শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১১:১৯ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক : চতুর্থ ধাপের নির্বাচেন রাজশাহীর ১৫ ইউনিয়নের মধ্যে ১০টিতে জয় পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। বাকি পাঁচটি ইউনিয়নের মধ্যে চারটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং একটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন।
রোববার (২৬ ডিসেম্বর) কয়েকটি বিছিন্ন ঘটনার মধ্যদিয়ে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। রাতে স্ব স্ব কেন্দ্রের রিটার্নিং অফিসার ফলাফল ঘোষণা করেন।
জানা গেছে, দুর্গাপুরে ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটিতে আওয়ামী লীগ ও দুইটিতে বিদ্রোহী প্রার্থী জিতেছেন। চারঘাটে ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটিতে আওয়ামী লীগ, একটিতে বিদ্রোহী ও একটিতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে, বাঘা উপজেলায় তিনটি ইউনিয়নের মধ্যে দুইটিতে আওয়ামী লীগ ও একটিতে বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয় লাভ করেছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রমতে, তিন উপজেলার ১৫ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৫০ জন, সংরক্ষিত নারী সদস্য ১৬০ ও সাধারণ সদস্য পদে ৫০৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মোট ১৪৬টি কেন্দ্রের ৯২১টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হয়। মোট ২ লাখ ৯৮ হাজার ২৮৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন।
দুর্গাপুরে রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা পরিষদ হলরুমে বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল রানা।
এতে ১ নং নওপাড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী শফিকুল আলম ঘোড়া প্রতীকে ৯ হাজার ৮৬২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী সাইফুল ইসলাম নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৭ হাজার ৫৮১ ভোট।
২নং কিসমত গণকৈড় ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ নৌকা প্রতীকে ৭ হাজার ২৮৩ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আকবর আলী আনারস প্রতীকে ৫ হাজার ৫৪৫ ভোট।
৩নং পানানগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী আজাহার আলী নৌকা প্রতীকে ৫ হাজার ৭৩২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আদম আলী ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৫২ ভোট।
৪নং দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম ঘোড়া প্রতীকে ৭ হাজার ৯২২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগ সমর্থিত আহসান হাবিব নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৬ হাজার ৯১৫ ভোট।
৫নং ঝালুকা ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত আকতার আলী নৌকা প্রতীকে ৭ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের মোজাহার আলী মন্ডল পেয়েছেন ৫ হাজার ২২৮ ভোট।
৭নং জয়নগর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মিজানুর রহমান নৌকা প্রতীকে ১০ হাজার ৭২৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী শমসের আলী ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৮৬৮ ভোট।
বাঘা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, রাজশাহীর বাঘায় ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এর মধ্যে দুটি ইউনিয়ন আড়ানী ও চকরাজাপুরে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রফিকুল ইসলাম রফিক ও বাবলু দেওয়ান। অপর ইউনিয়ন বাউসায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুর মোহাম্মদ তুফান।
এই নির্বাচনে আড়ানী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যার রফিকুল ইসলাম রফিক নৌকা প্রতীকে ৪ হাজার ৪২২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি নেতা ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন (সতন্ত্র) প্রার্থী আনারস প্রতীকে ভোট পেয়েছেন ২ হাজার ৯২৪।
অপরদিকে চকরাজাপুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বাবলু দেওয়ান ৪ হাজার ৯১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আজিযুল আজম আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ১০১ ভোট।
বাউসা ইউনিয়নে ত্রিমুখী লড়ায়ে ৮ হাজার ১৬৫ ভোট পেয়ে বিজিয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুর মোহাম্মদ তুফান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রফিকুল ইসলাম নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৪২৮ ভোট। রোববার রাত ১০টায় উপজেলা নির্বাচন অফিসার মজিবুল আলম বেসরকারিভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
অপরদিকে চারঘাট প্রতিনিধি জানান, চতুর্থ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রাজশাহীর চারঘাটে ৬টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের চারজন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এছাড়াও দুটি ইউনিয়নে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। রোববার রাতে বেসরকারি ফলাফলে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের চারজন প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। এরা হলেন চারঘাট সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের (নৌকা) ফজলুল হক, ভায়ালক্ষিপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের (নৌকা) আব্দুল মজিদ প্রামানিক, সরদহ ইউনিয়নে (নৌকা) হাসানুজ্জামান মধু, শলুয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের (নৌকা) আবুল কালাম আজদ।
এছাড়াও উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে পরাজিত করে বিদ্রোহী হিসেবে চেয়ারম্যান হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম মাখন (ঘোড়া) এবং নিমপাড়া ইউনিয়নে বিএনপি সমর্থক মিজানুর রহমান (চশমা) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন।
জানা গেছে, চারঘাটে নির্বাচনী সহিংসতা ও ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনার কারণে ফলাফল ঘোষণায় বিলম্ব হয়। তবে প্রশাসনিক তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পরে বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীগণ ভোট কারচুপির অভিযোগ তোলেন এবং পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছেন। আজকের তানোর