মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৫২ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোর উপজেলায় চোরাই পথে বালাইনাশকের দোকানে এক ট্রাক ডিএপি সার নামিয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দিন। এ ঘটনায় কৃষি অফিসারের নানা নাটকীয়তা ও তদবিরের পর ইউএনও’র ভ্রাম্যমান আদালতে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় তানোর পৌর এলাকার ধানতৈড় মোড়ে জসিম উদ্দিনের দোকানে এ জরিমানা আদায় করা হয়। তবে, ওই ডিএপি সারের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলেও নিশ্চিত করেন তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) পঙ্কজ চন্দ্র দেবনাথ।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, চলতি মাসের ১৮ সেপ্টেম্বর রোববার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তানোর পৌর এলাকার ধানতৈড় মোড়ে একট্রাক ডিএপি সার নামান বালাইনাশক ব্যবসায়ী আ’লীগ নেতা জসিম উদ্দিন। এলাকাবাসির এমন খবরে রোববার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় পৌর এলাকার ধানতৈড় মোড়ে রয়েছে জসিম উদ্দিনের বালাইনাশক ও ওয়ার্ড সাব-ডিলারের দোকান। ট্রাক থামিয়ে সরাসরি সার নামাচ্ছেন তাঁর কর্মচারীরা। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় কার সার এবং ট্রাকে করে নামানো যায় কিনা এমন প্রশ্নে তিনি জানান, আমি নোয়াপাড়া মোল্লা ট্রেডার্স থেকে কিনেছি। সেখানে টাকা থাকলে সারের ওভাব নেই। আপনি এভাবে সার আনতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি দম্ভক্তি করেই বলেন, আমি তো চুরি করছিনা। টাকা দিয়েই আনছি। বিসিআইসির সার ডিলাররা চাহিদামত সার দিতে পারেনা বলে এতো সার এনেছেন তিনি।
এরআগে স্থানীয়রা বিষয়টি ইউএনওকে অবহিত করেন। তখন ইউএনও জানতে চান, সারগুলো কার কিংবা কোথায় থেকে এসেছে। ইউএনওকে জানানো হয় নোয়াপাড়া মোল্লা ট্রেডার্স থেকে। কিন্তু ইউএনও জানতে পারেন মোল্লা ট্রেডার্সের সার নয়, জসিম উদ্দিন আলুর জমিতে দেবার জন্য এতো সার সংগ্রহ করে এনেছেন। ফলে ইউএনও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জসিম উদ্দিনের ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
তবে, এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহকে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ না করায় এ প্রতিবেদক ও স্থানীয়রা কৃষি বিভাগের ডিডিকে মোবাইলে অবহিত করেন। একটু পরেই কৃষি অফিসার সাইফুল্লাহ সরকারি গাড়ী নিয়ে জসিমের দোকানে এসে ভটভটিতে করে সার পাচার ধরে ফেললেও দোকানে ঘন্টাব্যাপী চলে রফাদফা। সঙ্গে ছিলেন বিসিআইসির ডিলার প্রনব সাহা।
তিনি জানান, এসব আমার সার নয়। আপনি এখানে কিভাবে নামালেন জানতে চাইলে তিনি জানান, এক ট্রাক নামিয়েছি সেটা কৃষি অফিসার জানেন তাহলে জরিমানা হল কেন প্রশ্ন করা হলে এসব অভ্যান্তরীন ব্যাপার বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি। এরআগে আপনার কয়েক হাজার বস্তা পটাশ সার জসিম পাচার করেছে জানতে চাইলে অকপটে স্বীকার করেন তিনি।
ইউএনও পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, বিষয়টি নিয়ে ঘটনাস্থলে ১৫ হাজার টাকা জরিমান করা হয়েছে। এছাড়াও সারের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই চলছে। তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি উপজেলায় সার ও বালাইনাশক ব্যবসায়ীদের নিয়ে সভা করে নীতিমালা অনুযায়ী এবং যার যেখানে ডিলার পয়েন্ট সেখানে সার নামাতে কঠোর নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বলে জানান ইউএনও। আজকের তানোর