সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:০২ pm
আব্দুস সবুর, ভ্রাম্যমান প্রতিবেদক : নৌকা প্রতীকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নিজেদেরকে কিভাবে আওয়ামী লীগ দাবি করেন। আসলে এরা নিজের স্বার্থের জন্য দল করে আ’লীগের সঙ্গে গাদ্দারি করেছেন। তাদের জায়গা আওয়ামী লীগে হতে পারে না। যারা মুখে আওয়ামী লীগ আর ভিতরে মুশতাক। এসব আওয়ামী লীগের দরকার নেই। যারা রাজনীতিকে পেট নীতি মনে করেন তাদের পদে থাকার কোন যোগ্যতা নেই। ওরা রাজনীতির হিমঘরে অবস্থান করছে বলে অভিমত রাজশাহীর তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের তৃনমুলের নেতাকর্মীদের।
আগামী ১৬ জুন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। অথচ সম্মেলন নিয়ে বিদ্রোহের মদদদাতা বিতর্কিত সভাপতি গোলাম রাব্বানী ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বিভ্রান্তে পড়ে রয়েছে বলে মনে করছেন তৃনমূল আওয়ামী লীগ। তারা স্হানীয় এমপির সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে এবং সরাসরি নৌকার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে রাজনীতিতে অন্ধকার। আবার তারাই নাকি ত্যাগী আওয়ামী লীগ। এটা অবশ্য ফেলার মত নয়, কারণ নিজ দলকে ত্যাগ করলে ত্যাগী তো হবেই। তাছাড়া ভাইকে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা না পেয়ে ত্যাগ করে ওয়ার্কার্স পার্টির হাতুড়ি প্রতীকে ভোট যুদ্ধে নামিয়ে ছিলেন। এটাতো কম বড় ত্যাগ না বলেও মত সিনিয়র নেতাদের।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০০১ সালে প্রথমবারের মত জাতীয় নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় শহীদ পরিবারের বরেন্দ্র ভুমির পোড়া মাটির সন্তান শিল্পপতি ওমর ফারুক চৌধুরী। যদিও ওই নির্বাচনে পরাজিত হলেও আগামী দিনের রাজনীতির নেতৃত্ব তিনি দিবেন সেটা জানান দিয়েছিলেন। তানোর-গোদাগাড়ী উপজেলার গ্রামে গ্রামে পাড়ায় পড়ায় হাটিহাটি পাপা করে হারিয়ে যাওয়া আওয়ামী লীগ পুনঃ জাগরণ সৃষ্টি করতে সক্ষম হন। এদুই উপজেলায় দেশ স্বাধীন পরবর্তী সংসদ ছিলেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচ এম কামারুজ্জামান হেনা। দীর্ঘ সময় পর বিগত ২০০৮ সালে জাতীয় ৪ নেতার যোগ্য অনুসারী ভাগ্নে ওমর ফারুক চৌধুরী সেই আসনটি উদ্ধার করেন। ধীরে ধীরে রাজনীতির প্রেক্ষাপট বদলে যায়। আওয়ামী লীগের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনেন তিনি। যা কেন্দ্র থেকে শুরু করে দেশরত্নও অবহিত।
দলীয় সূত্র মতে, সংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীর সাংগঠনিক দৃঢতার জন্য প্রথমে জেলার সাধারণ সম্পাদক এবং পরে সভাপতি হন তিনি। শুরু হয় তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। তাঁকে হেও করতে মরিয়া হয়ে ওঠেন সেভেন স্টার থেকে শুরু করে কিনারাহীন এক নেতার নানা প্রতিপক্ষ তৈরি করেন। আজ তারা রাজনীতির অন্ধকার খোয়াই নিমজ্জিত। গত জাতীয় নির্বাচনে সাংসদকে ঠেকাতে নামিয়ে দেওয়া হয় বর্তমান সভাপতি তৎকালীন মুন্ডুমালা পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানীকে। ব্যর্থ হয়ে এক ঘরে হয়ে পড়েন রাব্বানী। ওই সময় এমপির খোয়াবের স্বপ্নে পৌরসভা থেকে লুট করা টাকার ছড়াছড়ি।
জানা গেছে, রাব্বানী এমপি হওয়ার দিবা স্বপ্নে মুন্ডুমালা পৌরসভায় মেয়র পদে ভোটও করেন নি। আর এটাকেই তার রাজনীতির বড় পতন বলেও মনে করছেন নীতিনির্ধারকরা। বিগত ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে রাব্বানীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলেও সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন বিদ্রোহ করায় নির্বাচিত হতে পারেনি কেউ। গত ২০১৯ সালে উপজেলা নির্বাচনে মামুন নৌকা না পেয়ে বিদ্রোহ করে রাব্বানীর অনুসারী বনে যান। অথচ তার আগে রাব্বানীকে গালি দিয়ে বক্তব্য দিতেন। আর ওই মামুন এখন রাব্বানীর পক্ষের নাম্বার ওয়ান ষড়যন্ত্র কারী। পাক্কা খেলোয়াড় এই মামুন।
ভয়ংকর রুপে বিদ্রোহ করেন রাব্বানী মামুন। গত পৌর ও ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ তাদের। প্রতিটি নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে প্রার্থী দেন তারা। আর বসে থাকেন শহরে। একেক জন বিদ্রোহী প্রার্থীকে পথে বসিয়ে দিয়েছেন। কারণ একটাই কিভাবে এমপি উপজেলা চেয়ারম্যানকে বেকায়দায় ফেলা যায়। কিন্তু সাংসদ ও চেয়ারম্যান কখনো নৌকার বিরুদ্ধে ছিলেন না। সব সময় নৌকার জন্য অবিচল পরিক্ষিত ভূমিকায়। যার কারনে রাজনীতির সফলতায় সাংসদ। যারাই ষড়যন্ত্র বিদ্রোহ করেছেন তারায় রাজনীতিতে হিমঘরে।
রাব্বানীর এক ঘনিষ্ঠ সহচর জানান, সম্মেলনের ব্যাপারে রাব্বানী মামুনের তেমন মাথা ব্যথা নাই। কারণ, কেন্দ্রীয় নেতা সম্মেলনের দায়িত্বে তাকে বুকিং করা হয়েছে। এখন নারায়নের বিনিময়ে সব কিছু। এজন্য রাব্বানী সফরে। অবশ্য এই সহচর রাব্বানী পুনরায় দায়িত্বে থাকছেন। তবে, মামুনের বিষয়ে কিছুই বলতে পারেন নি।
জেলা আওয়ামী সহসভাপতি বর্ষিয়ান রাজনীতি বিদ শরিফ খাঁন, ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন দীর্ঘ প্রায় নয় বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে সম্মেলন। অথচ বিদ্রোহী মদদদাতা সভাপতি রাব্বানী ও সম্পাদক মামুনের কোন কিছুই লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আসলে দলের সাথে নিজেদের স্বার্থে পকেট ভরাতে বিদ্রোহ করলে এমন অবস্থায় হয়। এসবের অবসান ঘটিয়ে আগামী ১৬ জুন আওয়ামী লীগের নতুন দিগন্ত শুরু হবে বলে এই প্রবীণ নেতার একান্ত দাবি।