রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৪৩ am
ডেস্ক রির্পোট : নওগাঁর মহাদেবপুরে ঘন্টার পর ঘন্টা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও সরকার নির্ধারিত মূল্যে চাহিদামত সার পাচ্ছেন না কৃষকরা। সরকার নির্ধারিত মূল্যে ডিলারদের কাছে শুধুমাত্র ইউরিয়া সার পাওয়া গেলেও অন্যান্য সব সারেই নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডিলাররাও ইউরিয়া সারের অতিরিক্ত মূল্য নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
এক শ্রেণির সার ব্যবসায়ী বাজারে সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন। সরকার ইউরিয়া সারের দাম প্রতি কেজিতে ৬ টাকা বাড়িয়ে ২২ টাকা নির্ধারণ করলেও এ দামে সার মিলছে না। কৃষকদেরকে খুচরা পর্যায়ে ২৪ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে ইউরিয়া সার কিনতে হচ্ছে।
টিএসপি, এমওপি সারের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। এসব সারও কেজি প্রতি ৫ থেকে ৮ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে কৃষকদের। সরাসরি ডিলারদের কাছ থেকে ইউরিয়া সার নেয়ার কথা থাকলেও ডিলারদের দোকানে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়েও চাহিদামত সার না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত দামে খুচরা বাজার থেকে সার কিনছেন কৃষকরা।
শনিবার (২০ আগস্ট) উপজেলা সদরের বিভিন্ন ডিলারের দোকানে গিয়ে দেখা গেছে সার ক্রেতা কৃষকদের দীর্ঘ লাইন। এদের মধ্যে অনেকেই চাহিদামত সার পাননি বলে অভিযোগ করেন। পূর্ব গোশাইপুর গ্রামের কৃষক মোজাফফর রহমান বলেন, ডিলারের দোকানে চাহিদা মত সার না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে প্রায় দেড় হাজার টাকা বেশি দিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৬ বস্তা সার কিনতে হয়েছে।
তিনি জানান, প্রতিবস্তা ইউরিয়া সারের সরকার নির্ধারিত মূল্য ১ হাজার ২শ টাকা হলেও ২শ টাকা বেশি দিয়ে ১ হজার ৪শ টাকা দরে খুচরা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে তাকে সার কিনতে হয়েছে।
এ ছাড়া এমওপি ও ডিএপি সারের ক্ষেত্রেও বস্তাপ্রতি ২শ টাকা বেশি গুনতে হয়েছে তাকে। ভালাইন গ্রামের কৃষক গোলাম মোস্তফা অভিযোগ করেন, বি সি আই সি সার ডিলার সবিতা রাণী ঘোষ ও মন্ডল ট্রেডার্সে ডিএপি সার সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও বস্তাপ্রতি ১শ থেকে ২শ টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে কৃষকদের কাছ থেকে।
বকের মোড়ের গোবিন্দ ট্রেডার্সে প্রতি বস্তা ডিএপি সার সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ১৫০ টাকা বেশি নিয়ে ৯৫০টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে বলেও কৃষকরা অভিযোগ করেন। কৃষকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দাম নেয়া হলেও মেমোতে সরকার নির্ধারিত মূল্যই লেখা হচ্ছে এমন অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।
ডিলারদের কাছ থেকে কৃষকদের সরাসরি সার নেয়ার কথা থাকলেও কৃত্রিম সার সংকট দেখিয়ে বেশী দামে এসব সার খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন খুচরা ব্যবসায়ী জানান, ডিলারদের কাছ থেকে বেশী দামে সার কিনে কৃষক পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে একটু বেশি দামে সার বিক্রি করছেন বলে তারা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুন চন্দ্র রায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন খরার পরে মুষলধারে বৃষ্টি হওয়ায় প্রতিটি মাঠে পানি জমেছে। এ কারণে একযোগে কৃষকরা ধানের চারা রোপণ শুরু করায় সারের দোকানে ভীড় বাড়ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘ লাইন হচ্ছে। তবে সারের কোনো সংকট নেই।
এছাড়া খুচরা পর্যায়ে দুই একজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সারের বেশি দাম নেয়ার অভিযোগ পাওয়ায় কৃষকদেরকে সরাসরি ডিলারের কাছ থেকে সার ক্রয় করতে বলা হয়েছে। এ উপজেলায় মাত্র ১২ জন ডিলার রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমান মিলন বলেন, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে কেউ সার বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সূত্র : পদ্মাটাইমস