শুক্রবার, ২০ েপ্টেম্বর ২০২৪, সময় : ০৯:৪৬ pm
আর কে রতন, বিশেষ প্রতিবেদক :
রাজশাহী অঞ্চলে মৎস্য বিভাগের সহযোগিতায় মাছ চাষে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে শত শত শিক্ষিত বেকার যুবক চাষিরা। সেই সাফল্যর সাথে নতুন দিগন্তের মাত্রা যোগ হয়েছে বিলুপ্ত প্রায় পাবদা মাছের মিশ্র চাষ। পুকুরে অন্যান্য মাছের সাথে কম খরচে পাবদা মাছ চাষে লাভ বেশি হওয়ায় রাজশাহী অঞ্চলের চাষিদের কাছে পাবদা মিশ্রচাষ বেশ জনপ্রিয় উঠেছে। প্রথমে দু একজন চাষি পাবদা মাছের মিশ্র চাষ শুরু করলেও বর্তমানে অনেক চাষি পাবদা মাছের চাষ করছেন।
তানোর উপজেলার পাবদা মাছ চাষি ইমরান আলী জানান, আমি ১০ বছর ধরে কার্প মাছ চাষ করে আসছি। এর মধ্যে ২০১৮ সালে তৎকালীন তানোর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আরাফাত সিদ্দিকী স্যারের পরামর্শক্রমে বগুড়ার জেলার আদমদিঘি উপজলা হতে ১৪ বিঘা পুকুরে ১ লাখ ৩০ হাজর পাবদা মাছের পোনা অন্যান্য কার্প জাতীয় মাছের সাথে ছাড়ি এবং ৬ মাস পর মাছ বিক্রি করে ভাল মুনাফা পায়। এর পর হতে আমি অদ্যবধি কার্প মাছের সাথে পাবদা মাছের চাষ করে আসছি। এতে খরচের তুলনায় লাভ অনেক বেশি।
মোহনপুর উপজেলার সফল মাছ চাষি মাহাবুবুল আলম টিটু বলেন, ২৪০ শতাংশ জলকরে ১৪০,০০০ হাজার পাবদা মাছের পোনা দেওয়া হয়েছিল। ৬ মাস ২০ দিন পর পর্যায়ক্রমে জাল দিয়ে ১২০ মন পাবদা মাছ এবং অন্যান্য বিভিন্ন সাইজে ১১০ মনসহ মোট মাছ বিক্রি করেছি ২৩০ মন বিক্রি করেছি। এ পর্যন্ত তিন দিনে মোট ৪ বার জাল টানা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, পুকুরে মাছ এখনি শেষ হয়নি। আশা করছি সব মাছ বিক্রি শেষ হলে ভাল লাভ হবে।
বাগমারা উপজেলার মাছ চাষি আজিজার রহমান বলেন, পুকুরে কার্প জাতীয় মাছের সাথে পাবদা মাছ মিশ্র চাষ ভাল লাভজনক। পাবদা চাষে আলাদা করে খাবার প্রয়োগ করতে হয় না। এতে খরচ কম হয়। তিনি আরো বলেন, পাবদা মাছের পোনা ময়মনসিংহ এবং বগুড়া উপজেলার বিভিন্ন বেসরকারি হ্যাচারি থেকে আমরা পোনা সংগ্রহ করি। পরবর্তিতে সেগুলো পুকুরে মিশ্র ও দানাদার খাবার খাইয়ে বড় করা হয়। সাধারণত এক বিঘা আয়তনের একটি পুকুরে দেড় লাখ টাকা খরচ করে প্রায় ৩ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করা যায়। পুকুর পাড় থেকেই গড়ে ৩০০- ৩৩০ টাকা কেজি দরে পাবদা বিক্রি হয়। সাথে পানির পরিবেশ ঠিক রাখতে পুকুরে রাখা হয় অন্য জাতের মাছ ।
খামারী জাহাঙ্গীর জানান, লেখা-পড়া শেষ করে অন্যের দেখে পাবদা মাছের চাষ করছি। প্রতি বছর গড়ে প্রায় আড়াই লাখ টাকার পাবদা মাছ বিক্রি করি থাকি। এছাড়া এ পাবদা মাছের সাথে আরো অন্যান মাচের চাষ করতে হয় পানি ঠিক রাখার জন্য। যাকে বলে মিশ্র চাষ।
অন্য একাধিক খামারী জানান, পাবদা মাছ চাষে বর্তমানে মানুষকে বেশি আগ্রহ দেখা দিয়েছে। এ মাছ বিক্রি করতে তেমন কোনো সমস্যা হয় না । দেড় শ’ কিংবা দুই শ’ মণ মাছ পুকুর পাড় থেকেই কিনে নিয়ে যাচ্ছে। যার ফলে আনেক চাষি এখন এ মাছ চাষে ঝুঁকে পড়ছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা মৎস্য দপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল ওয়াহেদ মন্ডল জানান, কৃষির যে কোন সেক্টরের তুলনায় মাছ চাষ অনেক লাভজনক। এর মধ্যে পাবদা মাছের মিশ্রচাষ অধিক লাভজনক। এই চাষ বৃদ্ধিতে নিয়মিত খামারীদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদানসহ বিক্রিতেও সহযোগিতা করছে মৎস্য বিভাগ।
তিনি আরো জানান, এ অঞ্চলে উৎপাদিত এসব পাবদা মাছ ঢাকার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বাজারে চাহিদা বেশি থাকায় ভালো লাভবান হচ্ছেন খামারীরা। সাধারণত মার্চ মাসের শুরুতে পুকুরে পাবদা পোনা ছাড়া হয় এবং ছয় মাস পর থেকে তা সংগ্রহের উপযোগী হয়। আজকের তানোর