সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:৫৩ am
আব্দুস সবুর, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে প্রথমবারের মত উপজেলা পর্যায়ে পন্য বিপনন মনিটরিং কমিটির সাথে মত বিনিময় সভা করেছেন বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড টারিফ কমিশন, বানিজ্য মন্ত্রনালয়ের, সদস্য ও যুগ্ন সচিব ওয়াদুদ হোসেন। রবিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ হলরুমে এমতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সহকারী কমিশনার ভূমি আদিবা সিফাতের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন তানোর প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইদ সাজু তিনি বলেন, বাজার মনিটরিংয়ের সদস্য কারা এবং তাদের কাজ কি, তারা কেন বাজার মনিটরিং করেন না। মনিটরিং না করার জন্যই ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমত সিন্ডিকেট করে ভোক্তার পকেট কাটছে।
রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারন সম্পদক মিজানুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, এখানে বাজার মনিটরিং বলতে কিছুই নেই। বিশেষ করে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পায়না। প্রতিটি পন্য ইচ্ছেমত দাম বাড়ায় ও কমায়। নিয়োমিত বাজার মনিটরিং থাকলে এসব দুর হবে। মডেল প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সবুর তার বক্তব্যে বলেন, গত বুধবার তালন্দ হাটে ঘন্টায় ঘন্টায় ৫০-৭০ টাকা করে ধানের দাম কমছে। আবার গুদামে কৃষকরা ধান দিতে এলে হয়রানির শেষ থাকেনা। প্রতি মনে ৭ টাকা করে খাজনা দিতে হয়। আমি বিষয়গুলো বিভাগীয় বিপনন কর্মকর্তা ও জেলা কর্মকর্তা কে অবহিত করা হলে তারা সাব জানিয়ে দেন জনবল সংকট এজন্য তারা অভিযান পরিচালনা করতে পারেন না। হাট ইজারাদাররা ইচ্ছেমত খাজনার নামে চাঁদা আদায় করেন, ভোক্তা অধিকার বা বিপনন বিভাগ কিংবা বাজার মনিটরিং কাউকে দেখা যায় না। সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রতিটি পণ্যের দাম বেশি নেয় ব্যবসায়ীরা এবং খাদ্য গুদামে বাহিরের মোটা ধান ও টিআর কাবিখা এবং ওএমএসের চাল সংগ্রহ করা হয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ তার বক্তব্যে বলেন আমরা তো দাম নির্ধারন করতে পারিনা, উৎপাদন বৃদ্ধি বিভিন্ন ফসল উৎপাদনে ট্রেনিং মাঠ দিবস করে থাকি। বাজার মনিটরিংয়ের সদস্য সেটা অজানা ছিল।
থানার ওসি কামরুজ্জমান মিয়া বলেন, বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্য এটা আমার অজানা ছিল। মনিটরিংয়ের জন্য পুলিশ প্রশাসন সর্বাত্মক ভূমিকা পালন করবে ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না বলেন, খাদ্য গুদামে ভয়াবহ সিন্ডিকেট চলছে, বাজার মনিটরিংয়ের কোন ব্যবস্থা নেই, ইচ্ছেমত সিন্ডিকেট করে ভোক্তাকে ঠকানো হচ্ছে। যার ফলে সরকারের বদনাম হচ্ছে। প্রতিনিয়ত সাধারন মানুষের এমন অভিযোগে নাজেহাল হতে হয়। আমি অনুরোধ করব মাসিক সভার পর বাজার মনিটরিং নিয়ে প্রতি মাসে পর্যালোচনা করলে ভোক্তারা রক্ষা পাবেন।
প্রধান অতিথি যুগ্ন সচিব তার বক্তব্যে বলেন, নিয়োমিত বাজার মনিটর করতে হবে। বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট হলেও সরকারের একান্ত প্রচেষ্টা ও কৃষকদের উৎপাদনের কারনে বাংলাদেশ অনেক উন্নয়নশীল দেশের চেয়ে ভালো আছে। পন্য আমদানি করতে হলে এলসি খুলতে হয়, আগে টাকা কিংবা বাকিতেও এলসি খুলে আমদানি হয়েছে। কিন্তু এখন টাকা দিয়ে এলসি খুলতে পারছেন না, সরাসরি ডলার দিতে হচ্ছে। এজন্যই সিন্ডিকেট ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। যারা এলসি খুলে তেল গম সহ বিভিন্ন পন্য আমদানি করেন তারা বেপরোয়া সিন্ডিকেট শুরু করেছিল। কিন্ত সরকারের প্রচুর চাপে অনেক নিয়ন্ত্রণ আছে। সরকার যদি চাপে না রাখত তাহলে যে দামে সোয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে তার দ্বিগুন দামে কিনতে হত।
আপনারা তৃনমূল পর্যায়ে নিয়োমিত বাজার মনিটর করেন এর সুবিধা অবশ্যই ভোক্তারা পাবে। বাজার মনিটরিং আইন ভালো ভাবে জানবেন, সিন্ডিকেট ফড়িয়া, মজুদকারি ও মোনাফালোভী, খাজনার নামে যারাই চাঁদাবাজি করবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিবেন দেখবেন অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। কোন পন্যের কত বাজার মূল্য সেটা নিয়োমিত রিপোর্ট করতে হবে। তাহলে ভোক্তারা অসাধু ব্যবসায়ীদের কালো থাবা থেকে রক্ষা পাবে। এসময় অতিরিক্ত খাদ্য কর্মকর্তা নুর নবী, মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল হোসেন, সরনজাই ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক, চান্দুড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মজিবর রহমান, তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু, বাধাইড় ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, ওসিএলএসডি ওহেদুজ্জামান, গোল্লাপাড়া বাজার বনিক সমিতির সভাপতি সারোয়ার হোসেন, সম্পাদক রাকিবুল হাসান পাপুল সরকার,
তানোর প্রেসক্লাবের সাধারই সম্পাদক টিপু সুলতান, মামুন, মডেল প্রেসক্লাবের সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি, সুজনসহ পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। রা/অ