শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৩২ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাগমারা : সিসি ক্যামেরায় দেখতে সমস্যা হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে রাজশাহীর বাগমারার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানার ভেতরে ১৫টি গাছ কেটে সাবাড় হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী এসব গাছ বিক্রি করে দিয়েছেন। গাছগুলো কেটে ফেলায় স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত বছর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন গোলাম রাব্বানী। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে থাকা ১৫টি গাছ বিক্রির উদ্যোগ নেন তিনি। এ জন্য স্থানীয় একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ৩১ জানুয়ারি প্রকাশ্যে নিলাম ডাকের মাধ্যমে ৯৭ হাজার টাকায় গাছগুলো সুমন নামের একজন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা হয়।
গত শুক্রবার গাছ কাটা শুরু হলে বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের নজরে আসে। এ সময় কয়েকজন প্রতিবাদ জানাতে এলেও স্বাস্থ্য কর্মকর্তার দেখা পাননি। তবে তাঁরা এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানাবেন এবং প্রয়োজনে কর্মসূচি দেবেন বলে জানান।
শনিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, ইউক্যালিপটাস, মেহগনি, শিশুসহ বিভিন্ন জাতের গাছ গোড়ার দিকে সাদা ও লাল রং করা। শ্রমিকেরা করাত দিয়ে গাছ কেটে ডালপালা আলাদা করে রাখছেন। কয়েকটি গাছ কেটে ফেলে রাখা হয়েছে। কাটা গাছের কাঠগুলো ব্যাটারিচালিত ভ্যানে করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
গাছ কাটার সঙ্গে জড়িত শ্রমিকেরা বলেন, তাজা গাছই কাটছেন তাঁরা। কোনো মরা গাছ কাটা হয়নি। এসব গাছ কেনা হয়েছে। দুদিন আগ থেকে তাঁরা গাছ কাটা শুরু করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, কেটে ফেলা গাছগুলো সৌন্দর্য বর্ধনসহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করছিল। ছায়াও দিত গাছগুলো। বেশ কয়েক বছর আগে পরিকল্পনা করেই গাছগুলো লাগানো হয়েছিল। গাছগুলো হুমকি বা ক্ষতির কোনো কিছু তাঁরা দেখছেন না। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা যে যুক্তি দেখিয়ে তাজা গাছগুলো বিক্রি করে দিলেন, তা হাস্যকর ছাড়া কিছুই নয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসকসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এই প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আগের কর্মকর্তারা প্রতিবছর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন করে গাছ লাগিয়েছেন। আর তিনি গাছ লাগানোর উদ্যোগ না নিয়ে কেটে ফেললেন, যা দুঃখজনক। গাছগুলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য ধরে রেখেছিল। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিজের খেয়ালখুশিমতো গাছগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন, যা তিনি পারেন না।
১৫টি গাছ কেটে বিক্রি করে দেওয়ার কথা স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী বলেন, গাছগুলো থাকায় সিসি ক্যামেরায় হাসপাতালের সব জায়গা ভালোভাবে দেখতে সমস্যা হচ্ছিল ও ভবনের ছাদের ক্ষতি হচ্ছিল। এ কারণে সেগুলো বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, গাছগুলো বিক্রির আয়োজন করতে যে খরচ হয়েছে, তা তিনি নিজ পকেট থেকে পরিশোধ করেছেন এবং গাছ বিক্রির টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া গাছ বিক্রির কারণ হিসেবে তিনি ইউক্যালিপটাসগাছকে পরিবেশের জন্য হুমকি বলেও মন্তব্য করেন। আজকের তানোর