সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৬:২২ pm
আব্দুস সবুর, ভ্রাম্যমান প্রতিবেদক :
রাজশাহীর তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন পূর্বক বর্ধিত সভা পন্ড করতে গিয়ে তৃনমুল নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পালিয়ে রক্ষা পেয়েছেন উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সম্পাদক। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রত্যক্ষদর্শী আ’লীগের নেতাকর্মীরা।
আজ (৪ জুন) শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে সম্মেলন পূর্বক বর্ধিত সভা শুরু হয় উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে। এরআগে কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী-১ (তানোর- গোদাগাড়ী) আসনের সাংসদ ও সাবেক শিল্পপ্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়না। পরে বর্ধিক সভায় গোলাম রাব্বানী ও আব্দুল্লাহ আল মামুনকে দেখে নৌকার নেতাকর্মীরা চরম উত্তেজিত হয়ে পড়ে। পরে সভাস্থলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি শুরু হয়। তবে, তৃনমুল নেতাকর্মীদের তোপের মুখে রাব্বানী-মামুন তাদের অনুসারীদের নিয়ে পালিয়ে যাবার পর শান্তিপূর্ণভাবে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এসময় রাজশাহী জেলা আ’লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অনিল কুমার সরকার ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা পরিস্কার ভাবে জানিয়ে দেন, তাদের আওয়ামী লীগ করার যোগ্যতা নাই। ওরা বিদ্রোহ করবে এবং আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যাবে। এছাড়াও নৌকার বিরুদ্ধে আপন ভাইকে বিদ্রোহী প্রার্থী করবে, দলীয় কোন সভা করবে না তাহলে তো তৃনমুলের নেতাকর্মীরা তোপের মুখে ফেলবেই। তারা কেমন আওয়ামী লীগ সভা ছেড়ে পালিয়ে যায়। তারা কেমন নেতা, ব্যানারে রাব্বানী সভাপতি ও সঞ্চালনায় মামুন। আর তারাই পালিয়ে যাচ্ছে। আগামী ১৬ জুন সম্মেলন হবে হবেই ইনশাল্লাহ বলে জানান এই নেতারা।
প্রত্যক্ষদর্শী নেতাকর্মী সূত্রে জানা গেছে, প্রথম অবস্থায় রাব্বানী ও মামুন সভা পন্ড করার জন্য নানান ভাবে অচেস্টা চালায়। পরে বিষয়টি উপস্থিত নেতাকর্মীরা আঁচ করতে পেরে নৌকার পক্ষের তৃনমুল নেতাকর্মীদের চরম তোপের মুখে পড়ে সভাস্থল থেকে পালিয়ে রক্ষা পান তারা। মাঠে রাব্বানী ও মামুনের এঅবস্থা লক্ষ্য করে তাদের অনুসারীরা চরম হতাশ হতে দেখা গেছে।
দলীয় সূত্র জানায়, তানোর আ’লীগের সম্মেলন ঘোষণার পর থেকেই বিদ্রোহীদের মদদদাতা হিসেবে পরিচিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বর্ধিত সভা ও সম্মেলন পন্ড করতে নানান ধরণের ফন্দি ফিকির আঁটেন। তারই অংশ হিসেবে গত শুক্রবার সকালের দিকে গোল্লাপাড়া হাটের খাট পট্টিতে রাব্বানীর ভাই শরিফুল সদরের কিছু ব্যক্তিদের নিয়ে গোপন সভা করে। ওই সভায় কিভাবে শনিবারের বর্ধিত সভা পন্ড করা যায় এ সম্পর্কে কলা কৌশল অবলম্বন করে তারা।
রাব্বানীর এক সহচর জানান, শনিবারের বর্ধিত সভা পন্ড করতে পারলে সম্মেলন যথা সময়ে হবে না। কারণ রাব্বানী ও মামুন জানে সম্মেলন হলে তারা আর পদে থাকতে পারবে না। সেই পরিকল্পনা নিয়েই শনিবার সকালের দিকে তানোর পৌর ভবনে এসে পুনরায় গোপন সভা করে তারা। সভা করেই মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আসে রাব্বানী-মামুন ও তাদের অনুসারীরা। কিন্তু অতীতে তারা যেসব অপকর্ম করেছেন যার কিছুটা দেখালেন তৃনমুল। তারা পদে পদে দলের সাথে বেইমানি করবেন আর নেতাকর্মীরা চুপ থাকবেন এটা হতে পারে না বলে উত্তেজিত হয় নেতাকর্মীরা ধাওয়া দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আ’লীগ নেতা জানান, তৃনমুল আওয়ামী লীগের প্রান। আর সেই তৃনমুল জেগে উঠলে এমন অবস্থায় পড়ে রাজনৈতির মাঠে অবশ্যই বেইজ্জত হতে হয়। উল্টো তারাই পালালো। আগামীতে আরও কিছু তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। এখনই উচিৎ তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সম্মানের সহিত বিদায় নেয়া।
এব্যাপারে সভাপতি গোলাম রাব্বানীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আর রাজনীতি করব না। রাজনীতির ধারেপাশেও যাব না। আমাকে বিতর্কিত করেছেন যিনি তার পরিস্থিতিও ভালো থাকবে না। শুধু ওই নেতার জন্যই আমার ভাই আ’লীগের বিদোহী হয়ে ভোট করেছে। আমি সব বিষয় এসএম কামাল হোসেনকে অবহিত করেছি এবং বলেছি আমি কোথাও কোন সভায় যেতে পারব না।
মামুন অনুসারী এক নেতা শনিবার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বটগাছের সাথে লাগলে পরিনাম এমনই হয়। আবার বিদ্রোহীদের গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত। আজ তৃনমুল নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পালিয়েছে। ভবিষ্যতে পালাতেও পারবে কি না সন্দেহ। তাদেরকে কোন সভাতেই আসতে দেওয়া উচিত নয় বলে জানান তিনি।
এদিকে, সভা থেকে পালিয়ে তানোর পৌরসভা কার্যালয়ে আশ্রয় নেন। সেখানেও বেশ কিছু পাওনাদার পৌর ভবনে প্রবেশ করে টাকা দে টাকা দে বলা শুরু করলে সময় বুঝে সেখান থেকেও পালিয়ে যান রাব্বানী।
তানোর পৌর আ’লীগের সভাপতি ও মেয়র ইমরুল হক এসম্পর্কে তিনি জানান, আমার পৌর ভবনে মিটিং ও সভা করবো। আর আমার নেতা রাব্বানীকে আমি আশ্রয় দেব। এছাড়াও তাঁকে নিয়ে মিটিং করবো। এ সম্পর্কে তোদের যা লিখার লিখতে পারিস। ফারুক চৌধুরী চিরকাল এমপি থাকবে না। আগামীতে মনোনয়ন পাবে না। তখন তোদের কি হবে বলে দম্ভোক্তি প্রকাশ করেন মেয়র। আজকের তানোর