মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:৪৬ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা : রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার পাড় ভেঙ্গে নিখোঁজ সেই বৃদ্ধের দুই দিনেও সন্ধ্যান মেলেনি। শুক্রবার বিকাল ৬টা পর্যন্ত তার পরিবার নির্বাক হয়ে আছে। বিভিন্নস্থানে অবগত করা হলে নৌ-পুলিশ পদ্মায় তল্লাসি চালিয়েও তার সন্ধ্যান করতে পারেনি। বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
জানা গেছে, চকরাজাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চৌমাদিয়া চরের মৃত আলী মাঝির ছেলে মুজা মাঝির (৬২) বাড়ি ১৫ দিন আগে পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে যায়। মনের দু:খে বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার দিকে পাড়ে বসে কান্নাকাটি করছিলেন। এ সময় পদ্মার পাড় ভেঙ্গে পড়ে নিখোঁজ হন। তারপর এলাকার লোকজন জানতে পেরে নৌকা ও জাল নিয়ে খোঁজ করতে থাকেন। শুক্রবার সকালে নৌ-পুলিশ পদ্মায় তল্লাসি চালিয়েও তার সন্ধ্যান করতে পারেনি। বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আখতার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। কিন্তু নিখোঁজের দুই দিন অতিবাহিত হলেও সন্ধ্যান না পেয়ে নিখোঁজ মুজা মাঝির স্ত্রী মজিরন বেগম ও ছেলে ইসরাত আলী আহাজারি করতে করতে নির্বাক হয়ে পড়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্মনের সময়ে উপজেলা নির্বাহি অফিসার শারমিন আখতারের সাথে ছিলেন উপজেলা সহকারি কমশিনার (ভূমি) জুয়েল আহমেদ, চকরাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বালু দেওয়ান, ওয়ার্ড মেম্বার আবদুর রহমান প্রমুখ।
এ বিষয়ে রাজশাহীর ফায়ার সার্ভিসের টিম লিডার নুরন্নবী ও চারঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নদীতে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে অনুমান করা গেছে, নিখোঁজ ব্যক্তি নদীতে পড়ার সাথে সাথে ¯্রােতে ভেসে গেছে।
চকরাজাপুর ইউনিয়নের চৌমাদিয়া চরের ওয়ার্ড মেম্বর আবদুর রহমান বলেন, এক মাসের ব্যবধানে চৌমাদিয়া, আতারপাড়া, দিয়ারকাদিরপুর চরের এরশাদ মাঝি, শাহপরায়ন, দিলু ব্যাপারি, করিম তাতীসহ ৪০টি পরিবারের বাড়িঘর পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। এ ছাড়া আম বাগান, বড়ই বাগান, পেয়ারা বাগান, শাকসবজি, আখ ক্ষেত, বিভিন্ন ফসলি জমিসহ শত শত বিঘা জমি পদ্মা গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
চকরাজাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বাবলু দেওয়ান বলেন, পদ্মায় বর্তমানে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার সাথে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। এরমধ্যে অনেকেই বাড়িঘর সরিয়ে নিচ্ছেন। চকরাজাপুর ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে আজ ছোট হয়ে যাচ্ছে। ফলে পদ্মা তীর রক্ষার্থে কাজ করলে চকরাজাপুরবাসি নতুন স্বপ্নে উজ্জীবিত হবে।
উপজেলা নির্বাহি অফিসার শারমিন আখতার বলেন, তার সন্দ্যানের জন্য ফায়ার সার্ভিসকে অবগত করা হয়েছে। রোববার পদ্মা নদীতে তারা অভিযান পরিচালনা করবেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।