্গ একটি নিবন্ধে বাংলাদেশে আগামী সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার চতুর্থ মেয়াদে নির্বাচিত হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে। ব্লুমবার্গ লিখেছে, ‘শেখ হাসিনা টানা চতুর্থ মেয়াদে জয়ী হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তার সাফল্যের কারণেই এটা ব্যাপকভাবে প্রত্যাশিত।’
-শিব্বীর আহমেদ ঢাকা, বাংলাদেশ।(শিব্বীর আহমেদ গেরিলা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক, ও আইটি বিশেষজ্ঞ)।