রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৫০ am
ডেস্ক রির্পোট : চাঁপাইনবাবগঞ্জে গত রোববার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে হঠাৎ ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি শিলাবৃষ্টি হয়। প্রায় ২৫ মিনিটের এই শিলাবৃষ্টিতে আম ও ধানসহ অন্য ফসলের শত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে, সদর উপজেলার রানিহাটি, সুন্দরপুর, মহারাজপুর, ইসলামপুর ও চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়ন ও শিবগঞ্জ পৌরসভা, মনাকষা, নয়ালাভাঙ্গা, ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে ঝোড়ো হওয়া ও শিলাবৃষ্টি হয়। এতে সদর উপজেলা ও শিবগঞ্জের ১ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমির ধান, শিবগঞ্জে ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর আমবাগান ও সদর উপজেলায় ২৯৫ হেক্টর বাগানের আম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলায় ৭৫ বিঘা ও শিবগঞ্জ উপজেলায় ১৯৫ বিঘা জমির শাক-সবজিসহ ভুট্টাখেত ও লিচুবাগান নষ্ট হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
মহারাজপুরের রবিউল ইসলাম বলেন, শিলাবৃষ্টি হওয়ায় আমের ক্ষতি হয়েছে। শিলার আকার বড় না হলেও তা আমের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমের উৎপাদন কেমন হবে, তা নিয়ে তিনি দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বাগানিরা।
এদিকে সুন্দরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ঝড় আর বৃষ্টির পাশাপাশি কোনো কোনো স্থানে শিলাবৃষ্টি হওয়ায় আমসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের দেবিনগরের আমচাষি মুনিরুল ইসলাম বলেন, গত রোববার ইফতারের পরপরই ঝোড়ো হওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হয়। এর অল্প কিছুক্ষণ পর ২০-২৫ মিনিট ধরে শিলাবৃষ্টিও হয়। এতে ছোট আমের গুটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে অনেক গুটি আম ঝরে পড়েছে। অনেক আম দাগ পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
সদরের গোবরাতলা ইউনিয়নের আমচাষি শহিদুল্লাহ বলেন, গত কয়েক দিন ধরে চলা তীব্র দাবদাহে আমের গুটি ঝরে যাচ্ছিল। ফলে বৃষ্টির খুবই দরকার ছিল। রাতের বৃষ্টি আমের গুটির জন্য খুবই উপযোগী। কিন্তু শিলাবৃষ্টি হওয়ায় আমের অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেক আম ঝরে গেছে। এ ছাড়া যেসব এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে ওইসব এলাকায় ধান, ভুট্টারও ক্ষতি হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কানিজ তাসনুভা বলেন, সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৬১৫ কৃষকের ৯০১ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। এ উপজেলায় ১২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, জেলা সদরে ১২ মিলিমিটার, শিবগঞ্জে ২০ মিলিমিটার ও নাচোল উপজেলায় ৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। তবে গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলায় বৃষ্টি বা শিলাবৃষ্টি হয়নি। তিনি আরও বলেন, শিলায় আমের পাশাপাশি ধানসহ শাকসবজির ক্ষতি হয়েছে। জেলায় মোট কতজন কৃষকের কতটুকু জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা নির্ণয়ের চেষ্টা চলছে। তবে অনুমান করা হচ্ছে শিলায় ক্ষতির পরিমাণ শতকোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবু সালেহ ইউসুফ বলেন, ‘এ বছর অফ ইয়ার হওয়ায় আমের ফলন কম। গত রোববারের বৃষ্টির সঙ্গে শিলা পড়ায় আমের ফলন আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।’ সূত্র : আজকের পত্রিকা