মঙ্গবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:২১ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোরে এক কাউন্সিল নিজে বিয়ে করতে না পারলেও ২০ বছরে অন্তত ৮ হাজার ৪৯ জনের বিয়ে দিয়ে রেকর্ড সৃষ্টি করে মহাখুশি তিনি। এমন ব্যক্তির নাম তাছির মন্ডল। তিনি তানোর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও অত্র ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
এতো বিয়ে দেবার ব্যাপারে তিনি গর্ববোধ করে বলেন, গেলো ২০০২ সালের প্রথম দিকে শখের বসে বিয়ে দেয়ার কাজ শুরু করি। কিন্তু পরে বিভিন্ন এলাকার লোকজন আমার কাছে তাদের ছেলে মেয়েদের বিয়ের জন্য পাত্র-পাত্রীর খোঁজে আসতে শুরু করেন। এভাবেই শুরু আমার ঘটক হয়ে উঠা।
তিনি আরও বলেন, প্রথমে আমার নিজ এলাকা তানোরের ছেলে মেয়েদের বিয়ের ঘটকতালি করতাম। পরবর্তীতে রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার ছেলে মেয়েদের বিয়ের ঘটকতালি করা শুরু করি।
প্রথমে ২০০২ সাল থেকে আজ অবদি তিনি ঘটকতালি করে ৮ হাজার ৪৯ জনের বিয়ে দিয়েছেন বলে গর্ববোধ করেন তিনি। এরমধ্য প্রায় সাড়ে ৩০০ বিয়ে টিকেনি। আর সব দম্পতি ভালো আছেন, সুখে সংসার করছেন। এদের মধ্যে অনেকেই এখনো তার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন বলেও জানান তিনি।
সর্বশেষ বুধবার (৪ জানুয়ারী) তিনি ঘটকতালি করে নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ফেরিঘাট এলাকার জৈনক ব্যক্তির কন্যার সাথে মোহনপুর উপজেলার পাকুয়া এলাকার জৈনক ব্যক্তির পুত্রের বিয়ে দিয়েছেন। এই ঘটকতালি করার সুবাদেই এলাকায় তার রয়েছে ব্যাপক খ্যাতি ও সুনাম। এজন্যই এলাকার সবাই তাকে ঘটক তাছির নামেই চিনেন। কিন্তু পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এলাকার ভোটাররা তাকে জোর করে তানোর পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে দাঁড় করিয়ে দেন এবং বিপুল ভোটে কাউন্সিলর নির্বাচিত করেন।
পরে ২০২১ সালেও ভোটাররা আবারো তাকে ভোটে দাড় করিয়ে পুনরায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এখনো তিনি কাউন্সিলর রয়েছেন। তবে, বিয়ে দিয়ে তিনি সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেয়েছেন বলেও জানান এই কাউন্সিলর। নিজে বিয়ে করছেন না কেনো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন পাঁকা বাড়ি করার পর বিয়ে করবেন বলে জানান তিনি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঘটক তাছির কাউন্সিলর একজন সাদা মনের সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ। ঘটকতালি করার কারনে এলাকার প্রায় প্রতিটি পরিবারের সাথে রয়েছে তার মধুর সম্পর্ক। তিনি সকলের সাথেই হাসি মুখে কথা বলার পাশাপাশি যেকোন বিপদে আপদে ডাকলেই ছুটে যান সবার মাঝে।
এবিষয়ে তাছির মন্ডল বলেন, গত ২০ বছরে অন্তত ৮ হাজার ৪৯টি বিয়ে দিয়েছেন তিনি। বছরে প্রায় ৪০০টি বিয়ের ঘটকতালির মাধ্যমে বিয়ে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, প্রায়দিনই তার ঘটকতালির মাধ্যমে বিয়ে সম্পূর্ণ হয়। এমনও দিন গেছে ঘটকতালিতে একই দিনে ৫ থেকে ৬টা পর্যন্ত বিয়ে হয়েছে।
কাউন্সিলর বলেন, বিয়ের ঘটকতালি করে বিয়ে দিলে আমাকে তারা খুশি মনে সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা দেন। অনেকে বেশিও দেন। সর্বচ্চো ৬০ হাজার টাকাও আমি পেয়েছি। যার যেমন সামর্থ তেমনই টাকা আমাকে খুশি মনে দেন। আমি জোরাজরি করে কোন টাকা নিই না। তার ঘটকতালিতে ৮ হাজার ৪৯টি বিয়ের মধ্যে সাড়ে ৩০০ মতো বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটেছে।
এব্যাপারে তানোর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বর্তমান পৌরমেয়র ইমরুর হক বলেন, ঘটক তাছির কাউন্সিলর এলাকার মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় একজন ব্যক্তি। তিনি মূলত ঘটকতালি করেই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। আমি তার দীর্ঘায়ু ও মঙ্গল কামনা করছি। তা/অ