সমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৩:১৪ am
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মন্ত্রিসভার সদস্যদের গণপদত্যাগের পর শ্রীলঙ্কায় নতুন মন্ত্রিসভার নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকশে। আগের মন্ত্রিসভার একমাত্র সদস্য হিসেবে কেবল প্রেসিডেন্টের ভাই ও শ্রীলঙ্কান প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজপাকসে নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান ধরে রেখেছেন।
অর্থাৎ ভাই মাহিন্দা রাজপাকসেকে রেখেই মন্ত্রিসভায় ১৭ জন নতুন সদস্যকে নিয়োগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া। তীব্র অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে সোমবার (১৮ এপ্রিল) মন্ত্রিসভার নতুন সদস্যরা শপথ নেন বলে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআই।
বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে, চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকশে ও তার বড়ভাই মাহিন্দা রাজপাকসে ছাড়া শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভার বাকি সব সদস্য পদত্যাগ করেন।
মূলত জরুরি অবস্থা ও কারফিউ অমান্য করে দেশব্যাপী হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু করলে মন্ত্রিসভার সদস্যরা পদত্যাগ করেন।
সংবাদমাধ্যম বলছে, নতুন সরকার গঠনের জন্য বিরোধীদের সহযোগিতাও চেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকশে। কিন্তু বিরোধীপক্ষ সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
এই অবস্থায় নিজ দলের প্রতিনিধিদের দিয়েই নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেন তিনি। সোমবার নতুন মন্ত্রিসভার ১৭ জন মন্ত্রী শপথ নিয়েছেন।
এর অর্থ হলো- পরিবারের সবচেয়ে বয়স্ক সদস্য চামাল রাজাপাকসে এবং মাহিন্দার পুত্র নমাল রাজাপাকসে মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি।
তারা উভয়েই ক্যাবিনেট মন্ত্রী ছিলেন। এছাড়া আগের মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করা ভাতিজা শশেন্দ্রও নতুন মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীনতা লাভ করে শ্রীলঙ্কা। এরপর থেকেই একের পর এক সমস্যায় জর্জরিত দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটি।
কিন্তু বর্তমানে আর্থিক সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এই সংকট থেকে আদৌ দেশকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব কি না, তা নিয়ে সন্দীহান বিশেষজ্ঞরাও।
দেশবাসী এই পরিস্থিতির জন্য প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকশে-সহ গোটা রাজাপাকশে পরিবারকেই দায়ী করছে।
প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে। দল, মত, সম্প্রদায় নির্বিশেষে শ্রীলঙ্কার নাগরিকরা একজোট হয়ে রাস্তায় নেমেছেন। চলছে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ।
অন্যদিকে, বৈদেশিক মুদ্রার অভাবের কারণেই শ্রীলঙ্কায় এই সংকট দেখা দিয়েছে বলে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন। কারণ নিজস্ব উৎপাদন ক্ষমতা নগণ্য হওয়ায় এই দ্বীপরাষ্ট্রকে প্রয়োজনীয় অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
আর এজন্য প্রচুর পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা প্রয়োজন। অথচ রাজকোষ ফাঁকা! ফলে পণ্যের সরবরাহ মারাত্মক ভাবে কমেছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে বেড়েছে জিনিসপত্রের দাম। আর তাই চলমান এই সংকটে খুব একটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন না অর্থনীতিবিদরাও। সূত্র : পদ্মাটাইমস