শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৪২ pm
মনিরুজ্জামান মনি, তানোর : রাজশাহীর তানোরে স্ত্রী ফরিদা বেগম অটোভ্যান গাড়ি চালিয়ে তার প্যারালাইসিস স্বামীর মুখে খাবার তুলে দেন। তিনি তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের মানিককন্যা গ্রামের প্যারালাইসিস আমিরুল্লাহ স্ত্রী। অভাবের সংসারের হাল ধরতে ব্যাটারিচালিত অটোভ্যান গাড়ি চালাচ্ছেন তিনি।
অটোভ্যান গাড়ি চালিয়ে যা উপার্জন করেন তাই দিয়ে তিনবেলা অসুস্থ স্বামী ও ছেলের মুখে খাবার তুলে দেন।
জানা গেছে, তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের মানিককন্যা গ্রামে আমিরুল্লাহ সাথে ২০ বছর পূর্ব বরিশাল জেলার নাজিপুর থানার কলাবিঘা গ্রামের তৈয়ব আলীর কন্যা ফরিদার বিয়ে হয়। ফরিদা চান না মানুষের কাছে হাত পেতে জীবন চালাতে। জীবন পরিচালনা করতে এ সংগ্রামের পথ বেঁছে নেন ফরিদা।
এরই মধ্যে তিনি স্থানীয় বিভিন্ন অটোভ্যান চালকের কাছ থেকে ভ্যান চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। পরে ২০ হাজার টাকায় একটি অটোভ্যান কেনেন। গত দুই মাস যাবত তিনি অটোভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবে, সরকারি বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার জন্য বার বার জনপ্রতিনিধিদের কাছে ধরনা দিয়েও মেলেনি কোন সহযোগিতা ।
অটোভ্যান চালক শাহীন জানান, প্রায় দেখি ফরিদা ভ্যান গাড়ি চালাচ্ছে সড়কে। কোনো সময় মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। আবার কোনো সময় যাত্রী নিয়ে যাচ্ছে। নারী হয়েও সে পুরুষদের মতো ভ্যানগাড়ি চালিয়ে সংসারের হাল ধরছে। অটোভ্যান চালিয়ে যা উপার্জন হয়, সেই টাকায় তাদের সংসার চলে।
অটোভ্যানচালক ফরিদা বেগম বলেন, অভাবের সংসারে বাবা-মা দিনমজুর আমিরুল্লাহ সাথে ২০ বছর পূর্বে বিয়ে দেন। তিনি আরও বলেন, অটোভ্যান চালিয়ে যা আয় হয়, তা দিয়ে সংসার খরচ চালানোর পাশাপাশি কিছু টাকা ভ্যানের ব্যাটারি কেনার জন্য জমা করে রাখি। ভিক্ষা করলে সারা দিনে এক দেড় কেজি চাল আসবে। আবার কেউ হয়ত এক বেলা খাওয়াবে। তাতে আমার স্বামী সন্তানকে খাওয়াতে পারব না। তাই ভ্যান চালানো শিখেছি। নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারছি।
এবিষয়ে তনোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পংকজ চন্দ্র দেবনাথ বলেন,আমি যতটুকু আপনাদের মাধ্যমে জেনেছি। ফরিদা খুবই পরিশ্রমী ও সংগ্রামী নারী। তার এই প্রয়াসকে সাধুবাদ জানাই। সেই সাথে সে যদি সরকারি কোন সহযোগিতা চাই, আমরা তার পাশে দাঁড়ানোে চেষ্টা করবো বলে জানান ইউএনও।