শুক্রবার, ২০ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:১১ am

সংবাদ শিরোনাম ::
ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ বাংলাদেশ ও ভারত ভিসা জটিলতায় চার যৌথ সিনেমা একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির আটক
ফুটবলে মেসিরা জিতলো, রাজনীতির ফাইনালে কে? প্রভাষ আমিন

ফুটবলে মেসিরা জিতলো, রাজনীতির ফাইনালে কে? প্রভাষ আমিন

প্রায় একমাসের আবেগ, উত্তেজনা, ঝগড়া, ট্রল ফুরালো। অতিরিক্ত সময়, টাইব্রেকার শেষে বিশ্বকাপ ট্রফি উঠলো লিওনেল মেসির হাতে। অনেকদিন ধরেই সর্বকালের সেরা ফুটবলার পেলে না ম্যারাডোনা, এ নিয়ে তর্ক হচ্ছিল। লিওনেল মেসি পারফরম্যান্স দিয়ে নিজেকেও সেই তালিকায় তুলে এনেছিলেন। তবে তার ঘাটতি ছিল একটি বিশ্বকাপ।

ব্যক্তিগত নৈপুণ্য যাই থাক, ঝুলিতে বিশ্বকাপ না থাকলে কেউ সর্বকালের সেরা হতে পারেন না। আর্জেন্টিনার সর্বশেষ বিশ্বকাপ জয়ের পরের বছর লিওনেল মেসির জন্ম। নিজের শেষ বিশ্বকাপে এসেও ৩৫ বছর বয়সী মেসি অভাবনীয় নৈপুণ্যে আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের শিরোপা খরা কাটালেন। নিজে তো ভাসলেনই, আনন্দের বন্যায় ভাসালেন বিশ্বের কোটি ভক্তকেও। মেসির মত ফুটবলারের ঝুলিতে একটি বিশ্বকাপ না থাকলে সেটি ফুটবলের প্রতিই অন্যায় করা হতো।

রাজনীতির মাঠে জয়-পরাজয়ের লড়াই না করে, সব রাজনৈতিক দলেরই উচিত আরো বেশি করে জনগণের কাছে যাওয়া। জনগণের হৃদয় জয় করতে পারাটাই রাজনীতির জন্য বিশ্বকাপের শামিল। ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা জিতলো। এখন বাংলাদেশের রাজনীতির ফাইনালে কে জিতবে?

কাতারের ঝলমলে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার শিরোপা খরা কাটলো, মেসির ক্যারিয়ার পূর্ণতা পেলো এবং মেসি নিজেকে তুলে আনলেন সর্বকালের সেরাদের তালিকায়। আমি ব্রাজিলের ভক্ত। তবে বরাবরই চাই ল্যাতিন ফুটবলের জয় হোক, শৈল্পিক ফুটবলের জয় হোক। আমরা ম্যারাডোনার খেলা দেখেছি, আমরা মেসি, রোনালদিনিও, রোনালদো, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, এমবাপ্পেদের খেলা দেখছি; এটাকে আমি সৌভাগ্য মানি।

বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে মাতামাতি অন্য দেশগুলোতে কেমন হয় জানি না। তবে বাংলাদেশ বিশ্বকাপের একমাস বুঁদ হয়ে থাকে ফুটবলে। নানারকমের পাগলামি হয়, উন্মাদনা হয়। প্রিয় দলের জার্সির রঙে বাড়ি বা গাড়ি রাঙিয়ে ফেলা থেকে শুরু করে কে কত বড় পতাকা বানাতে পারে, তার প্রতিযোগিতা চলে। ফেসবুকে শালীন-অশালীন ট্রল হয়।

হাজার মাইল দূরের ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা, মেসি-নেইমার নিয়ে বাংলাদেশে নিছক মাতামাতি নয়, উন্মাদনা চলে। বিশ্বকাপ শুরুর আগেই প্রিয় দলের পতাকা টানাতে গিয়ে অন্তত ৬ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে পত্রিকায়। ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনায় নিজ দলের জয় বা পরাজয়ে কারো মারা যাওয়ার খবর পাইনি। কিন্তু বাংলাদেশে প্রিয় দলের পরাজয়ে শোকাহত হয়ে যেমন মৃত্যুর খবর এসেছে, তেমনি প্রিয় দলের জয়ে চিৎকার করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ার খবরও এসেছে।

দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে মারামারির খবরও এসেছে। আমি নিজে ব্রাজিলের সমর্থক হলেও কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের পরাজয়ে একধরনের স্বস্তি পেয়েছি। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সেমিফাইনাল হলে বাংলাদেশে কারফিউ জারি করতে হতো।
একসময় বাংলাদেশের ফুটবল নিয়েও আমাদের মাতামাতি ছিল। আবাহনী-মোহামেডান খেলা থাকলে গুলিস্তান পরিণত হতো রণক্ষেত্রে। সেই দিন গত হয়েছে অনেক আগেই। তবে রক্তের ভেতরে ফুটবলটা রয়ে গেছে। চারবছর পর বিশ্বকাপ এলে সেই উন্মাদনাটা বেরিয়ে আসে বহুগুণ হয়ে। একমাস পর আজ থেকে বাংলাদেশ আবার স্বাভাবিক রুটিনে ফিরবে।

আবার অপেক্ষা চারবছরের। ফুটবল নিয়ে এই মাতামাতিটা আমার ভালোই লাগে। তবে মাতামাতি যেন উন্মাদনায় পরিণত না হয়, প্রাণসংহারী যেন না হয়, খেলা যেন থাকে নিছক উদযাপন আর আনন্দের মধ্যেই।

বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল হলেও, বাংলাদেশের রাজনীতির খেলা এখনও ফুরায়নি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বড় প্রিয় খেলাধুলা। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লগি যখন প্রথম ক্ষমতায় আসে, তখন ওবায়দুল কাদের যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। সেই থেকে খেলাধুলার সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক। সেটা এখনও ভুলতে পারেননি। কথায় কথায় ‘খেলা হবে’ স্লোগান দেয়া এখন তার অভ্যাস।

খেলার জয়-পরাজয়ও তিনিই ঠিক করে দিচ্ছেন। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশকে ওবায়দুল কাদের বলেছেন কোয়ার্টার ফাইনাল, যেটাতেক নিজেদের জয়ী দাবি করছেন তিনি। বিএনপির গণমিছিল নাকি হবে সেমিফাইনাল। আর ফাইনাল হবে আগামী ডিসেম্বর বা পরের জানুয়ারির নির্বাচনে।
ওবায়দুল কাদেরের দাবি, যারা আন্দোলনের খেলায় জিতবে, তারাই নির্বাচনের ফাইনালেও জিতবে। তিনি নিজেদের আগাম জয়ী ঘোষণা করে রাখছেন। তবে রাজনীতির খেলাটা ফুটবলের মত অত সহজ নয়। নিছক গোল দিয়েই এখানে জয়-পরাজয় ঠিক হয় না। যে রাজনৈতিক দল জনগণের যত কাছে যেতে পারবে, জয় হবে তারই। বিএনপিকে জোর করে নয়াপল্টন থেকে গোলাপবাগে পাঠিয়ে ওবায়দুল কাদের নিজেদের জয়ী ভাবছেন।

কিন্তু জনগণ কী ভাবছে, সেটা একটু কান পেতে শুনলে ভালো হতো। জনগণের ভোগান্তি হবে বলে নয়াপল্টনে বিএনপিকে সমাবেশ করতে দেয়া হলো না। কিন্তু পুলিশ যে চারদিন ধরে নয়াপল্টন অবরুদ্ধ করে রাখলো, দুদিন যে ঢাকায় অঘোষিত হরতাল হলো; তাতে বুঝি জনগণের ভোগান্তি হয়নি। জনগণ কি এইসব অপকৌশল বোঝে না। তাই রাজনীতির মাঠে জয়-পরাজয়ের লড়াই না করে, সব রাজনৈতিক দলেরই উচিত আরো বেশি করে জনগণের কাছে যাওয়া। জনগণের হৃদয় জয় করতে পারাটাই রাজনীতির জন্য বিশ্বকাপের শামিল। ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা জিতলো। এখন বাংলাদেশের রাজনীতির ফাইনালে কে জিতবে? লেখক : বার্তাপ্রধান, এটিএন নিউজ।

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.