শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০১:৪৭ pm
আর কে রতন, বিশেষ প্রতিবেদক : নদীমাতৃক দেশ, বাংলাদেশ। একটা সময় ছোট বড় অসংখ্য নদী-নালায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল এই বাংলার বুকে। কালের বিবর্তনে আজ অনেক নদী হারিয়ে গেছে মানচিত্র থেকে। তেমনি কালের বিবর্তনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে পদ্মার শাখা নদ রাজশাহী জেলার দূর্গাপুর উপজেলার দূর্গাপুর বাজারের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঐতিহাসিক হোজা নদী।
হোজা নদী বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রাজশাহী জেলা এবং নাটোর জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৯৫.০৩ বর্গ কিমি কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ২৪.২৩ মিটার। ভৌগলিকভাবে নদীটি দেখতে অনেকটা সর্পিলাকার প্রকৃতির। উত্তরে বাগমারা এবং মোহনপুর উপজেলা, দক্ষিণ ও পূর্বে পুঠিয়া উপজেলা, পশ্চিমে পবা উপজেলা।
নদীটি দুর্গাপুর থানার পলাশবাড়ী গ্রামের মধ্যদিয়ে পূর্বমুখী প্রবাহ পথে তিন কিলোমিটার প্রবাহিত হয়েছে। উত্তরমুখী হয়ে বর্ধনপুর, চৌপুকুরিয়া, সিংগা, দুর্গাপুর, পনানগর, দমদমা, চকপলাশী, গাংধোপাপাড়া, গন্ডগোহালি, গোবিন্দনগর হয়ে পুঠিয়ার কানাইপাড়ার মধ্যদিয়ে মুসা খান নদীতে পতিত হয়েছে। এ বিষয়ে মৃতঞ্জয় বলেন, রাজশাহীর দূর্গাপুর উপজেলা সদরের বুকচিরে বয়ে চলা হোজা নদী।
ঐতিহ্যবাহি এই নদীতে একসয়ের দুর-দুরান্ত ব্যবসায়ীরা সে সময়ে তাহেরপুর, আহসানগঞ্জ, ভবানীগঞ্জ, মাদারীগঞ্জ মালামাল নিয়ে রাজশাহী জেলা সদর সহ দেশের বিভিন্ন গঞ্জে মালামাল যাতায়েত করলেও, দিনে দিনে ভরাট আর সংশ্লিষ্টদের তদারকির অভাবে জীবন্ত নদী এখন মৃতপ্রায়। বর্তমানে নদীটি দীর্ঘদিন যাবৎ কচুরিপানা শেষ পানিটুকুও দখল করে নিয়ে আছে। নদীটি সংস্কার করলে দূর্গাপুর উজেলার একদিকে যেমন সুন্দর্য্য বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে এলাকার ব্যবসা বাণিজ্যির প্রসার ঘটবে।
রাজশাহী জেলা ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী ও জেলে সমিতির সভাপতি ফরিজুল ইসলাম বলেন, নদীতে মাছ, আর নদীর দু‘প্রান্তে অবস্থিত সারি সারি বৃক্ষ রাশির ডালে ডালে পাখির অবাধ বিচরন। নদীর ভরা যৌবনে জেলেদের বিভিন্ন ফাঁদ দিয়ে মৎস্য আহরণ মুখরিত আর পাখির কিচিমিচি এমন প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে চোখজুড়ানো মুগ্ধ হতেন দর্শণার্থীরা। নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্ভর করত শত শত জেলে সম্প্রদায়ের মানুষ। এবং গাছে গাছে খাবার সংগ্রহ করে বেঁচে থাকে হাজার হাজার পাখি। প্রকৃতি আর জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষা করে চলত।
কিন্তু নদীটি ভরাট হওয়ায় দরিদ্র জেলেদের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। নদীটে সংস্কার হলে জেলেদের কর্মসংস্থানের পদ সৃষ্টি হবে। পরিবেশবাদী সচেতন মহলের ভাষ্য, হোজা নদীর বেহাল দশার পেছনে রয়েছে সরকারি নদী শাসনের ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনা ও মৃতপ্রায় হোজার বুকে পানি না থাকায় নদের বুকে কচুরিরপানার পলি জমে জমে উঁচু হয়েছে।
স্থানীয় বিভিন্ন মহলের নদের পাড়ে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা উচেছদ পূর্বক সংস্কার করে মৃতপ্রায় হোজা নদীকে সেই আগের স্ব-রুপে ফিরিয়ে আনার জোর দাবী জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবাদীরা।