সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:০১ pm
সাইদ সাজু : রাজশাহীর তানোর বিনোদন কেন্দ্রের অভাব মেটাচ্ছে বিল কুমারী বিলের উপর নির্মিত সেতু এবং বাঁধের ধারে নির্মান করা এমপি আয়েন উদ্দীন পুকুর ও বাগান বাড়ি।
তানোর-মোহনপুর সীমন্ত ঘেষা বিল কুমারী বিলের বুক চিরে তৈরি করা বাঁধ এবং তানোর গোল্লাপাড়া বাজার থেকে মোহনপুর উপজেলার সইপাড়া পর্যন্ত সড়কের বিল কুমারী মধ্যের ৪রাস্তার মোড়।
প্রতিদন শত শত মানুষ এখানে নির্মল হাওয়ায় প্রশান্তির জন্য আসলেও বিশেষ দিনগুলোতে এই সেতুকে ঘিরে হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমে মিলন মেলায় পরিনত হয।
শনিবার ঈদের দিন বিনোদন প্রেমিদের উপচে পড়া ভীড় সামলাতে গোল্লাপাড়া বাজার মোড়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি কামরুজ্জামান মিয়াকে সংগীয় ফোর্সসহ দেখা গেছে দর্শনার্থীদের সামলাতে।
অপর দিকে মোহনপুর থানা পুলিশকে দেখা গেছে মোহনপুর সীমানার বাঁধের উপর দর্শনার্থীদের ভীড় সামলাতে।শনিবার ঈদের দিনে বিকাল থেকে শুরু করে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে পর্যন্ত ছিলো বিনোদন প্রেমিদের উপচে পড়া ভীড় ছিলো।
ঈদের দিন সকালের দিকে আকাশ একটু মেঘলা থাকলেও দুপুরের দিকে ছিলো প্রচন্ড রোদ। বিকাল খরোতাপ কিছুটা কম থাকায় বিনোদন প্রেমিদের ভিড় ছিলো উপচে পড়া।
প্রকৃতির এ খামখেয়ালীকে সঙ্গী করে রোববার বিকাল না হতেই মানুষ ছুটে এসেছেন রাজশাহীর তানোর পৌরশহরের শিবনদীর বিলকুমারির সেতুতে। সন্ধ্যায় যা জনস্রোতে রূপ নেয়। সোমবার বিকালে আকাশ মেঘলা ছিলো সন্ধ্যার বৃষ্টি নামে।
এর পর থেকে মেঘলা আকাশে নির্মল আবহাওয়ায় মঙ্গলবার তরুণ তরুণী, শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সব বয়সের মানুষের মিলন মেলার কেন্দ্র পরিণত হয়েছে বিলকুমারি সেতু এলাকা। কেউবা তুলছেন সেলফি, কেউবা নিজ ও প্রিয়জনের ছবি ক্যামেরাবন্দি করছেন স্মৃতির পাতায়।
প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদের ছুটিতে দর্শনার্থীদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিলকুমারি সেতু। ঈদের চতুর্থ দিন বৃষ্টি না থাকায় এবং নির্মল পরিবেশে এখানে বেশি মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
যানজট ও কোলাহলহীন ঘুরে বাড়ানোর মাঝে অনেকেই খুঁজে পেয়েছেন নির্মল আনন্দ। সেতুর দুই পাড়ে বসে শিশুরা যেমন কাটাচ্ছে আনন্দময় সময়, বড়রাও অবসর সময়টা উপভোগ করছেন হাসি আর আড্ডায়।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে প্রায় ৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে শিব নদীর উপর নির্মিত এ সেতু ও প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৩ সালে প্রায় এক দশমিক ৪৫০ কিলোমিটার নির্মিত সংযোগ সড়ক এলাকা কার্যত এখন এ অঞ্চলের মানুষের পার্ক বা অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রের অভাব মেটাচ্ছে।
ঈদের দিন থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত এখানকার সেতু, নদীপাড়ে ও বাঁধের ব্লক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, পুরো এলাকায় যেন মানুষের ঢল নেমেছে। দুপুর গরিয়ে বিকেল হওয়ার সঙ্গেই বিনোদনপিয়াসী শত শত মানুষের পদচারণা ঘটে সেতুকে ঘিরে।
ফলে সব বয়সী মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে এটি। বিভিন্ন এলাকা থেকে সেতুতে ঘুরতে আসা আব্দুল আওয়াল ও রায়হান আলী বলেন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে বিলকুমারি সেতু ও নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছি।প্রতি ঈদেই এখানে আসি। যার ধারাবাহিকতায় এবারও এসেছি।
তারা বলেন, সেতুর উপর দাঁড়িয়ে নির্মল বাতাস ও নদীর অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার মতো এ রকম জায়গা উপজেলায় আর নেই। সেতু সংলগ্ন গোল্লাপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী সারোয়ার জাহান বলেন, সেতুর উপরে ও নিচে ভ্রমণ পিয়াসীদের উপচেপড়া ভিড়।
তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোর এমনকি বৃদ্ধরাও একটু মুক্ত পরিবেশে বেড়াতে এসেছেন এখানে। তিনি বলেন, সারা বছর মানুষের আনাগোনা থাকলেও ঈদের ছুটিতে এখানে জনস্রোত নামে। ঈদের ছুটিতে ব্যস্ত নগরীর স্বস্তির জায়গা হিসেবে পরিচিত এ সেতুতে সন্ধ্যা হতে না হতে তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না।
একই কথা বলেন উপজেলার গোল্লাপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী মাইনুল ইসলাম। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের কাছে জায়গাটি দিন-দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিলকুমারি সেতুর পূর্বপাশে বাঁধের ধার ঘেঁষা অস্থায়ীভাবে বসা দোকানিরা এখানে প্রচুর মানুষের আগমনে খুশি।
তারা জানালেন, ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষের সমাগমে তাদের দোকানে বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। তাই সেতুর দুই ধারে নদীপাড় ভরাট করে দর্শনার্থীদের বসার জায়গা নির্মাণের দাবি জানান তারা।
এ সব বিষয় নিয়ে কথা হয় তানোর পৌরসভার মেয়র ইমরুল হকের সাথে। মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, পৌর এলাকায় শিশুদের জন্য পার্কসহ বিনোদন প্রেমীদের জন্য নানামুখী পরিকল্পনা রয়েছে তার।
তবে বরাদ্দ সংকট হওয়ায় তা বাস্তবায়নে কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবী করেন তিনি। তা/অ