মঙ্গবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৫০ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, বাঘা : রাজশাহীর বাঘায় পদ্মার চরে ভরা বর্ষা মৌসুমে রোদের খরতাপে পুড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পাট ও ভুট্টার ক্ষেত। ইতোমধ্যে পাট পরিপক্বতা হয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় চাষিরা পাট কাটতে পারছেন না। রোদে পুড়ে নষ্ট হচ্ছে শত শত বিঘা পাট ও ভুট্টা। ফলে চাষিরা পড়েছেন মহাবেকায়দায়।
রোববার সরেজমিন মুশিদপুর খেয়াঘাট পার হয়ে পদ্মার চরের মধ্যে শত শত বিঘা জমিতে পাট রোপণ করা হয়েছে। সেই পাটের জমির অধিকাংশ পাট রোদে পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। চাষিরা কিছু কিছু জায়গায় পাট কেটে জমিতে রেখে দিয়েছেন। পাট জাগ দেওয়ার পানি পাচ্ছেন না চাষিরা। ফলে জমিতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পাট। এতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
এদিকে ভুট্টার ক্ষেতের একই অবস্থা। কালীদাসখালী চরের কামরুল ইসলাম ২০ বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন। তার অধিকাংশ জমির ভুট্টার আবাদ রোদে পুড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমার বিঘাপ্রতি প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এবার এই আবাদে খরচ উঠবে না। একবার সেচ দিতে বিঘাপ্রতি খরচ হয় এক হাজার টাকা।
পাটচাষি কালীদাসখালী চরের আশরাফুল ইসলাম তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। অনাবৃষ্টি আর প্রচণ্ড খরতাপের কারণে পাটগাছ খর্বাকৃতির হয়ে আছে। জমির বেশিরভাগ পাটগাছ পুড়ে মরে যাচ্ছে। জমি বর্গা নিয়ে পাট চাষ করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে গেছে। তার মতো শত শত চাষি এবার পাট চাষ করেছেন। কিন্তু খরায় সর্বনাশ হয়ে গেছে।
উপজেলায় চার হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে পাট আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে পদ্মার চরে দুই হাজার হেক্টর এবং চকরাজাপুর চরে এক হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।
উপজেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে ১১৭ হেক্টর। এর মধ্যে পদ্মার চরে আবাদ হয়েছে ৫০ হেক্টর। বছরে তিনবার ভুট্টার আবাদ হয়। বিঘাপ্রতি ভুট্টা ২৫-৩০ মণ উৎপাদন হয়।
এক বিঘা জমিতে ১০-১২ মণ পাট উৎপাদন হয়। এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে ৮-১০ হাজার টাকা খরচ হয়। দাম ভালো পাওয়ার আশায় এবার চাষিরা বেশি করে পাট চাষ করেছেন। কিন্তু খরার কারণে পাট যেমন পুড়ে নষ্ট হচ্ছে, তেমনি পাট জাগ দেওয়ার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গর্ত ভাড়া করে পাট জাগ দিতে গেলে চাষিদের লাভ থাকবে না। এ জন্য এবার পাটচাষিরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সফিউল্লাহ সুলতান বলেন, দীর্ঘদিন থেকে এলাকায় বৃষ্টি না থাকায় মাঠে রোপণ করা পাট ও ভুট্টা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এখন পাটের জন্য জোরে বৃষ্টি দরকার। যাদের জমিতে পাট ভালো আছে, তারাও জাগ দেওয়ার পানি নিয়ে সংকটে পড়েছেন। সেচের পানিতে পাট জাগ দিতে চাষিদের অনেক বেশি টাকা খরচ হয়ে যাবে। আজকের তানোর