মঙ্গবার, ০৩ িসেম্র ২০২৪, সময় : ১১:১৭ pm
শহিদুল ইসলাম (নিজস্ব প্রতিবেদক) নাচোল :
ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো) সার বিক্রি করে তিনি মাসে আয় করছেন ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। সোমবার ৭ নভেম্বর নাচোল উপজেলা কৃষি অফিসের একটি টিমের সাথে নাচোল সদর ইউনিয়নের ঝলঝলিয়া গ্রামে আব্দুস সামাদের বাড়িতে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। আম বাগানের নিচে ২ চালা টিনের ছাউনি ঘরের নিচে সিমেন্টের তৈরি ১৫টি রিং স্ল্যাব ও ২ মিটার লম্বা, ১ মিটার চওড়া এবং ১ মিটার গভীরতা বিশিষ্ট ইট দিয়ে তৈরি করা ১৫টি চৌবাচ্চা। এসময় কথা হয় আব্দুস সামাদের সঙ্গে ।
তিনি বলেন, আমি নাচোল কৃষি ডিপ্লোমা কলেজের শিক্ষার্থী। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ২০১৯-২০ এনএটিপি-২ প্রকল্পের আওতায় ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনের প্রদর্শনী হই। ওই প্রদর্শনী দিয়েই আমার ভাগ্যের চাকা ঘোরানোর চেষ্টা করি। এতে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করি ।
প্রতিটি রিং স্ল্যাব ও ইটের চৌবাচ্চায় বাসি গোবর, শাকসবজির উচ্ছিষ্টাংশ, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা ও কলাগাছ টুকরা টুকরা করে কেটে মিশ্রণ করা হয়। এতে পরিমাণ মতো ছেড়ে দেওয়া হয় কেঁচো। কেঁচো সার উৎপাদন হতে ১ মাস সময় লাগে।
১ মাসে উৎপাদন হয় ৪ হাজার কেজি ভার্মি কম্পোস্ট কেঁচো সার। প্রতি কেজি সার ১৫ টাকা করে বিক্রি করা হয়। এতে খরচ বাদে আয় হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। পাশাপাশি কেঁচোর বংশবিস্তার হচ্ছে। প্রতিটি কেঁচো বিক্রি করেও তাঁর আয় হচ্ছে।
এই সার ব্যবহার করে তিনি জমিতে ধান, লাউ, ডাঁটা, ধনে, লতিকচু, পুঁইশাক, কলমিশাক চাষ করেছেন। সবজি বিক্রি করেও তিনি ভাল আয় করছেন। এদিকে, আব্দুস সামাদের উৎপাদিত ভাই-ভাই ভার্মি কম্পোস্ট কেঁচো সার স্থানীয় কৃষকদের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
তিনি আরো বলেন, যে হারে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের দাম বাড়ছে, তাতে ধানের চাষ করে লাভ হয় না। তাই নাচোল কৃষি ডিপ্লোমা কলেজে লেখাপড়ার পাশাপাশি কৃষি বিভাগের পরামর্শে কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করি। সার উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল গরুর গোবর, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠাসহ সবকিছু আমার নিজের। তাই সহজে এটা করতে পারছি। ইচ্ছেশক্তি থাকলে যে কেউ করতে পারে। ভবিষ্যতে লেখাপড়া শেষ করে ভার্মি কম্পোস্ট কেচোঁ সার ও কৃষি খামার গড়ে তুলব। এ জন্য সরকারি সহায়তা দরকার ।
এবিষয়ে নাচোল উপজেলা কৃষি অফিসার বুলবুল আহম্মেদ বলেন, কেঁচো দিয়ে সার উৎপাদনে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। বর্তমানে রাসায়নিক সারের অতিব্যবহারে জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। পরিবেশবান্ধব এই সার মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
রাসায়নিক সারের পরিবর্তে ভার্মি কম্পোস্ট এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও উৎপাদন ততটা সহজলভ্য হয়ে ওঠেনি সারাদেশে। এ সার উৎপাদন করতে সহজ হলেও কেঁচো সংগ্রহ এবং সার উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে কৃষকদের এখনো আগ্রহ আসেনি।
তবে, নাচোল উপজেলার ঝলঝলিয়া গ্রামের কৃষি ডিপ্লোমা কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুস সামাদের ভাই-ভাই ভার্মি কম্পোস্ট সার এলাকায় সাড়া জাগিয়েছে। তিনি জানান, ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন ও বিক্রি নাচোলে কৃষকদের মাঝে সাড়া জাগিয়েছে।
এই খামার তৈরি করে বছরে ভালো আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব। কৃষকরা যদি এই ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনে এগিয়ে আসে তবে, আমাদের জমির উর্বরতা শক্তি ফিরিয়ে পাবে এবং রাসায়নিক সারের ঘাটতি কমে আসবে। আজকের তানোর