মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:২৭ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হারুন অর রশিদ রাজশাহীতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বাংলাদেশের পুলিশপ্রধান জাতিসংঘ থেকে একজন নিষিদ্ধ কর্মকর্তা। তিনি আইজিপি হয়ে এখনো নিরপেক্ষ অবস্থান নিতে পারছেন না। পুলিশকে তিনি একটা দলের হয়ে পরিচালনা করছেন। বিভাগীয় মহাসমাবেশ উপলক্ষে রাজশাহী বিভাগজুড়ে ককটেল নাটক মঞ্চায়ন চলছে। অবিলম্বে এ সাজানো নাটক বন্ধের দাবি করেন হারুন।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও বলেন, জনগণকে হয়রানি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ না করলে পুলিশ বাহিনীও নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে। এতে বিশ্বের মানুষের কাছে বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হবে।
অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, রাজশাহী বিভাগের জেলায় জেলায় পুলিশ ককটেল নাটক করছেন। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আমরা বাধ্য হয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে যেতে বাধ্য হব।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি কোনো নিষিদ্ধ সংগঠন নয় যে রাতে তারা গোপনে সভা করবে। আর প্রতিটি মামলাতেই একই ভাষা পুলিশের। এসবই সাজানো ও হয়রানিমূলক মামলা; যাতে বিএনপি নেতাকর্মীরা আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীর মহাসমাবেশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দিতে না পারেন।
রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ উপলক্ষে জেলায় জেলায় নেতাকর্মীদের নামে হয়রানিমূলক ও মিথ্যে মামলা দায়েরের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা।
রাজশাহী মহানগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হারুন অর রশিদ এমপি বলেন, হামলা-মামলা ও পরিবহণ ধর্মঘট দিয়ে বিএনপির গণমহাসমাবেশ ঠেকানোর যাবে না। হাজার হাজার মানুষ পায়ে হেঁটে মিছিল করতে করতে এসে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে জমায়েত হবেন। অন্য বিভাগের মহাসমাবেশহগুলিতে নেতাকর্মীদের জনস্রোত দেখে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির এই সংসদ সদস্য। এসব করে মহাসমাবেশ বন্ধ কিংবা ঠেকানোর যাবে না বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ রাজশাহী বিভাগের ৬৭টি থানার মধ্যে ৪৪টিতে মামলা করেছে। মামলাগুলোতে একই ধরনের অভিযোগের কথা বলা হয়েছে। এসব মামলা যে সাজানো তা দেখলেই বোঝা যায় । মামলা দিয়ে রাজশাহীর গণসমাবেশের জনস্রোত ঠেকানো যাবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি আরও বলেন, গত ১৮ বছর ধরে বিএনপির নেতাকর্মীরা হামলা মামলা মাথায় নিয়ে দলকে আঁকড়ে ধরে আছেন। এসব মামলা দিয়ে তাদের দল থেকে বিচ্যুত করা যাবে না।
বিএনপি নেতা দুলু আরও অভিযোগ করেন, নেতাকর্মীরা জানতে পারছেন না তাদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগে মামলা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে এসব মামলা দিয়ে রাতের বেলায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি করছে। কোথাও সভা করতে গেলে পুলিশ হামলা করে পণ্ড করে দিচ্ছেন। পরিস্থিতি এখন এমন যেন পুলিশই বিএনপির মূল প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরও জানান, বিভাগের মোট ৪৪ মামলায় রাজশাহীর সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফাসহ শতাধিক নেতাকর্মী ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি অবিলম্বে এসব গায়েবি মামলা বন্ধের দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা ও সাবেক এমপি শাহজাহান মিয়া, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী ইশা ও মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন, জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদ প্রমুখ।
উল্লেখ্য, আগামী ৩ ডিসেম্বর বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় মহাসমাবেশ ডাকা হয়েছে। এটি বিএনপির শেষ বিভাগীয় মহাসমাবেশ বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।