রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:১৬ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার কাঠালবাড়িয়া গ্রামে কৃষক নুরুন্নবী হত্যায় নারীসহ দুইজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও অপরাধ প্রমান না হওয়ায় এক আসামীকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে জন নিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইবুন্যাল ও বিশেষ দায়রা জজ আদালত-২ এর বিচারক আকবর আলী শেখ এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, দুর্গাপুর উপজেলার কাঠালবাড়িয়া গ্রামের মফিজ উদ্দিন ও দেরাজ উদ্দিনের স্ত্রী ফুলজান বিবি।
জন নিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইবুন্যালের পিপি আসাদুজ্জামান মিঠু জানান, এ মামলায় তিনজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। তবে আসামী মফিজ উদ্দিন ও ফুলজান বিবির ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে। মামলার অপর আসামী ফুলজানের স্বামী দেরাজ ঘটনার সঙ্গে সংপৃক্ত না থাকায় তাকে খালাস দেয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামীরা আদালতে উপস্থিত ছিল। এই মামলায় ২৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে আদালত।
আইনজীবী আসাদুজ্জামান মিঠু বলেন, দেরাজ মিস্ত্রির স্ত্রী ফুলজানের সাথে পরিকিয়া ছিল মফিজ উদ্দিনের। একদিন সেই বাড়িতে নূরনবীকে দেখতে পান মফিজ উদ্দিন। এসময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নুরুন্নবীকে হত্যার হুমকি দেন মফিজ।
এই সূত্র ধরে পরিকল্পনা করে ফুলজান বিবি ও মফিজ উদ্দিন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী নুরুন্নবীকে বাড়িতে ডাকেন ফুলজান। আর আগে থেকেই বাড়িতে অবস্থান করছিলেন মফিজ উদ্দিন। এর পরে নুরুন্নবী ও মফিজের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায়ে ফুলজান বিবি একটি ধারালো হাসুয়া মফিজের হাতে তুলে দিয়ে হত্যা করতে বলে। এতে মফিজ নুরুন্নবীর গলায় আঘাত করে মস্তক আলাদা করে দেয়।
এর পরে তারা মফিজ ও ফুলজান বিবি নিহত নুরুন্নবীর লাশ একটি বস্তায় ভরে বিলে ফেলে আসেন। আর মস্কটি আরো দূরে ফেলে দিয়ে আসে। মফিজ ও ফুলজান বিবির ধারনা ছিল-মানুষ যেনো মনে করে নুরুন্নবীকে গলা কাটারা হত্যা করে মস্ক নিয়ে গেছে। তবে যে রাস্তা দিয়ে হত্যার পরে মৃত নুরুন্নবীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাতে রক্ত পড়ে ছিল। এই রক্ত ফুলজান বিবির বাড়ি থেকে লাশ ফেলে আসা জমি পর্যন্ত দেখা যায়।
২০১৩ সালের ১৫ এপ্রিল রাজশাহীর দুর্গাপুরের কাঠালবাড়িয়া নিজ এলাকা থেকে নিখোঁজ হন নুরুন্নবী। একদিন পরে সকালে দুর্গাপুরের কান্দরে বিলে নুরুন্নবীর মস্তিষ্ক বিহীন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ । এ ঘটনায় নুরুন্নবী ছেলে হাসেম আলী দূর্গাপুর থানায় বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন।
এই ঘটনায় স্থানীয়রা ফুলজান বিবির বাড়ি ঘেরাও করে। পরে পুলিশ ফুলজান বিবি, তার স্বামী দেরাজ মিস্ত্রি, ছেলে আব্দুর রহিম ও মফিজ উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তিতে মামলাটি সিআইডিতে গেলে ছেলে আব্দুর রহিমের কোন সংশ্লিস্টতা না পাওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়। পরবর্তিতে আদালতে ফুলজান বিবি ও মফিজ উদ্দিন হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দী দেন। আজকের তানোর