শুক্রবার, ২০ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৫৯ pm

সংবাদ শিরোনাম ::
দুদকের তালিকায় ১০০ ব্যক্তির সম্পদের পাহাড় গড়েছেন যারা আ.লীগ ১৪ দলীয় জোটের নেতা ও মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে ৭৫০ মামলা ঢাবিতে সব ধরনের রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিখোঁজের সাতবছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন উচ্ছ্বসিত মা তানোরে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত রাসিকের সাবেক কাউন্সিলর মনসুরের মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন সেই রুবেল আরও ৭ দিনের রিমান্ডে সিলেবাস সংক্ষিতের দাবিতে রাজশাহীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ শেষে সমাবেশ পবায় উপজেলা প্রশাসনে ও কাটাখালি পৌরসভায় ভোগান্তি চিত্র নায়িকা পরীমণি পালন করলেন ‘বিবাহ বিচ্ছেদ’ দিন এক দফা দাবিতে রাজশাহীতে নার্সদের মিছিল শেষে মানববন্ধন প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সা.) বিশ্ববাসীর জন্য রহমত : দুধরচকী রাজশাহীতে শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ডলার সংকটে বাংলাদেশকে সার দিচ্ছে না সরবরাহকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে ড. ইউনূসের নাগরিক সংবর্ধনা বাতিল রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে বিচারিক ক্ষমতা পেলো সেনাবাহিনী আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ বাগমারায় অধ্যক্ষ ও সভাপতির অনিয়মের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক দল গঠনের বিষয়টি গুজব : আসিফ মাহমুদ একদিনের জন্য শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা রাজশাহী আসছেন আজ
শেখ হাসিনা’র দেশপ্রেম : চকচকে বাংলাদেশ : মাহাবুব রহমান দুর্জয়

শেখ হাসিনা’র দেশপ্রেম : চকচকে বাংলাদেশ : মাহাবুব রহমান দুর্জয়

ভঙ্গুর অর্থনৈতিক দশা নিয়ে একাত্তরে যাত্রা শুরু করে স্বাধীন বাংলাদেশ। যুদ্ধবিধ্বস্ত জনপদে বৈষম্যহীন, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমাজ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। কিন্তু নবগঠিত বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্নের ওপর দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন, তা স্বাধীনতাবিরোধী ও একাত্তরের পরাজিত শক্তির কারণে বঙ্গবন্ধু সমাপ্ত করে যেতে পারেননি। বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত স্বপ্ন পূরণে হাল ধরেণ ‘শেখ হাসিনা’। ‘শেখ হাসিনা’ সহজ-সারল্যে ভরা যাঁর ব্যক্তিগত জীবন। প্রত্যহিক জীবনে, পোশাকে-আশাকে, জীবনযাত্রার কোথাও কোনো ধরনের বিলাসিতা বা কৃত্রিমতার ছাপ নেই। এ যেন পিতার মতোই বাংলার মাঠঘাট থেকে উঠে আসা বাংলার মেয়ে বঙ্গবন্ধুর হাচু, যিনি সত্যিকার অর্থেই বাঙালির আমজনতার অতি আপনজন, প্রিয়জন হিসেবে বাংলার প্রতিটি মানুষের সুখ-দুঃখের সারথি হয়েছেন। তাঁর সংগ্রামমুখর জীবন বাংলাদেশেরও উত্থান-পতনের ধারাবাহিকতার ইতিহাস বহন করে। অথচ জননেত্রী শেখ হাসিনার এই কর্মময় জীবন কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না, ছিল কণ্টকার্কীর্ণ। মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস ছিলেন গৃহবন্দী। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও বেশ কয়েক বার তাঁকে কারা নির্যাতন ভোগ ও গৃহবন্দী থাকতে হয়েছে। বারবার তাঁর জীবনের ঝুঁকি এসেছে। অন্তত ২০ বার তাঁকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তাঁর লক্ষ্য অর্জনে থেকেছেন অবিচল। মেধা-মনন, সততা, কঠোর পরিশ্রম, সাহস, ধৈর্য, দেশপ্রেম ও ত্যাগের আদর্শে গড়ে উঠেছে তাঁর আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব।
টানা তিন মেয়াদের দেশ পরিচালনায় বঙ্গবন্ধুকন্যা, উন্নয়নের কারিগর দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে নিয়ে গিয়েছেন এক অনন্য উচ্চতায়। উন্নতসমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হাতে নিয়েছেন বেশ কিছু মেগা প্রকল্প। বেশ কিছু প্রকল্পের সুফল জনগণ ইতোমধ্যেই ভোগ করতে শুরু করেছে। মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের পর বাংলাদেশ বদলে যাবেই। তখনই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ আজ অপার বিস্ময়ের নাম। অর্থনৈতিক উচ্চ প্রবৃদ্ধি, দারিদ্র্যের হার হ্রাস, শিক্ষা, স্বাস্থ্য যোগাযোগ খাতে অভূত সাফল্যের কারণে বিশ্বের বুকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। এক সময়ের দারিদ্র্যপীড়িত দেশটি আজ এশিয়ার ‘এমার্জিং টাইগার’। রাজধানী থেকে প্রত্যন্তগ্রাম পর্যন্ত সর্বত্রই আজ উন্নয়নের জোয়ার বইছে। এ সবকিছুই সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে। বলা হয়, সংকটেই নেতৃত্বের পরীক্ষা। করোনা, ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ও দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে শতাব্দীর ভয়াবহ সংকটের পরও মানুষের জীবনকে স্বাভাবিক রাখতে প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বিশ্বসম্প্রদায়েরও প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে ভিশন-২০২১ ও ভিশন-২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে সরকার। তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানের ধারাবাহিক অর্থনৈতিক বঞ্চনা, শোষণ আর নিপীড়ন থেকে মুক্ত হয়ে শূন্য থেকে শুরু করা বাংলাদেশের বয়স এখন ৫০। পাঁচ দশকে পাকিস্তান তো বটেই, সেই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায়ও বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রেই এগিয়েছে। সমৃদ্ধ হয়েছে অবকাঠামো আর অর্থনীতি। যার ফলে আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ।
দেশপ্রেম নিয়ে ছোটবেলায় আমরা সবাই কমবেশী পড়াশোনা করেছি। বিশেষ করে দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ এই লাইনটি পড়েন নি এমন লোক মেলা ভার। দেশপ্রেম নিয়ে রচনা বা ভাব সম্প্রসারনও অনেক পড়েছি আমরা। অতীতে এদেশের মানুষ ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে, ৭১এ মুক্তির জন্য লড়াই করে লক্ষলক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছেন শুধুমাত্র দেশের প্রশ্নে; এটাকেই দেশপ্রেমের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ বলা যেতে পারে। কিন্তু দেশের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছেন এমন কাউকে খুঁজতে গেলে যার নাম চোখের সামনে ভেসে উঠে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা। দেশের মানুষের জন্য তিনি যা করেছেন তা বাংলার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে। বহুবার হত্যাচেষ্টার মুখোমুখি হওয়ার পরও রাজনীতি ও দেশ সেবার কাজে বিরতি টানেন নি। আল্লার উপর ভরসা করে, বাংলার জনগণের প্রতি বিশ্বাস ও ভালোবাসায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন ৪ বার। টানা ৩য় মেয়াদের দায়িত্ব পালনে দেশের অবকাঠামোগত অভুতপূর্ব উন্নয়নে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছেন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বিরোধী দলে ছিলেন তখনই পরিকল্পনা করেছিলেন, দায়িত্বে আসলে কী ভাবে দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। এখনও তিনি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার সাফল্যের মূল মন্ত্র হলো দেশপ্রেম, কর্তব্যনিষ্ঠা ও সামগ্রিক পরিকল্পনা। এটাকে দেশপ্রেমের দৃষ্টান্ত উদাহরণ বলা চলে। শেখ হাসিনা’র অফুরান দেশপ্রেমের কারণে তলাবিহীন ঝুড়ি এখন চকচকে বাংলাদেশে রূপান্তর হয়েছে, এটা কেবল শেখ হাসিনা’র দেশপ্রেমের কারণেই সম্ভব হয়েছে। কর্ম পরিচয়ে পিপলস অ্যান্ড পলিটিকসের তালিকায় বিশ্বের সবচেয়ে সৎ পাঁচজন সরকারপ্রধানের মধ্যে তৃতীয় নম্বরে তালিকাভুক্ত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। টাইম ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের প্রভাবশালী ১০ নারীনেত্রীর একজন তিনি। অন্যদিকে প্রভাবশালী দৈনিক খালিজ টাইমস মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তাকে ‘নিউ স্টার অব দ্য ইস্ট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। ’৭৫-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতিতে তিনি অনন্য। তাঁর নেতৃত্ব আমাদের জন্য গৌরব ও সম্মানের। দীর্ঘ ও বন্ধুর পথপরিক্রমায় তাঁর সফল ও গতিশীল নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর এই বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে কটাক্ষ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এখন মার্কিন মদদপুষ্ট বিশ্বব্যাংকসহ মোড়লদের চ্যালেঞ্জ করছে বাংলাদেশ। স্বাধীনতার মাত্র ৫০ বছরে এই পরিবর্তন বাংলাদেশের। আমরা মনে করি, এই বদলে যাওয়া বাংলাদেশের যে অগ্রগতি তা দেশরত্ন শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের জন্যই সম্ভব হয়েছে।
কোথায় নেই শেখ হাসিনা? বাংলার আনাচে-কানাচে থেকে শুরু করে বিশ্বসভায় আজ যে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে, তার সর্বাগ্রে রয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে তাঁর অবদান আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। নিখাদ দেশপ্রেম, দূরদর্শিতা, দৃঢ় মানসিকতা ও মানবিক গুণাবলি তাঁকে আসীন করেছে বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে। আজ তিনি বাঙালির জাতীয় ঐক্যের প্রতীক এবং বাঙালি জাতির সব আশা-ভরসার নিরাপদ আশ্রয়স্থল। মোটা দাগে ’৭৫-পরবর্তী বাঙালি জাতির যা কিছু মহৎ অর্জন তা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরের যে অসামান্য অর্জন রয়েছে- তার মধ্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বও অন্যতম অর্জন।
শেখ হাসিনা’র সুদৃঢ় পরিকল্পনা এবং কর্তব্যনিষ্ঠ নেতৃত্বের ফলে বাংলাদেশে গত এক দশকে অনেক গুলো ডেভেলপমেন্ট কাজ শুরু করা হয়েছে এবং অনেকগুলো সফলভাবে সমাপ্তও হয়েছে। যে সব প্রজেক্ট গুলোর সাইজ এবং আকারে বড়, এইসব প্রজেক্ট গুলো সম্পূর্ণ কাজ করতে অনেক টাকা খরচ হয় বলে অনেকগুলো প্রজেক্টকে মেগা প্রজেক্ট হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এবং কয়েকটি প্রকল্পকে “ফাস্টট্র্যাক” প্রকল্প হিসেবে ধরা হয়েছে, যেমন ঃ  পদ্মা মাল্টিপারপাস সেতু, বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল প্রকল্প ‘এমআরটি লাইন ৬’ এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে সড়ক টানেল তৈরি করা বা ‘কর্ণফুলী টানেল’ এর কাজ এই বছর নাগাদ শেষ হবার কথা। যার প্রেক্ষিতে সরকার অর্থনীতির চাকাকে আরও সক্রিয় করতে চলমান প্রজেক্টগুলোর পাশাপাশি নতুন প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করেছে। প্রবৃদ্ধি সঞ্চালক ১০ মেগা প্রকল্প ও একশ’ অর্থনৈতিক অঞ্চলের নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে। সব কিছু ঠিক থাকলে সরকারের এই মেয়াদেই দেশের মানুষ এসব প্রকল্পের সুফল পেতে শুরু করবে। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রাখার ভিত্তি রচনার ক্ষেত্রে এই দশ মেগা প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যে গতিতে এসব প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে তাতে আশা করা যায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রকল্পগুলো শেষ হবে। অবকাঠামো উন্নয়নে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশের প্রবৃদ্ধি আরও বেগবান হবে। বড় বড় প্রকল্পের দিকে বিশেষ নজর দেয়ার জন্য সরকার দশটি মেগা প্রকল্পকে ফাস্টট্র্যাকভুক্ত করেছে। সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ফাস্টট্র্যাকভুক্ত মেগা প্রকল্পগুলো হচ্ছে- পদ্মা বহুমূখী সেতু প্রকল্প (এ সব মেগা প্রকল্পের মধ্যে দেশে-বিদেশে সবচেয়ে বেশি আলোচিত পদ্মা সেতু), ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্প, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প, দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, কয়লা ভিত্তিক রামপাল থার্মাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্প এবং সোনাদিয়া গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণ প্রকল্প। এই দশ মেগা প্রকল্পের বাইরেও ২০৩০ সালের মধ্যে মোট ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে মোট ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইপিজেড) প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলছে। ২০১০ সালে ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল আইন’ প্রণয়নের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের সূচনা হয়েছিল। সরকারের প্রত্যাশা, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো (ইপিজেড) তৈরি হলে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ রপ্তানি আয় সম্ভব হবে। একইসঙ্গে এই ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চলে দেশের এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সাবেক লিড ইকোনমিস্ট ড. জাহিদ হোসেন বলেন, ‘মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে জাতীয় উন্নয়নে বেশি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে আছে পদ্মা সেতু। এটির কাজ শেষ হলে এবং যানবাহন চলাচল শুরু হলে ইস্টার্ন বাংলাদেশ আর ওয়েস্টার্ন বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পৃক্ত হবে। এটার সরাসরি উপকার আছে। প্রতিদিনই ফেরি পারাপার হওয়ার জন্য মানুষের ভোগান্তি হয়। এ ছাড়া দূরত্ব কমে যাবে। অনেক হিসাবে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু হলে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার কমে যাওয়ার সমান সময় বাঁচবে। এটা তো একটা বিরাট ব্যাপার।’ তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয়ত হলো- ঢাকার মেট্রোরেল চালু হলে ঢাকাবাসীর গণপরিবহনের বিরাট সমস্যার সমাধান হবে। বলা হচ্ছে যে, প্রতি ঘণ্টায় অনেক যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। বিষয়টি যদিও ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভর করবে, তবুও যানজট এখন যা আছে তার চেয়ে কমবে, যদি আমরা সময়মতো চালু করতে পারি। একটা (এমআরটি লাইন-৬ বা উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত) যদি চালু হয়, তাহলে কিন্তু এটা উল্লেখযোগ্য। পুরোটা হলে তো কথাই নেই। তাহলে তো ঢাকার রাস্তার পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণের মতো হয়ে যাবে। ঢাকার মতো নগরীতে মোট জমির অন্তত ২৫ শতাংশ সড়ক থাকার কথা, সেখানে আছে পাঁচ শতাংশের মতো। ঢাকার মতো শহরে যদি গণপরিবহনের ব্যবস্থা হয়ে যায় এবং ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখা যায়, তাহলে কিন্তু ঢাকার বোঝা কমবে।’
দেশের উন্নয়নের স্বার্থে এই মুহূর্তে সরকার স্বপ্নের মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাসহ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী আর্থিক অগ্রগতি নিশ্চিত করতেই সরকার দ্রুত এই প্রকল্পগুলো শেষ করতে চাচ্ছে। এই প্রকল্পগুলোর উপর দেশের আর্থিক ও সামাজিক উন্নয়ন অনেকাংশে নির্ভর করছে। শুধু ফাস্টট্র্যাক নয়, সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের জন্য সরকারের নেয়া প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সংযোগ বাড়বে, সম্পর্কেরও উন্নতি হবে। সড়ক-মহাসড়ক উন্নয়নেও সরকার যথেষ্ট অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এশিয়াসহ আন্তর্জাতিক সড়কগুলোর সঙ্গে মিল রেখে চার লেন সড়কের পাশে সার্ভিস লেন রাখা হচ্ছে। দেশে বিনিয়োগ আকর্ষণে এই ধরনের বড় প্রকল্প জরুরি।
শেখ হাসিনা’র সরকারের মেগা প্রকল্পগুলোর পাশাপাশি প্রশংসার দাবী রাখে এমন প্রকল্প ২০২০ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছিলেন, মুজিববর্ষে দেশে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। সরকার সব ভূমিহীন, গৃহহীন মানুষকে ঘর তৈরি করে দেবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে, ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত সময়কে সরকার মুজিববর্ষ ঘোষণা করে। শেখ হাসিনা’র নির্দেশে সরকারের তিনটি কর্মসূচির আওতায় দেশের ভূমিহীন ঠিকানাহীন মানুষদের ঘর তৈরি করে দেওয়ার কাজ চলমান আছে। এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের আওতায় দুর্যোগ সহনীয় বাড়ি প্রকল্প। ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় গুচ্ছপ্রাম প্রকল্প ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্পণ্ড২। এর বাইরে আমার বাড়ি, আমার খামার প্রকল্পও রয়েছে। অনেক আগে থেকেই এই তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে নদীভাঙন পরিবার, বেদে পরিবার ও হিজড়াসহ বিভিন্ন কারণে যারা ভূমিহীন ও গৃহহীন হয়েছেন তাদের ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যেই এসব প্রকল্পের অনেক বাড়িঘর সংশ্লিষ্টদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আবার অনেক বাড়ি হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানান, দেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবেন না। এমন ব্রত নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। গৃহহীনকে ঘর করে দেওয়ার বেশ কয়েকটি প্রকল্পের বাইরে এটি একটি প্রকল্প, যা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী চান দেশে কোনো মানুষ গৃহহীন থাকবে না। সবার মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি মানুষের মাথাপিছু আয়ও বাড়বে। ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি সঞ্চার হবে, ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের। যার প্রেক্ষিতে বাংলার প্রতিটি মানুষের জীবনমান ঝকঝকে চকচকে হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। সুতরাং আমাদের প্রত্যাশা দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র হাতেই দীর্ঘমেয়াদী ক্ষমতা থাকুক, উন্নয়ন আর পরিবর্তনে আলোকময় জীবনের অধিকারী হোক বাংলার প্রতিটি মানুষ। জয় বাংলা – জয় বঙ্গবন্ধু – বাংলাদেশ দীর্ঘজীবি হোক। লেখক: মাহাবুব রহমান দুর্জয় (সাবেক ছাত্রনেতা, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ)। সূত্র : এফএনএস

স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ads




© All rights reserved © 2021 ajkertanore.com
Developed by- .:: SHUMANBD ::.