রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৭:৫৫ am
মো. শাকিল হোসেন, নিয়ামতপুর (নওগাঁ) : নওগাঁর নিয়ামতপুরে কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই কবরস্থানের বিশাল বটগাছ কর্তণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ভীমপুর গ্রামের ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত কবরস্থানের ৩ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের একটি বিশাল বটগাছ কাটছেন ওই গ্রামের মৃত সামাদ আলী মন্ডলের ছেলে শফিকুল ইসলাম।
ওই এলাকার মৃত ডাবু মন্ডলের ছেলে আবুল হোসেন ও মকবুল মোল্লার ছেলে সেরাজুল ইসলাম সরকার ছাড়াও ওই কবরস্থান কমিটির অনুমোদান ছাড়াই কাটা গাছ শুরু করে শফিকুল। গ্রামের সচেতন মহলের শত বাধার মুখেও তারা গাছকাটা থেকে বিরত হননি। ফলে নিরুপাই এলাকাবাসী সম্প্রতি সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ভীমপুর গ্রামের বেশ কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় কিছু স্বার্থান্বেষী ও সুবিধাভোগী দূর্নীতিবাজ অবৈধ পন্থায় সরকারি কবরস্থানের গাছ কোনো অনুমোদন ছাড়াই বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এবিষয়ে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেন এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান।
কবরস্থানের কমিটির সদস্য মকবুল হোসেন বলেন, আমরা কবরস্থানের সীমানা প্রাচীর দিবো বলে গাছটি ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি সবাই মিলে। তবে, যেহেতু গাছটি খাস সম্পত্তির উপর তাই সরকারের অনুমতি নেওয়া উচিত ছিলো। আরেক সদস্য কেরামত আলী বলেন, সরকারের অনুমতি না নেওয়ায় আমাদের ভুল হয়েছে। ইউএনও আমাদের ডেকেছিল। আপাতত গাছকাটা বন্ধ রাখতে বলেছে। আমরা বন্ধ রেখেছি।
বিষয়টি নিয়ে কবরস্থান কমিটির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, এলাকাবাসীর সিদ্ধান্ত, ইউপি চেয়াম্যানের মৌখিক অনুমতি ও ইউপি সদস্য মো. খাইরুল ইসলামের পরামর্শে কবরস্থানের উন্নয়ন কাজের জন্য কবর রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির রেজুলেশন অনুযায়ী ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকায় ওই গাছ বিক্রি করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, একটি মহল তড়িঘড়ি করে দুই লক্ষাধিক টাকার গাছ মাত্র ১ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। এব্যাপারে কোনো টেন্ডার বা সরকারি অনুমোদন নেয়া হয়নি। অপরদিকে, স্থানীয় ইউপি সদস্য খাইরুল ইসলাম বলেন, মৌখিকভাবে ওই কবরস্থান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সবাই মিলে রেজুলেশন করে আমাকে গাছ কাটার কথা জানান।
তবে, আমি তাদের কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই গাছ কাটা উচিত বলে ছিোম। এটা আমাদের সকলের ভুল। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যার আমাদের ডেকে পাঠিয়েছিলেন। এখন গাছ কাটতে নিষেধ করেছেন। পরে সিদ্ধান্ত জানাবেন। আর কবরস্থানের অনেক জায়গা জবর-দখল হয়ে আছে তা উদ্ধার করার পরামর্শ দিয়েছে ইউএনও স্যার।
এব্যাপারে নিয়ামতপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গাছ কাটার বিষয়ে কোনো প্রকার অনুমতি তাদের দেয়া হয়নি। অভিযোগ পেয়ে তাদের ডেকে নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে গাছকাটা বন্ধ করা হয়েছে বলে জানান ইউএনও।