সমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:২৮ am
ভ্রাম্যমান প্রতিবেদক : রাজশাহীর তানোরে এগ্রিকনসার্ন নামের এক কোম্পানীর পঁচা আলুর দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার কামারগাঁ ইউপির চাঔড় নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটেছে ঘটনাটি। দীর্ঘ প্রায় ২০ থেকে ২৫ দিন যাবৎ স্কুল মাঠ ও আম বাগানে জমি থেকে উত্তোলন কৃত আলু রাখা হয়। সেই আলু বাহিরে নিতে দেরি হওয়ার কারণে পঁচে গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাস করতেও আসতে পারছেন না। ফলে দ্রুত পঁচা আলু সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জুরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, তানোর টু চৌবাড়িয়া রাস্তা সংলগ্ন চাঔড় নিম্ম মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি। মুল রাস্তার মালার মোড় পার হয়ে রাস্তার পূর্ব দিকে স্কুল ও মাদ্রাসা রয়েছে। স্কুলের সামনের মাঠে এগ্রিকনসার্ন নামের ওই কোম্পানির আলু জমি থেকে উত্তোলন করে বাছায়ের জন্য ট্রাকে করে অন্যত্র নেওয়া হচ্ছিল । কিন্তু দীর্ঘ দিন এভাবে রাখার কারণে পঁচে চরম দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। স্কুলে কোনভাবেই থাকতে পারছেন না শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। যারা আবার আসছেন তারা ক্লাস থেকে বের হতে পারছেন না। কারণ স্কুলের সামনেই শতশত মন আলু পঁচে আছে।
কয়েকজন শিক্ষার্থীর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার পর চালু হয়েছে। কিন্তু প্রায় ২০/২৫ দিন ধরে স্কুলের মাঠে ও আম বাগানে প্রচুর আলু রাখা রয়েছে। সেই সব আলু এমন ভাবে পঁচে গেছে গন্ধ্যে স্কুলে থাকায় কষ্ট কর। আমরা বারবার স্যারদের বলছি হয়, পঁচা আলু সরাতে হবে নচেৎ ক্লাসে আসব না। কে শোনে কার কথা। এমন আলুর প্রচন্ড গন্ধের কারণে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
বালিকা স্কুলের পূর্বে রয়েছে সরকারি প্রাথমিক স্কুল। সেখানেও ছড়িয়ে পড়েছে গন্ধ। আর বালিকা স্কুলের সামনে মাঠ ও আম বাগানের পরেই রয়েছে মাদ্রাসা। এক কথায় পঁচা আলুর গন্ধ এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ পথচারীদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ছে। বাতাসের গতির সাথে আশপাশে ছড়িয়ে পড়ছে পঁচা আলুর গন্ধ।
শিক্ষকরা জানান, আমরা একাধিক বার এগ্রিকনসার্ন এর মালিক শেখ আব্দুল কাদেরসহ অনেককে বলার পরও শুনছেন না তারা। আবার উল্টো আমাদেরকেই হুমকি দিয়ে বলছেন, কোম্পানির মালিক মন্ত্রীর লোক বেশি বাড়াবাড়ি করলে সমস্যা আছে। এই ভয়ে আমরাও কিছু বলতে পারছি না। আপনারা স্কুল মাঠ ভাড়া দিয়েছেন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক সুলতান আহম্মেদ জানান, ভাড়া দেবার প্রশ্নই উঠে না।বরং পঁচা আলুর গন্ধে স্কুলে থাকায় কষ্ট কর।
এব্যাপারে এগ্রিকনসার্ন এর ব্যবস্হাপনা পরিচালক শেখ আব্দুল কাদের জানান, কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও দেখা মিলছে না। আমরা তো সারা জীবন থাকব না। পঁচা আলু সরিয়ে ফেলা হবে। খুব বেশি গন্ধ হয়নি বলে এড়িয়ে গেছেন তিনি।
প্রধান শিক্ষক সুলতান আহমেদ আরও জানান, আম বাগানে ছায়ার জায়গা দেখে তারা বললো অল্প সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করা হবে। আমিও বলেছি পঁচা আলুর গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে দ্রুত সরিয়ে ফেলুন। তারা অবশ্য আশ্বাস দিয়েছে দুয়েক দিনের মধ্যে সরিয়ে ফেলবে। কিন্তু এখনো সরানো হয়নি। এতে খোলা রেখে পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
প্রসঙ্গত, এগ্রিকনসার্ন নামের কোম্পানির ব্যবস্হাপনা পরিচালক শেখ আব্দুল কাদের উপজেলার কামারগাঁ ইউপির চাঔড় গ্রামের মোহাম্মাদ আলী পুত্র। তাঁর হরিপুর গ্রামের আশপাশে ৯০০ বিঘা জমিতে আলু রোপন করেছিলেন। তারা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে জমি লীজ না নিয়ে গভীর নলকূপ অপারেটরের মাধ্যমে জমি নিয়েছেন। এজন্য জমির মালিকরা ন্যাযা টাকা পাননি বলেও অভিযোগ রয়েছে। আলু রোপনের সময় উপজেলার প্রান্তিক চাষিদের সার পেতে ভোগান্তি হলেও ওই প্রকল্পে ট্রাকের ট্রাক সার দেদারসে এসেছিল বলেও নিশ্চিত করেন অনেকে। আজকের তানোর