শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৫:৪৮ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় প্রশাসনের কথিত সোর্স সাব্বিরের মাদক ব্যবসার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। অতিষ্ঠ হয়ে বুধবার সকাল ১০টার দিকে চারঘাট উপজেলার তাঁতারপুর গ্রামের জনতা ধাওয়া করে এই সাব্বির ও তার সহযোগীদের।
এসময় সাব্বির ও তার কয়েকজন সহযোগী পালালেও মাদক ব্যবসায়ী আতিককে গনধোলাই দিয়েছে গ্রামবাসী।
আর সম্প্রতি তাদের হেরোইন বিক্রি ও সেবনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, চারঘাট উপজেলার তাঁতারপুর কারিগরপাড়ায় প্রকাশ্যে কথিত প্রশাসনের সোর্স সাব্বিরের নেতৃত্বে মাদক ব্যবসায়ী আতিক ও ইউনুস মাদকের পশরা সাজিয়ে বিক্রি করছে। সেই সাথে প্রায় ২০ জন মাদক সেবনকারী গোল হয়ে বসে মাদক সেবন করছে।
জানা গেছে, চারঘাট উপজেলার ২নং শলুয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের নির্দেশে ৮নং ওয়ার্ড তাঁতারপুরকে মাদকমুক্ত ঘোষণা করেন ইউপি সদস্য সাহাবুর রহমান। বুধবার ওয়ার্ডের সকল জনসাধারণকে সাথে নিয়ে ওয়ার্ডে কোন রকম মাদক ব্যবসা করতে দেয়া হবে না বলে ঘোষনা দেন এই ইউপি সদস্য।
এলাকাবাসী জানায়, গত ২১ তারিখ তাঁতারপুর গ্রামের মাদক সম্রাট মনোয়ারের দুই ছেলে কামাল ও কফিলকে হেরোইন ও ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব সদস্যরা। বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছে।
আর তারা গ্রেপ্তার হওয়ার পরে ওই এলাকায় তাদের সহযোগী মাদক ব্যবসায়ী পুঠিয়া উপজেলার নামাজগ্রাম এলাকার কাশেমের ছেলে আতিক ও প্রশাসনের কথিত সোর্স শিবপুর এলাকার সাব্বিরের নেতৃত্বে তাঁতারপুর গ্রামে মাদক ব্যবসা চলছিলো।
পরে মাদক ব্যবসার ওই স্থান বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ার জের ধরে সাব্বির বানেশ্বর খুটিপাড়া এলাকার ১০ থেকে ১৫ জন সন্ত্রাসীদের সাথে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁতারপুর কারিগরপাড়ায় গিয়ে ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহাবুরকে মুঠোফোনে হুমকি দেয়। এসময় সে বলে, ‘এলাকায় মাদক ব্যবসা চলবে। তুই সাহাবুর বাধা দেয়ার কে? বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে গুলি করে মেরে ফেলবো। এ মাদকের স্পটের বিষয় মাথা ঘামালে তোকে প্রশাসনকে দিয়ে মাদক মামলা দিয়ে জেল খাটাবো।’
এ ঘটনার পরে বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে এলাকাবাসী এক জোট হয়ে তাঁতারপুর কারিগরপাড়ায় ওই মাদক ব্যবসার স্পট ঘেরাও করে। এসময় এলাকাবাসীর ধাওয়া খেয়ে কথিত প্রশাসনের সোর্স সাব্বির, আতিক পালিয়ে গেলেও ইউনুসকে এলাকাবাসী গণধোলাই দেয়। পরে খবর পেয়ে চারঘাট থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ বিষয় শলুয়া ইউপির ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাহাবুর রহমান বলেন, ইউপি নির্বাচনে এলাকাবাসীকে কথা দিয়েছিলাম আমি ইউপি সদস্য নির্বাচিত হলে এলাকা মাদক মুক্ত ঘোষনা দিবো। এ ওয়ার্ড কে তাই মাদক মুক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদের নির্দেশে এ ওয়ার্ডকে মাদক মুক্ত ও ডিজিটাল ওয়ার্ড হিসাবে গড়ে তুলতে আমি অঙ্গীকারবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, কথিত প্রশাসনের সোর্স সাব্বির এলাকায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন মানুষের কাছে থেকে চারঘাট থানার ওসি স্যারের নাম করে চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা করে আসছে দীর্ঘদিন যাবত। তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। কথিত সোর্স পরিচয় দিয়ে সাব্বির এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এ অবস্থায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে কথিত প্রশাসনের সোর্স সাব্বিরের সাথে মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইফতেখার আলম বলেন, প্রশাসনের সোর্স পরিচয়ে কেউ চাঁদাবাজি অথবা মাদক ব্যবসা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চারঘাটের এই বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি। আজকের তানোর