রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০২:৫৫ pm
শহিদুল ইসলাম (নিজস্ব প্রতিবেদক) নাচোল : চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিদ্যুতের ঘনঘন লোডশেডিং নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।কিন্তু বর্তমানে গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিংয়ের তীব্রতা। নাচোলে নেসকোর বিদ্যুৎ এই আসে, এই যায়। বিশেষ করে নাচোল পৌর এলাকার চিত্র ভয়াবহ।
পুরো দিনে এইসব এলাকায় ১০/১২ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে কি না বলা দুষ্কর। বিদ্যুৎ সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয় একটি মাধ্যম। দিনে বা রাতে যে কোন সময়েই হোক না কেন, বিদ্যুতের অনুপস্থিতি আধুনিক জীবনে হাজার সংকট ও সমস্যার সৃষ্টি করে। রাষ্ট্রীয়, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সকল ক্ষেত্রে প্রতিটি মুহূর্তে বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। বিদ্যুৎ ছাড়া কলকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য, অফিস-আদালত অচল। শিল্প কারখানাগুলোতে প্রতিনিয়ত লোডশেডিংয়ের ফলে উৎপাদন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে পূর্বের তুলনায় আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পেয়েছে।
তাছাড়া ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখার নিরন্তর ব্যাঘাত ঘটছে। বিদ্যুৎ না থাকলে সুষ্ঠু পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত এবং কৃষি আজ হুমকির মুখে পতিত হয়েছে। অনেক সময় লো-ভোল্টেজের কারণে ফ্রিজ, ফ্যান ও এসি ইত্যাদি অচল হয়ে যাচ্ছে। কল/মটর ও কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হাসপাতালের চিকিৎসার ব্যাঘাত ঘটছে এমনকি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সরকারি ও বেসরকারি কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে ।
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে শুধু কৃষি খাতে সামনে আউস মৌসুমে নাচোল উপজেলায় চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে। ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে কৃষকের সময় অপচয়, ফসল উৎপাদন ব্যহত হয়। এর ফলে কৃষক আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছে বলে জানান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।
বিদ্যুৎতের কারণে সৃষ্ট সমস্যা নিয়ে পুর্বে ও লিখালিখি হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতির তেমন কোন উন্নতি হয়নি।
এবিষয়ে (বিএমডিএ)’র সহকারী প্রকৌশলী শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, নাচোল বরেন্দ্র এলাকা। এখানে গভীর নলকূপগুলো প্রায় ২৫০ ফিট নিচ থেকে পানি উত্তোলন করে থাকে। মটর বিদ্যুৎ ছাড়া অন্য কোন উপায়ে চালানো যায় না। গেলেও খুব ব্যয়বহুল। এছাড়া ঘনঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে মটর নষ্ট হয়, ফসল উৎপাদন ব্যহত হয়। এতে কৃষকের আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়।
এই চিত্র শুধু নাচোল পৌর এলাকার নয়, সারা নাচোল উপজেলাজুড়ে। এছাড়াও সংকটের পেছনে নেসকো ও পল্লীবিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট সংস্থাটির এক শ্রেণির কর্মকর্তাদের চরম অব্যবস্থাপনার কারণ বলে সচেতন মহল মনে করেন।
কথা বলে জানা যায় যে, এক শ্রেণির কর্মীদের সহায়তায় চলছে বিদ্যুৎ চুরির মহোৎসব। দুর্নীতিবাজ কর্মী ও গ্রাহকের যোগসাজশে মাসে অন্তত ৬ কোটি ইউনিট বা গড়পড়তায় ১৫ কোটি টাকার বিদ্যুৎ চুরি হচ্ছে। বিদ্যুতের অভাবে যেখানে মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেখানে এ ধরনের চুরিকে প্রশ্রয় দেওয়া কোনভাবে মেনে নেওয়ার নয়।
এব্যাপারে সরকারের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সময় এসে গেছে। তবে, আমাদের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে সরকারের একার পক্ষে এ অবস্থার উন্নতি সম্ভব নয়। তাই জনগণেরও বিদ্যুৎ ব্যবহারের ব্যাপারে সতর্কতা ও সচেতনাতার পরিচয় দিতে হবে এবং বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তাহলে হয়তোবা জনগণের এই দুর্ভোগের অবসান ঘটবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। আজকের তানোর