ডেস্ক রির্পাট : চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্য সালমান হত্যা মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি সানোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সামরিক শাখা-ইসাবার সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ছোট চাঁদপুর এলাকা থেকে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের একটি দল অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে।

রোববার(১৭ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁর পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) আকিউল ইসলাম।

এ সময় নওগাঁর পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান, নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান ও সাবিনা ইয়াসমিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে গ্রেপ্তার জেএমবি সদস্য সানোয়ারকে হাজির করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আকিউল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার সানোয়ার হোসেন পেশায় একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক ছিলেন। তিনি ২০০০ সালে জেএমবির সদস্যভুক্ত হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল ও গোমস্তাপুরে জেএমবির প্রধান হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করতেন। ২০০৭ সালে জেএমবির আমীর শায়খ আব্দুর রহমানের ফাঁসি হলে কিছুদিন মাওলানা সাইদুর রহমান জেএমবির আমীর হন।

পরবর্তীতে নেতৃত্ব নিয়ে জেএমবির মধ্যে অন্তকোন্দল শুরু হয়। অন্তকোন্দলের জেরে ২০১২ সালের ২৬ এপ্রিল সানোয়ার ও তাঁর সহযোগীরা প্রতিপক্ষ গ্রুপের জেএমবি সদস্য সালমানকে নাচোল উপজেলার খুলশী বোরিয়া এলাকার একটি আমবাগানে নিয়ে গিয়ে গলাকেটে হত্যা করে।

ওই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার কিছুদিন পর সানোয়ার জামিনে মুক্ত হন। সালমান হত্যা মামলায় ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত পলাতক সানোয়ারসহ তিনজনের মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন। সালমান হত্যা মামলা ছাড়াও সানোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬ (২)/৮/৯/১০/১২/১৩ ধারায় ও দ-বিধির ৩০২/২০১/৩৪ ধরায় দুটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে। এছাড়া গোমস্তাপুর থানায় দ-বিধি-১৮৬০ এর ৩৪১/৩৯৯/৩৩২ ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সালমান হত্যা মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে চাপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ এলাকায় জেএমবিকে সক্রিয় করার কাজ করে যাচ্ছিলেন।

সম্প্রতি এটিইউ-এর চৌকস আভিযানিক দল জানতে পারে যে, সানোয়ার হোসেন নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ছোট চাঁদপুর এলাকায় আব্দুল্লাহ নামে আত্মগোপন করে আছেন। সেখানে তিনি রাজমিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতেন। গত শনিবার রাত ৯টার দিকে পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর পৌরসভার ছোট চাঁদপুর এলাকা থেকে নওগাঁ পুলিশের সহযোগিতায় অভিযান চালিয়ে সানোয়ারকে গ্রেপ্তার করে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট।

আকিউল ইসলাম জানান, গ্রেপ্তার সানোয়ারকে আজ বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতে নেওয়া হবে। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সূত্র : পদ্মাটাইমস