সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৪৬ pm
ডেস্ক রির্পোট :
বাউফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সংঘর্ষে ওসিসহ আওয়ামী লীগের অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ ও বাউফল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার পালটাপালটি কর্মসূচির ঘোষণা করেন। এ কারণে কয়েক দিন থেকেই বাউফল পৌরশহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সম্ভাব্য পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পৌরশহরে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে আ স ম ফিরোজ ও আবদুল মোতালেব হাওলাদার বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকাল ১০টার পর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে দলীয় কার্যালয় জনতা ভবনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আসতে থাকেন। সাড়ে ১০টার দিকে বাউফল মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে আবদুল মোতালেবের নেতৃত্বে একটি মিছিল জনতা ভবনের দিকে রওয়ানা দেয়। মিছিলটি উপজেলা পরিষদের সামনে আসামাত্র পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশ সহিংসতা এড়াতে আবদুল মোতালেবকে দলীয় কার্যালয় জনতা ভবনে যেতে নিষেধ করে।
বিষয়টি নিয়ে কিছুক্ষণ পুলিশের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা চলে। এরপর তার সমর্থকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল, লাঠিসোটা নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে তাদের ধাওয়া দেয়।
এ সময় দফায় দফায় পুলিশ ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ২০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে।
সংর্ঘষে ওসি আল মামুন, এসআই মনিরুজ্জামান, এসআই আবুল বাশার, এসআই হাসান, এসআই হুমায়ন, এএসআই শাহীন, কনস্টেবল রবিউল, কনস্টেবল ইফাত, আওয়ামী লীগ কর্মী রিপন মেম্বার, বেল্লাল, হাসান, পলাশ দাস, জলিল মুন্সি, রাজিব, জাহিদ, অমল চন্দ্র ও গৌতমসহ অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হন। একপর্যায়ে পুলিশ কিছুটা পিছু হটার পর উপজেলা চেয়ারম্যান ২-৩ জন কর্মী নিয়ে জনতা ভবনের দিকে রওয়ানা দেন। তখন ফিরোজের কয়েকজন সমর্থক আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পরে ফিরোজের নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতাকর্মী পৌরশহরে বিশাল মিছিল বের করেন। ঘটনার পর পৌরশহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
উপজেলা চেয়ারম্যানের সমর্থক বাউফল পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক অরবিন্দু বলেন, আমাদের নেতা আবদুল মোতালেব হাওলাদারের নেতৃত্বে একটি আনন্দ মিছিল আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জনতা ভবনের দিকে অগ্রসর হওয়ার সময় পুলিশ উপজেলা পরিষদের গেটের সামনে বাধা দেয়। এ সময় আ স ম ফিরোজ এমপির কয়েকশ নেতাকর্মী এসে আমাদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এতে আবদুল মোতালেব হাওলাদারসহ তার অনুসারীরা গুরুতর আহত হন। আহতদের বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে আ স ম ফিরোজ এমপি সমর্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া পান্নু কোনো প্রকার মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, আমরা চেয়েছিলাম শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সবাই বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী পালন করবে; কিন্তু হলো না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল আমিন বলেন, একাধিকবার উভয় গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা করেছি; কিন্তু অবশেষ যা হলো তা লজ্জাকর। সূত্র : যুগান্তর