শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:০৩ pm
শাকিল আহমেদ, নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র সাইদুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণের ১ দিনের মাথায় ১০ জন কর্মচারীকে ছাটাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় কাউসার আলী রয়েল নামে পরিষদের এক কর্মচারী বিষপানে আত্নহননের চেষ্টা করেন। পরে তাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করে। ঘটনাটি ঘটে গত ৫ মার্চ শুক্রবার বিকেলে। এনিয়ে পরিষদের সাবেক ও বর্তমান মেয়রসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে তানোর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগ ও ভুক্তভোগি পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মুন্ডুমালা পৌরসভার প্রকাশ নগর গ্রামের বাসিন্দা আবু বাক্কারের পুত্র কাউসার আলী রয়েল (৩০) প্রায় ১০ বছর ধরে পৌরসভায় রোডলাইট ইলেকট্রিশিয়ান পদে কর্মরত ছিলেন। ওই চাকরির জন্য মেয়র গোলাম রাব্বানীকে বিভিন্ন সময়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিতে হয়। এতো টাকা জোগাড় করতে তাকে ভিটে মাটি এমনকি গোরস্থানের জায়গাও বিক্রি করতে হয়। এভাবে টাকা নিয়ে হয়রানি হলে ২০১৮ সালের দিকে মৌখিকভাবে তাকে নিয়োগ দিয়ে শান্তনা দেয়া হয়।
পরে মেয়র রাব্বানী রয়েলকে নিয়মিত অফিস ও স্বকর্ম করিয়ে নেন। কিন্তু বেতনভাতা নিয়মিত দেয়া হয়নি। এরপরও রয়েল তার চাকুরি স্থায়ীকরণের আশায় নিয়মিত ডিউটি করেন। সম্প্রতি ৩০ জানুয়ারী পৌর পরিষদ নির্বাচনের আগে নিয়োগ পরিক্ষার নামে আবারও ২০ হাজার টাকা নেয়া হয়। পরে তাকে চাপ দিয়ে বলা হয় তার আস্থাভাজন জগ প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট দেবার জন্য। কিন্তু তিনি নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আর তাকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
এনিয়ে কাউসার আলী রয়েল জানান, সম্প্রতি আ’লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইদুর রহমান মেয়র নির্বাচিত হয়ে তাকে ছাড়াও আইড়া এলাকার দুরুল হুদা (৩২) ও জাকারিয়া মাহমুদ উজ্জল (২৭) সহ ১০ জনকে চাকরির আসায় পরিষদে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। ফলে ক্ষোভে অভিমানে অভুক্ত অবস্থায় আত্নহননের জন্য বিষপান করেন রয়েল। এরির্পোট লেখা পর্যন্ত তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বলে জানান রয়েলের পিতা আবু বাক্কার। তিনি বলেন, আমি পাড়ার এক মসজিদে মোয়াজ্জেম হিসেবে কাজ করি। বর্তমানে তাকেও মসজিদে আসতে নিষেধ করা হয়।
তবে, এব্যাপারে মুন্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী টাকা নেবার কথা অস্বীকার করে বলেছেন, রয়েল পাড়ার ছেলে বলে তাকে দিয়ে পরিষদের ইলেকট্রিশিয়ান কাজ করানো হয়। এরমধ্যেই রয়েল ড্রাগ এডিক্টেট হয়ে পড়ে। এরপরও রোডলাইট ইলেকট্রিশিয়ান পদে মাষ্টাররোল কর্মচারী হিসেবে তাকে ৯ হাজার টাকা বেতনভাতা দেয়া হয়েছে। বর্তমান মেয়র এসে তাকে চাকরিচ্যুত করলে আমার কি করার আছে বলে জানান এই নেতা।
এনিয়ে মেয়র সাইদুর রহমান বলেন, পৌর পরিষদ থেকে কাউসার আলী রয়েল ছাড়াও আরো ১০ জনকে নিয়োগ দেয়া আছে বলে আমার জানা নেই। তাই রয়েলকে পরিষদে আসতে নিষেধ করা হয়েছে বলে এড়িয়ে গেছেন মেয়র সাইদুর।
এবিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ দায়িত্বরত তদন্ত ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এসংক্রান্ত অভিযোগ বিষয়ে জানা নেই। তবে, থানায় কোন অভিযোগ হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি। আজকের তানোর